171706

‘বাংলার বাঘিনী’র স্বর্ণ জয়

রিদমিক জিমন্যাস্টিকসে স্বর্ণ জিতেছেন বাংলাদেশি কন্যা মার্গারিটা মামুন রিটা। বাংলার বাঘিনী খ্যাত বাংলাদেশি-বংশোদ্ভূত এই রাশিয়ান তরুণী প্রতিযোগিতার অল অ্যারাউন্ড ইভেন্টে ৭৬.৪৮৩ পয়েন্ট পেয়ে স্বর্ণ জিতেেসোনা জিতেছেন বাংলাদেশি-বংশোদ্ভূত এই রাশিয়ান তরুণী।

মার্গারিটার বাবা আবদুল্লাহ আল মামুন পেশায় একজন মেরিন প্রকৌশলী। তাঁর মা আনা একজন সাবেক রিদমিক জিমন্যাস্টস। আশির দশকে আবদুল্লাহ আল মামুন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নে পড়াশোনা করতে গিয়ে সেখানেই বিয়ে করে স্থায়ী হন। রিদমিক জিমন্যাস্টিকসে এর আগে বিশ্ব রেকর্ডও করেছিলেন মার্গারিটা।

হিটে প্রথম হয়েই ফাইনালে উঠেছিলেন মার্গারিটা। সেখানে চার ইভেন্ট হুপ, বল, ক্লাব ও রিবনে তাঁর সর্বমোট স্কোর ছিল ৭৪.৩৮৩। ফাইনালে হিটের স্কোরকেও ছাড়িয়ে গেলেন তিনি।

স্বর্ণ জয়ের পথে মার্গারিটা পেছনে ফেলেন ফেভারিট ও তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন স্বদেশি ইয়ানা কুদ্রিয়াভৎসেভাকে। ফাইনালে প্রতিযোগিতার হুপ ও বলের রুটিন শেষে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষেই ছিলেন ইয়ানা। কিন্তু ক্লাব-পারফরম্যান্সের শেষ মুহূর্তে ভুল করে বসেন। ক্লাব উপরে ছুড়ে ফ্লোরে গড়িয়ে ধরতে পারনি। বাড়িয়ে থাকা হাতকে ফাঁকি দিয়ে তা পড়ে যায় ফ্লোরে। এতে অনেকটাই এগিয়ে যান মামুন। সর্বমোট ৭৬.৪৮৩ স্কোর করে সেরা হন মামুন। শেষ পর্যন্ত ৭৫.৬০৮ স্কোর করে রুপা জেতেন ইয়ানা। ইউক্রেইনের গানা রিজাতদিনোভা পেয়েছেন ব্রোঞ্জ।

অলিম্পিক পদক এখনো অনেক দূরের স্বপ্ন বাংলাদেশের। বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের অংশ নেওয়া এখনো ‘অভিজ্ঞতা অর্জনের’ মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বাংলাদেশি-বংশোদ্ভূত মার্গারিটার অলিম্পিক-সাফল্য তাই গর্বিত করছে বাংলাদেশকেও।

রাশিয়াকে এই ইভেন্টে টানা পঞ্চম স্বর্ণ পদক এনে দেওয়া মামুন বলেন, “আজ আমার স্বর্ণের পদক জেতাটা খুবই অপ্রত্যাশিত। কারণ আজকের আগে অল অ্যারাউন্ডে ইয়ানা আমাকে হারিয়ে প্রতিবার জিতেছে। তাই আমি আজকে স্বর্ণের পদক জিতবো তা আসলেই ভাবিনি।”

মামুন খুবই আনন্দিত যে তার জয় তার বাংলাদেশেও উদযাপিত হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমি এটা জেনে খুব খুশি যে বাংলাদেশের অনেক ভক্ত আমাকে সমর্থন করছে। আমি বাংলায় ১ থেকে ১০ পর্যন্ত গুনতে পারি। যখন ছোটো ছিলাম, আমার বাবা আমাকে বাংলা শেখাতেন; কিন্তু আমি সব ভুলে গেছি।”

জুনিয়র পর্যায়ে একবার বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা মার্গারিটা মামুন বলেন, “আমার দ্বৈত নাগরিকত্ব ছিল, তাই আমি জুনিয়র হিসেবে একটি প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমি সবসময়  রাশিয়ায় থেকেছি আর অনুশীলন করেছি দেখে এরপর আমি রাশিয়ার প্রতিনিধিত্ব করি।”

গত কয়েক বছরে এই অঙ্গনে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন রিটা। এর মধ্যে জিতেছেন রাশিয়ার রিদমিক জিমন্যাস্ট দলের প্রধান কোচের মনও। আর তাই তো সে কোচ রিটার নাম দিয়েছেন ‘দ্য বেঙ্গল টাইগ্রেস’ বা ‘বাংলার বাঘিনী’। তার এই বিশেষ নামটি আন্তর্জাতিক জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশনের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটেও পাওয়া যায়, সঙ্গে উইকিপিডিয়াতেও।

ad

পাঠকের মতামত