রোহিঙ্গাদের শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় দেয়ার আহ্বান

ঢাকা: মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতনের অতিষ্ঠ হয়ে জীবন বাঁচাতে নাফ নদী পাড়ি দিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।25-11-16-protest-rally_baitul-mokarram-21

ওআইসি, জাতিসংঘসহ বিশ্ব মুসলিম নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে আরাকান রাজ্যে তাদের বসবাসের ব্যবস্থা করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান তারা।

শুক্রবার বাদ জুমা বায়তুল মোকাররমে মিয়ানমারে মুসলিম নিধনযজ্ঞ,রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর নৃশংস নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে এ দাবি করা হয়।

হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর শাখার আয়োজনে সমাবেশে বক্তরা সরকারের উদ্দেশে বলেন, ১৯৭১ সালের মক্তিযুদ্ধে ভারত আমাদের স্বরনার্থী হিসেবে আশ্রয় না দিলে ১০০ বছরেও আমরা স্বাধীনতা পেতাম না। ভারতের মত আজকেও বর্ডার খুলে দিয়ে নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলিমদের স্বরনার্থী হিসেবে আশ্রয় দিন।

এসময় তারা ওআইসি ভেঙে দিয়ে মুসলিম জাতিসংঘ গঠন করে আরাকানের মসলমানদের পক্ষে জনমত গড়ে তোলার দাবি জানান।

হেফাজত ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফীর আহ্বানে আয়োজিত এ প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও ঢাকা মহানগরের সভাপতি মাওলানা নূর হোসেন কাসেমী।

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, মিয়ানমারে মুসলমানদের ওপর যেভাবে গণহত্যা চালাচ্ছে তাতে বিশ্বের কোনো মুসলমান চুপ থাকতে পারে না। বর্ডার খুলে দিয়ে তাদের আশ্রয় দিন। ওআইসি, জাতিসংঘসহ বিশ্ব মুসলিম নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে আরাকান রাজ্যে তাদের বাসবাসের ব্যবস্থা করুন।

অনতিবিলম্বে সরকারিভাবে হস্তক্ষেপ করে এই গণহত্যা বন্ধের ব্যবস্থা করার দাবি জানান মাওলানা নূর হোসেন কাসেমী।

আরেক নায়েবে আমির মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস বলেন, ১৯৭১ সালের মক্তিযুদ্ধে ভারত আমাদের শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় না দিলে ১০০ বছরের আমরা স্বাধীনতা পেতাম না। ভারতের মত আজকেও বর্ডার খুলে দিয়ে নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলিমদের শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় দিন।

তিনি বলেন, কোনো মুসলিম জনপদ আক্রান্ত হলে পাশ্ববর্তী মুসলিম দেশের ওপর জিহাদ ফরজে আইন হয়। শিগগিরই ওআইসি ভেঙে দিয়ে মুসলিম জাতিসংঘ গঠন করে আরাকানের ‍মুসলমানদের পক্ষে জনমত গড়ে তুলুন।

হেফাজতের ঢাকা মহানগর শাখার মহাসচিব মাওলানা আবুল হাসনাত আমিনী বলেন, মিয়ানমার সরকারের বর্বরতা থেকে নারী ও শিশুরাও রক্ষা পাচ্ছে না। রাস্তা, খালে-বিলে, নদীতে মুসলমানদের লাশ পাওয়া যাচ্ছে। এগুলো বন্ধ করুন।

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, নির্যাতিত এ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিন। প্রয়োজনে রোহিঙ্গাদের জন্য একটি জেলখানা তৈরি করুন। জেলখানা তৈরির অর্থ সরকারের না থাকলে হেফজাত ইসলাম অর্থের ব্যবস্থা করবে। হেফাজতের কর্মীরা তাদের জন্য নিজেদের সমুদয় সম্পত্তি উৎসর্গ করতে প্রস্তুত।

এছাড়াও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা আবদুল হামিদ, মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী, মাওলানা জাফরুল্লাহ খান, মুফতি মুহাম্মদ ফয়জুল্লাহ, মাওলানা আহমদ আব্দুল কাদের, মাওলানা মহিউদ্দিন একরাম, মাওলানা যোবায়ের আহমেদ, মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী, মাওলানা মুজিবুর রহমান আলমগীর প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বায়তুল মোকররম দক্ষিণ গেট থেকে শুরু হয়ে পল্টন মোড়, দৈনিক বাংলা মোড় ঘুরে আবার দক্ষিণে গেটে শেষ। এসময় পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনি তৈরি করে।

ad

পাঠকের মতামত