ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে নেত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ
সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে সংগঠনের স্কুল কমিটির নেত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে মঙ্গলবার ওই নেত্রীর মামা বাদী হয়ে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন।
আদালতের বিচারক শহিদুল ইসলাম মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের এপিপি অ্যাডভোকেট আনোয়ার পারভেজ লিমন জানান, মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়।
ওই স্কুলছাত্রী বেলকুচির উপজেলার একটি বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী। সে ওই বিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি।
মামলার আসামিরা হলেন— জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও বেলকুচির চরখাষিয়া গ্রামের রকিব উদ্দিন মাস্টারের ছেলে রিয়াদ হোসেন (২৫), একই উপজেলার চরচালা গ্রামের মিন্টু কসাইয়ের ছেলে আরমান হোসেন (২৬), একই গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে আল-আমিন হোসেন, একই গ্রামের মৃত সোনা উল্লার ছেলে রুবেল শেখ, কলাগাছি গ্রামের মমিন সেখের ছেলে রতন শেখ ওরফে পিচ্চি রতন (২৪) ও গাড়ামাসি গ্রামের নিমাই ডাক্তারের ছেলে পাপ্পু।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ৭/৮ মাস আগে ছাত্রলীগ নেতা রিয়াদ হোসেন স্কুল কমিটি গঠনের জন্য ওই বিদ্যালয়ে যান। কমিটিতে তার ভাগ্নিকে সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ দেয়া হয়।
মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়, এর সূত্র ধরেই উভয়ের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত ১৩ অক্টোবর ছাত্রলীগ নেতা রিয়াদ চরচালায় মেসে ডেকে নিয়ে তার ভাগ্নির সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরবর্তীতে বিয়ের জন্য চাপ দিলে রিয়াদ তালবাহানা শুরু করে।
বিষয়টি প্রকাশ করে দেয়ার জন্য ভয়ভীতি দেখালে রিয়াদ তার সহযোগীদের নিয়ে ভাগ্নিকে মারপিট করে এবং সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে তাড়িয়ে দেয়।
এর পর তার বাবাকে নিয়ে থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে অভিযুক্তরা পুলিশের সামনে আবারও তার ভাগ্নিকে মারপিট করে এবং সাদা কাগজে বাবা-মেয়ের স্বাক্ষর নিয়ে তাদের থানা থেকে বের করে দেয়।
প্রেম ও ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতা রিয়াদ হোসেন মঙ্গলবার বিকেলে মোবাইল ফোনে বলেন, ওই মেয়েটি ১৩ অক্টোবর রাতে হঠাৎ মেসে এসে আমার রুমে প্রবেশ করে। ঘরের দরজা আটকে দিয়ে আমাকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে মেস থেকে বের করে দেয়া হয়।
তিনি দাবি করেন, এরপর ওই স্কুলছাত্রী থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে আমার বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হলে ওসি সাজ্জাদ হোসেন তাকে বিদায় করে দেন।
আসন্ন বেলকুচি উপজেলা ছাত্রলীগের সন্মেলনে আমি সভাপতি পদের প্রার্থী। যে কারণে প্রতিপক্ষরা ওই মেয়েকে আমার বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন ওই ছাত্রলীগ নেতা।
এ বিষয়ে বেলকুচি থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন জানান, মেয়েটি অভিযোগ করার জন্য থানায় এসেছিল। কিন্তু তার বাবা মামলা করতে রাজি না হওয়ায় তারা চলে যান। ওই সময় থানায় কোনো মারপিটের ঘটনা ঘটেনি, এমনকি সাদা কাগজে কোনো স্বাক্ষর নেয়া হয়নি।