174488

রকস্টার বাবার হাসপাতালে চলত অবৈধ গর্ভপাত!

আধ্যাত্মিক ঋষি, জনহিতৈষী, বহুমুখী গায়ক, চৌকস ক্রীড়াবিদ, চলচ্চিত্র পরিচালক, অভিনেতা, শিল্প নির্দেশক, সংগীত পরিচালক, লেখক, গীতিকার, জীবনীকার…।

ভেরিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্টে এই পরিচয় ভারতের স্বঘোষিত ‘ধর্মগুরু’ গুরমিত রাম রহিম সিংয়ের। অ্যাকাউন্টে আবার নামের আগে ‘ড.’ উপাধিও উল্লেখ করা।

একদিকে সিনেমার হিরো, দলিত সম্প্রদায়ের মানুষকে ‘ইনসান’-এর মর্যাদা দেওয়া, রাজনৈতিক ক্ষমতা আর পেশীশক্তি – এই সব কিছুর মিশেলেই প্রায় আড়াই দশক ধরে গড়ে উঠেছে গুরমিত রাম রহিম সিং-এর ভক্তকুল।

নিজের দুই নারী শিষ্যকে ধর্ষণের অভিযোগে ২০ বছরের কারাদণ্ড মাথায় নিয়ে হরিয়ানার কারাগারে বন্দি রয়েছেন ভারতের এই আলোচিত ধর্মগুরু।

গুরমিত সিংহ রাম রহিমের ছিল ধর্ষণ চেম্বার। এর নাম ‘বাবা কি গুফা’ (বাবার গুহা)। বিলাসবহুল আসবাব, রঙ-বেরঙের পর্দায় সাজানো সেই প্রাসাদেই তিনি বসবাস করেন।

গুফায় তাকে ঘিরে থাকেন ২০০ জনেরও বেশি বাছাই করা শিষ্য। তাদের চুল খোলা। পরনে সাদা রঙের পোশাক। এমনই দুই শিষ্যকে ধর্ষণের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন বাবা রাম রহিম।

আগেই রকস্টার ‘বাবা’ গুরমিত রাম রহিমের ডেরায় অত্যাধুনিক হাসপাতালের খোঁজ মিলেছিল। প্রত্যাশিত ভাবে যে হাসপাতালের প্রধান রাম রহিম নিজেই। এ বার সেই হাসপাতালে দেদার গর্ভপাতের প্রমাণ মিলল। পাঞ্জাব পুলিশ এ বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য প্রমাণ পেয়েছে।

গর্ভপাত করানোর কাজে বিন্দুমাত্র সরকারি অনুমতির তোয়াক্কা করা হতো না। তদন্তকারীদের দাবি, যে সব নারীর গর্ভপাত করানো হয়েছে, তাদের পর্যাপ্ত নথি মেলেনি হাসপাতাল থেকে।

গতকাল মঙ্গলবার হরিয়ানার জনসংযোগ দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর সতীশ মেহেরারের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার জানায়, ডেরার হাসপাতালে বেআইনি গর্ভপাতের বিষয়টি নিয়ে আলাদা করে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ফরেনসিক কর্তাদের।

প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া নমুনাগুলো ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা বিচারক এ কে এস পওয়ার। তাকে এই মামলায় কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত করেছে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট।

পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের নির্দেশে ৭০০ একরের ডেরা চত্বরে সম্প্রতি তল্লাশি চালায় রাজ্য পুলিশ এবং সরকারি নানা বিভাগের ১০টি দল। গত রবিবারই শেষ হয়েছে তিন দিনের সেই তল্লাশি অভিযান।

জানা যায়, সাত তারা হোটেল, ‘স্কাইবার’-সহ রিসর্ট, অভিজাত রেস্তোরাঁ, সুইমিং পুল, অত্যাধুনিক হাসপাতাল, আন্তর্জাতিক মানের স্কুল, হোস্টেল, সিনেমা হল, শপিং মল, ফুড কোর্ট, জিম, স্পা, নিজস্ব কৃষিজমি, বাজার সবই রয়েছে বাবার ডেরায়। এমনকী বিস্ফোরক তৈরির কারখানা, সুড়ঙ্গের হদিশ মেলে সেখান থেকে।

ad

পাঠকের মতামত