173224

নায়ক রাজ রাজ্জাক সম্পর্কে যা বললেন তার ড্রাইভার!

২১ আগস্ট না ফেরার দেশে চলে গেছেন নায়করাজ রাজ্জাক। সদ্যপ্রয়াত এই মহাতারকাকে নিয়ে তার কাছের মানুষদের রয়েছে নানা গল্প, নানা স্মৃতি।

সহশিল্পীদের চোখে তিনি যেমন ছিলেন পরম বন্ধুর মতো, তেমনি তার ড্রাইভার আর সহকারিদের কাছে ছিলেন অসাধারণ একজন মানুষ। আজ ২৩ আগস্ট বুধবার বিকেলে গুলশানে নায়করাজের বাসায় রাজ্জাককে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন তার দীর্ঘদিনের ড্রাইভার মো. লিটন। বললেন, আমি প্রায় ১৫ বছর ধরে স্যারের গাড়ি চালাই। নানা সময় নানা ব্র্যান্ডের গাড়ি চালিয়েছি।

সোমবার বিকেলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন, সেদিনও মুমূর্ষ স্যারকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছি। জানতাম না, সেদিনই স্যারকে নিয়ে আমার শেষ ড্রাইভ হবে।

স্যার খুবই অমায়িক মানুষ ছিলেন। শুটিংয়ে বা বাইরে গেলে দুপুরের খাবারের সময় তিনি জিজ্ঞেস করতেন খেয়েছি কিনা। কখনো না খেয়ে থাকলে আমাকে ধমক দিতেন। বলতেন টাকা না থাকলে বলতে পারো না?

 

পথ চলতে গেলে অনেক সময়ই ভুল হতো, কখনো অসচেতনভাবে ছোটখাট বেয়াদবিও হয়ে যেত। তখন তিনি রাগ করতেন। তবে তেমন বকাঝকা করতেন না।

বড়জোর ছাগল বলতেন বা বলতেন এই বেটা করেছিস কী? তবে পাঁচ মিনিট পরই তার রাগ কমে যেত।

তবে তিনি খুব কমই রাগ করতেন। আর বড় ধরণের কোনো ভুল করলে তিনি বুঝতেন যে এর শাস্তি দিয়ে কী হবে। তিনি সেগুলো ক্ষমা করে দিতেন।

আমার এই ১৫ বছরের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, তিনি রাগ করতেন কম, তবে ক্ষমা করতেন বেশি।

 

তিনি ছিলেন খুবই সময় সচেতন। পারতপক্ষে কখনো দেরি করতেন না। সবসময় খুব সাবধানে গাড়ি চালাতে বলতেন। কখনো দেখা গেছে দেরি হয়ে যাচ্ছে, তখন জোরে গাড়ি চালাতে গেলে বলতেন সাবধানে চালাও, তাড়াহুড়ো করার দরকার নেই। আমার কোনো সমস্যা নেই।

শেষ কিছুদিন তিনি ফজরের আজানের আগেই উঠে পড়তেন। একদম অজু করে রেডি হয়ে আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে বলতেন, গাড়ি বের করো।

আমি বলতাম আজান তো দেয় নাই, তখন তিনি বলতেন আগেভাগেই যাই না, যেতে যেতেই আজান দিয়ে দিবে। আমার রেডি হতে দেরি হত, ততক্ষণ তিনি বারান্দায় অপেক্ষা করতেন।

স্যারের ব্যবহার চিরদিন মনে থাকবে। কখনো টাকা পয়সার অভাব হলে স্যার দিতেন। দেওয়ার সময় বেতন থেকে কেটে নেওয়ার কথা বলতেন, কিন্তু তিনি কখনোই সেই টাকা নিতেন না।

স্যারের নানা পরামর্শ, উপদেশও মনে থাকবে। স্যার বলতেন সবসময় সৎপথে চলবি। সৎপথে চললেই ভালো থাকবি।

ad

পাঠকের মতামত