172407

অনলাইনে শিবিরের কার্যক্রম বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে

ছাত্রশিবিরের রাজনৈতিক কার্যক্রম প্রকাশ্যে বন্ধ। এ কারণে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এখন সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে সংগঠনটি। বেশির ভাগ নেতা অনলাইনে বেশ সক্রিয়। সংগঠনটির তৎপরতা রুখতে এবং তাদের অর্থের উৎস বন্ধ করতে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সহসাই এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেবেন তারা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গেল মাসের শেষদিকে দেশের শীর্ষ এক গোয়েন্দা সংস্থা তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ইসলামী ছাত্রশিবির সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিশেষ প্রতিবেদন পাঠায়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকার গঠন করলে চারদলীয় জোট সরকারের আমলে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির দেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত হয়।

 

 

এছাড়া, বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন ২০দলীয় জোটের আন্দোলন চলাকালে এবং যুদ্ধাপরাধের বিচার বাধাগ্রস্ত করতে ছাত্রশিবির দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা, ব্যাপক সহিংসতা ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালায়। এসব কারণে ছাত্রশিবিরের প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এতে বলা হয়েছে, বর্তমানে সংগঠনটি অনলাইনের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। মাঝে মাঝে এসএমএস-এর মাধ্যমে নেতারা কর্মীদের সঙ্গে সাংগঠনিক যোগাযোগ রাখে এবং সুযোগ পেলে বৈঠকে মিলিত হওয়ার চেষ্টা করে। তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে সংগঠনটি সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছে। এই অনলাইন ঠিকানায় অনলাইন লাইব্রেরির মাধ্যমে সংগঠনের আদর্শিক প্রচারণা চালাচ্ছে।

 

 

অনলাইন লাইব্রেরিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বিষয়ে আদালতের বিরুদ্ধে অবমাননাকর প্রচারণাসহ বিভিন্ন জিহাদি বই-পুস্তক রাখা হয়েছে। অনলাইন ঠিকানায় তাদের সামাজিক কাজকর্মের প্রচারসহ রাষ্ট্র ও প্রশাসনরিরোধী নানা প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এছাড়া, রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত শিবির সদস্যদের শহীদ আখ্যা দেয়া একটি তালিকা (ঘটনার বর্ণনাসহ) তাদের ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। একই ঠিকানায় শিবিরের যোগদানের নিয়মাবলী, ফরমস ও দৈনন্দিন প্রতিবেদন অনলাইন ভিত্তিতে জমা দেয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

 

 

এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাদের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বইগুলো অনলাইনে অ্যাপস আকারেও সংকলন করা হয়েছে। বইগুলো পিডিএফ আকারে তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে দেয়া হয়েছে। বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে ছাত্রশিবির ছদ্মবেশে বিভিন্ন সংগঠন খুলে স্কুল-কলেজ, মাদরাসাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাদের কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা ফুলকুঁড়ি নামের শিশু সংগঠন, উদ্ভাস, উচ্চারণ, নিমন্ত্রণ ও আগামীর পথে নামক সাংস্কৃতিক সংগঠন তৈরি করে প্রশাসনের অগোচরে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। শিবির এসব কার্যক্রম চালাতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাৎসরিক সদস্য সম্মেলনের মাধ্যমে, মাসিক ইয়ানত বা চাঁদা, নির্দিষ্ট ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবীদের কাছ থেকে, আইসিএস প্রকাশনার বই মাসিক কিশোর কণ্ঠ, ছাত্র সংবাদ, প্রসপেকটিভ এবং ত্রৈমাসিক এক নজর (অ্যাট এ গ্লেনস) সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিক্রি করে অর্থ সংগ্রহ করে থাকে। এছাড়াও বাৎসরিক ক্যালেন্ডার, খাতা-কলম ও ডায়েরি সংগঠনের নামে বাজারজাত করে ও সারা দেশে তাদের পরিচালিত ৭৫টির বেশি কোচিং সেন্টার থেকে অর্থ আয় করে। এসব কারণে ছাত্রশিবিরের অনলাইন প্রচারণার মাধ্যমে প্রচারিত চেতনা রুখতে এবং তাদের এসব অর্থের উৎস বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিশেষ প্রতিবেদনের সুপারিশের আলোকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে চিঠি দিতে যাচ্ছে। পাশাপাশি অনলাইনের প্রচারণা বন্ধ করতে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেয়া হবে।

ad

পাঠকের মতামত