বিচ্ছেদ ৫৫ বছরের দাম্পত্য জীবনে
নায়করাজের মৃত্যুতে শোকাহত চলচ্চিত্র পরিবার। রাজ্জাকের মৃত্যুতে শোকাহত ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। কিংবদন্তি নায়করাজ রাজ্জাক সোমবার (২১ আগষ্বট) সন্ধ্যায় না ফেরার দেশে চলে গেছেন। সন্ধ্যা ৬টা ১৩ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬বছর।
নায়করাজ দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন। এর আগে বেশ কয়েক দফা তিনি চিকিৎসা নিয়েছিলেন ইউনাইটেড হাসপাতালে। সম্প্রতি আবার শরীর খারাপ হলে তার পরিবার তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। অবশেষে আজ সোমবার তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, সন্তানসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
টালিগঞ্জের মোল্লাবাড়িতে আকবর হোসেন ও মিনারুন্নেসার ছোট ছেলে আবদুর রাজ্জাক মাত্র ১৯ বছর বয়সে ১৯৬২ সালে বিয়ে করেন লক্ষ্মীকে। সুখে দুখে সব সময় পাশাপাশি ছিলেন রাজ্জাক-লক্ষ্মী। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও ঈর্ষার বিষয় ছিলেন এই দম্পতি। দীর্ঘ ৫৫ বছরের দাম্পত্য জীবনে বিচ্ছেদ এঁকে দিল একটি মৃত্যু।
প্রিয় মানুষ ও সুখে দুখের সঙ্গীর মৃত্যুতে শোকে পাথর হয়ে গেছেন তার স্ত্রী লক্ষ্মী। ইউনাইটেড হাসপাতালে তাঁকে দেখা গেল নির্বাক, কেউ কথা বলতে গেলেও নীরবে কেঁদে যাচ্ছেন। আসলে এই সময় কোনো সান্ত্বনা কাজ করে না। বিচ্ছেদ বড় বেদনাময়। যে রুমে রাজ্জাকের মরদেহ রাখা ছিল তার বাইরেই বসে ছিলেন রাজ্জাকের স্ত্রী লক্ষ্মী।
বড় ছেলে বাপ্পারাজ, ছোট ছেলে সম্রাটের ছেলেমেয়েদের সাথে সুখেই কাটছিল দিন। হাসি তামাশা আর বেড়ানো এসব নিয়েই সুখের সংসার ছিল রাজ্জাকের। সেসব কিছু ছেড়ে আজ তিনি পাড়ি জমালেন পরপাড়ে।
১৯৬৪ সালে শরণার্থী হয়ে ঢাকায় আসেন। এর পর জড়িয়ে পড়েন চলচ্চিত্রে। দু’একটা সিনেমায় ছোটখাটো চরিত্রে অভিনয় করার পর ৬৭ সালে মুক্তি পায় নায়ক হিসেবে তার প্রথম ছায়াছবি বেহুলা। সেই থেকে শুরু।
রাজ্জাকের নায়ক জীবনে জন্ম হয়েছে বেশ কয়েকটি সাড়া জাগানো জুটি। রাজ্জাক-কবরী জুটির কথা আজও মানুষের মুখে মুখে ফেরে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটিই পেয়েছে ক্লাসিকের খ্যাতি। আগের দিনের অনেক তারকার মতো এখনকার তারকাদের চোখেও রাজ্জাক একজন আইডল।
অভিনয় জীবনের এক পর্যায়ে ছবি পরিচালনার কাজও শুরু করেন রাজ্জাক। ষোলটির মতো ছায়াছবি পরিচালনা করেছেন তিনি।