মিরপুরের আব্দুল্লাহ জঙ্গি এলাকার পরিচিত মুখ টিটুই
মাজার রোডের পাশের বর্ধনবাড়ি ভাঙ্গা ওয়ালের গলির ২/৩-বি হোল্ডিংয়ে ছয়তলা ভবনের পঞ্চম তলায় আস্তানা গেড়ে বসা দুর্ধর্ষ জঙ্গি আবদুল্লাহ সোমবার মধ্যরাত থেকে ঘেরাও থাকার পর মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার মধ্যে র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণের কথা বললেও তা হয়নি। এর প্রায় দুই ঘণ্টা পর ওই বাড়িতে কয়েক দফা বিস্ফোরণ ঘটে; পঞ্চম তলায় তাদের ফ্ল্যাটে আগুন ধরে যায়। ওই ফ্ল্যাটে আব্দুল্লাহর সঙ্গে তার দুই স্ত্রী, দুই সন্তান ও দুই সহযোগীসহ মোট সাতজন অবস্থান নিয়েছিলেন বলে দুপুরে জানিয়েছিলেন র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। বিস্ফোরণে তাদের কী ঘটেছে তা এখনও জানা যায়নি। র্যাবের ভাষ্য অনুযায়ী, আবদুল্লাহ ২০০৫ সাল থেকে জঙ্গিবাদে জড়িত। মিরপুর মাজার রোডের দীর্ঘদিনের এই বাসিন্দা ইলেকট্রনিক সামগ্রী মেরামতের কাজ করেন।
এলাকাবাসীও বলছেন, তিনি আইপিএস ও ফ্রিজ মেরামতসহ বাসাবাড়িতে মিস্ত্রির কাজ করতেন। পাশাপাশি ওই বাড়ির ছাদে কবুতর পালতেন। তবে তার গ্রামের বাড়ির খোঁজ দিতে পারেননি কেউ। র্যাব যাকে আব্দুল্লাহ বলছে তাকে এলাকাবাসীর অনেকে টিটু নামে চেনেন। তারা বলছেন, ওই ভবনে খোকা নামে তার এক ছোট ভাইও থাকত।
তাদের ভাষ্য, মুখভর্তি লম্বা দাঁড়িওয়ালা মধ্যবয়সী পরিচিত মুখের মানুষটি যে এতবড় জঙ্গি, তা ভাবতেই পারেননি ঢাকার মিরপুরের মাজার রোডের বাসিন্দারা। আবদুল্লাহকে কখনোই জঙ্গি বলে সন্দেহ হয়নি তাদের। এলাকার দীর্ঘদিনের এই বাসিন্দা রাজনৈতিক আলাপ-আলোচনা এড়িয়ে চললেও প্রায়ই চায়ের দোকানে বসতেন। কিন্তু তিনি যে ভেতরে ভেতরে জঙ্গিবাদে জড়িত তা একটুও বোঝা যায়নি।
যে ভবনে জঙ্গি আব্দুল্লাহ অবস্থান নিয়েছিলেন, সেই ভবনের তৃতীয় তলায় আট মাস আগে ভাড়ায় উঠেছেন গুলশান আরা। একই ভবনে থাকলেও তিনি কখনো আব্দুল্লাহকে দেখেননি বলে জানান। গুলশান জানান, গত রাত দেড়টার দিকে তিনটি বিকট শব্দ হলে তারা ভেবেছিলেন ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণ ঘটেছে। মঙ্গলবার সকালে র্যাব তাদের উদ্ধার করতে গেলে ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারেন। তার কক্ষে ৫০টির মতো আইইডি (ইমপ্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের দাহ্য পদার্থ থাকার কথা আবদুল্লাহ জানিয়েছিলেন বলে র্যাবের মহাপরিচালক বলেন। উৎস : কালের কণ্ঠ।