178143

`বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় আমি তাকে খুন করে লাশ সাত টুকরা করে ড্রামে ভরে রাখি`

বরগুনার আমতলীতে অ্যাডভোকেট মো. মাঈনুল আহসান বিপ্লব তালুকদারের বাসায় ড্রামে রাখা মালা (১৭) নামের এক কলেজ ছাত্রীর সাত টুকরা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এঘটনায় কলেজ প্রভাষক আলমগীর হোসেন পলাশ (৪৫) নামে ঘাতক প্রেমিককে আটক করা হয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদে সে খুনের কথা স্বীকার করেছে। নিহত মালা বরগুনা সদর উপজেলার ঘুদিঘাটা গ্রামের আবদুল মান্নান হাওলাদারের মেয়ে এবং কলাপাড়া মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী।

আমতলী থানা পুলিশ জানায়, পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার বাসন্ডা গ্রামের মৃত আবদুল লতিফ হাওলাদারের ছেলে বরগুনার ঘটবাড়িয়া আদর্শ কলেজের প্রভাষক আলমগীর হোসেন পলাশের সঙ্গে সাত বছর আগে মালা সপ্তম শ্রেণিতে থাকতেই প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

গত ২২ অক্টোবর পলাশ মালাকে নিয়ে তার ভাগ্নি জামাই আমতলীর হাসপাতাল সড়কের বাসিন্দা অ্যাডভোকেট মো. মাঈনুল আহসান বিপ্লব তালুকদারের বাসায় বেড়াতে নিয়ে আসেন।

মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে বিপ্লবের স্ত্রী তার ছেলেকে নিয়ে স্কুলে গেলে এ সুযোগে বেলা আনুমানিক সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পলাশ মালাকে ধারালো বটি দিয়ে গলাকেটে হত্যা করে।

হত্যার পর মালার ঘাড় থেকে মাথা বিছিন্ন করে ফেলে এবং হাত-পা ও দেহ দুই টুকরোসহ মোট সাত খণ্ড করে দুটি ড্রামে ভরে লাশ ঘরের একটি কক্ষে লুকিয়ে রাখে। পরে ভাগ্নি জামাই বিপ্লবকে এ খুনের কথা জানায় পলাশ।

বিপ্লব বিষয়টি আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সহিদ উল্যাহকে জানালে তিনি পুলিশ নিয়ে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিপ্লবের বাসায় অভিযান চালান। পরে তল্লাশি চালিয়ে লুকিয়ে রাখা ড্রাম থেকে মালার সাত টুকরা লাশ উদ্ধার করেন এবং খুনি পলাশকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পলাশ খুনের কথা স্বীকার করে বলে, ‘মালা আমাকে বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় আমি তাকে খুন করে লাশ সাত টুকরা করে ড্রামে ভরে রাখি।’নিহত মালার বাবার সঙ্গে তার মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পর তারা এখন ঢাকায় থাকেন। বাবা-মায়ের অবর্তমানে মালা পূর্ব গুদিঘাটায় নানা বাড়ি থেকে লেখাপড়া করে আসছেন।

আমতলী থানার ওসি মো. সহিদ উল্যাহ বলেন, ‘খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। ঘাতক পলাশকে আটক করা হয়েছে।’

লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে বরগুনার পুলিশ সুপার বিজয় বসাক পিপিএম, আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সরোয়ার হোসেন, আমতলী-তালতলী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আবদুল ওয়ারেছ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

বরগুনার পুলিশ সুপার বিজয় বসাক জানান, খবর পেয়ে বিপ্লবের বাসা থেকে কলেজছাত্রী মালার ড্রামে রাখা সাত টুকরা লাশ উদ্ধার করা হয়। পলাশ খুনের কথা স্বীকার করেছে। আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তদন্ত করে দেখা হবে।

ad

পাঠকের মতামত