আলোচিত সুইসাইড নোটের সেই বর্নিতার মৃত্যু
চিরকুট লিখে আত্মহত্যা চেষ্টার দুই মাস পর মারা গেলেন ঝালকাঠির রাজাপুরের পশ্চিম চারাখালি হাফেজ উদ্দিন মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বর্নিতা হাওলাদার (১৫)।
শনিবার বিকেলে বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে রাজাপুর থানা পুলিশ রোববার সকালে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
দুই মাস আগে একই বিদ্যালয়ের কৃষিশিক্ষার শিক্ষক ইন্দ্রজিৎ কুমার দাসকে দায়ী করে চিরকুট লিখে আত্মহত্যার চেষ্টা করে বর্নিতা। সে সময় তার এই চিরকুটে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
স্কুলছাত্রীর অভিযোগ, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শিক্ষক ইন্দ্রজিৎ তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়েন। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে প্রতারণা করে অনত্র বিয়ের চেষ্টা করেন তিনি।
স্কুলছাত্রীর ভাই বিপ্লব হাওলাদার জানান, পশ্চিম চারাখালি হাফেজ উদ্দিন মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় কুমার দাসের ছোট ভাই ইন্দ্রজিৎ বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার বোনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। সম্প্রতি বর্নিতার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে বিয়ের জন্যে পাত্রী দেখা শুরু করেন।
এক পর্যায়ে বর্নিতাকে দেওয়া মোবাইল ইন্দ্রজিৎ কৌশলে নিয়ে নেয়। এতে তাদের মধ্যে যোগাযোগ পুরো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ভেঙে পড়ে বর্নিতা। গত ৮ জুন চিরকুট লিখে রেখে গলায় ফাঁস লাগিয়ে নিজ বাড়িতে আত্মহত্যার চেষ্টা করে বর্নিতা।
পরিবারের লোকজন টের পেয়ে তাকে প্রথমে রাজাপুর এবং পরে বরিশাল শেবাচিম ও সর্বশেষ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
কিন্তু অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় চিকিৎসকরা গত ৩ আগস্ট বর্নিতাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। এরপর গতকাল শনিবার তার মৃত্যু হয়।
বর্নিতার ভাই বিপ্লব আরও জানান, বর্নিতা যথেষ্ট মেধাবী ছিল। তার স্বপ্ন ছিল বিচারক হওয়ার। স্ব-হস্তে লেখা চিরকুটেও তার বিচারক হওয়ার স্বপ্ন এবং তার মৃত্যুর কারণ হিসেবে স্কুলের শিক্ষক ইন্দ্রজিৎ কুমার দাসকে দায়ী করে গেছে বর্নিতা।
রাজাপুর থানার ওসি শেখ মুনীর উল গিয়াস জানান, এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মামলা হলে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হবে।
লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।