এই কারণগুলো জানার পর আপনি আর পেয়ারা পাতা ফেলে দেবেন না
পেয়ারা মৌসুমি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ফল যা এসেছে মেক্সিকো ও আমেরিকা থেকে। পেয়ারাকে আম্রুদ ও বলা হয়ে থাকে। আমাদের দেশে এখন এটি সারা বছরই পাওয়া যায়। পেয়ারার স্বতন্ত্র গন্ধ আছে। এদের স্বাদ খুব তিক্ত বা খুব মিষ্টি হয়। আজ বিডি রমণী আপনাদের জন্য রেখেছে এই কারণগুলো জানার পর আপনি আর পেয়ারা পাতা ফেলে দেবেন না। পেয়ারা সবুজ বা হলুদ বর্ণের হয় এবং কিছু পেয়ারার ভিতরের অংশ লাল বা গোলাপি বর্ণের হয়ে থাকে। এর আগে আপনারা দেখেছেন কমলার খোসার অসাধারণ ৬টি ভিন্নধর্মী ব্যবহার।
পেয়ারার স্বাস্থ্য উপকারিতার কথা আমরা সবাই জানি, যেমন-
পেয়ারা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ফলে ঠাণ্ডা ও ইনফেকশনের বিরুদ্ধে কাজ করে। কারণ এতে কমলার চেয়ে ৪ গুণ বেশি ভিটামিন সি আছে।
পেয়ারা ভিটামিন এ এর উৎস যা চোখের জন্য উপকারি এবং রাতের দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায় পেয়ারা।
ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে পেয়ারা। কারণ পেয়ারাতে অ্যান্টিক্যান্সার ও অ্যান্টিটিউমার উপাদান আছে।
পেয়ারা ত্বকের জন্য খুবই ভালো এবং বয়স বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে ধীর করে।
পেয়ারাতে ফাইবার সমৃদ্ধ তাই পরিপাকে সাহায্য করে।
আমারা সাধারণত পেয়ারার ফলটা খেয়ে থাকি আর পাতাটা ফেলে দেই। কিন্তু আপনি কি জানেন এই পেয়ারা পাতারও আছে স্বাস্থ্য উপকারিতা? আসুন জেনে নেই কীভাবে পেয়ারা পাতা আমাদের স্বাস্থ্যবান রাখতে পারে।
১। প্রদাহ কমায়
পেয়ারা পাতায় আরসলিক এসিড থাকে যা একটি অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান, তাই এটি প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। আরসলিক এসিড কোষের জন্য ক্ষতিকর ও বার্ধক্য সৃষ্টিকারী প্রতিক্রিয়াশীল অক্সিজেন কমাতে সাহায্য করে।
২। আরথ্রাইটিসের জন্য ভালো
রিউমাটয়েডের ফলে সৃষ্ট প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে পেয়ারা পাতার আরসোলিক এসিড এবং আরথ্রাইটিসের ফলে সৃষ্ট অস্বস্তি কমাতে পারে এই এসিড।
৩। জ্বর কমায়
ইমিউনোফার্মাকোলজি ও ইমিউনোটক্সিকোলজি জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, পেয়ারা পাতার রস জ্বর কমাতে পারে।
৪। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে পারে
নেউট্রিশন এন্ড মেটাবোলিজম জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানা যায় যে, পেয়ারা পাতার মিশ্রণে অ্যান্টি গ্লিসামিক উপাদান থাকে যা রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে পারে। গবেষণায় আরো বলা হয় যে, হাইপারইনসুলিন এবং ইনসুলিন রেজিস্টেন্সের মত ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলোর উন্নতি ঘটাতে পারে পেয়ারা পাতার মিশ্রণ।
৫। কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে পারে
পেয়ারা পাতায় অ্যান্টিহাইপারলিপিডেমিক উপাদান আছে যা লিপিড এর স্তর নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। নেউট্রিশন এন্ড মেটাবোলিজম জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে আরো বলা হয় যে, প্রতি বেলায় পেয়ারা পাতার রস খেলে রক্তের কোলেস্টেরল লেভেল কমতে সাহায্য করে এবং হৃদরোগ প্রতিরোধ করে।
৬। মুখের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো
জিঞ্জিভিটের মত দাঁতের মাড়ির রোগের নিরাময়ে সাহায্য করে পেয়ারা পাতার ব্যাকটেরিয়া নাশক ও প্রদাহরোধী উপাদান। ঐতিহ্যগতভাবেও পেয়ারা পাতা দন্তশূল নিরাময়ে ব্যবহৃত হচ্ছে।
৭। ব্রণ নিরাময়ে সাহায্য করে পেয়ারা পাতা
আমেরিকান জার্নাল অফ চাইনিজ মেডিসিন এ প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয় যে, ব্রণ নিরাময়ে সাহায্য করে পেয়ারা পাতার অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান। পেয়ারা পাতার প্রদাহ রোধী উপাদান ব্রণের লাল ভাব দূর করে ব্রণ মিলিয়ে যেতে সাহায্য করে।
পেয়ারা পাতার এতগুণ জানার পরে আর কি ফেলে দিতে পারবেন এটি? নিশ্চয়ই না। বরং এটি ব্যবহার করে সুস্থ ও সুন্দর থাকুন।