267380

রাসুল (সা.) বিদায় হজের ভাষণে গুরুত্বপূর্ণ যে কথাগুলো বলেছিলেন

ইসলাম ডেস্ক।। রাসুল [সা] তার জীবনের শেষ হজে আইয়ামে তাশরিকের মধ্যবর্তী সময়ে যে ভাষণ দিয়েছিলেন তার বক্তব্য ছিলো এমন- হে লোক সকল, তোমরা কি জানো কোন্ মাস, কোন্ দিন ও কোন্ শহরে তোমরা আছো? উত্তরে লোকেরা বললো- সম্মানিত দিনে, সম্মানিত শহরে ও সম্মানিত মাসে আমরা আছি।

রাসুল [সা] তার জীবনের শেষ হজে আইয়ামে তাশরিকের মধ্যবর্তী সময়ে যে ভাষণ দিয়েছিলেন তার বক্তব্য ছিলো এমন- হে লোক সকল, তোমরা কি জানো কোন্ মাস, কোন্ দিন ও কোন্ শহরে তোমরা আছো? উত্তরে লোকেরা বললো- সম্মানিত দিনে, সম্মানিত শহরে ও সম্মানিত মাসে আমরা আছি। তিনি বললেন- তোমাদের রক্ত, তোমাদের ধন-সম্পদ ও তোমাদের ইজ্জত-আব্রু কেয়ামত পর্যন্ত তেমনি পবিত্র ও সম্মানিত, যেমন পবিত্র ও সম্মানিত আজকের এই দিন, এই মাস ও এই শহর।

এরপর তিনি বলেন- আমার কথা শোনো, যাতে তোমরা বিশুদ্ধ জীবন যাপন করতে পারো। সাবধান, কারো ওপর তোমরা জুলুম করবে না; সাবধান, তোমরা জুলুম করবে না, খবরদার তোমরা জুলুম করবে না। আর কোনো মুসলমানের ধন-সম্পত্তি থেকে তার সম্মতি ছাড়া কোনো কিছু গ্রহণ করা তোমাদের জন্য বৈধ নয়। সর্বপ্রকার রক্ত, সব ধরনের ধন-সম্পদ, যা জাহেলি যুগ থেকে চলে আসছে, তা কেয়ামত পর্যন্ত বাতিল ঘোষিত হলো। আর সর্বপ্রথম যে রক্ত (প্রতিশোধ হিসাবে) বাতিল ঘোষিত হচ্ছে তা রবিয়া ইবনে হারেস ইবনে আবদুল মুত্তালিবের রক্ত, যে বনি লাইসে প্রতিপালিত হয়েছিলো এবং যাকে হোযাইল গোত্রের লোকেরা হত্যা করেছিলো।

জাহেলি যুগের সর্বপ্রকার সুদ রহিত করা হলো এবং আল্লাহ তায়ালার সিদ্ধান্ত, সর্বপ্রথম সেই সুদ রহিত করা হবে যা হবে আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিবের সুদ। তবে তোমরা তোমাদের মূলধন ফিরে পাবে। এ ব্যাপারে তোমরা নিজেরা অত্যাচারিত হবে না আর তোমরাও কারো ওপর জুলুম কবে না। আদিতে তিনি যখন আকাশ-পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন, কালের আবর্তনে-বির্বতনে আজ সেখানেই এসে পৌঁছেছে। এরপর তিনি তেলাওয়াত করলেন- ‘নিশ্চয় আল্লাহর বিধান ও গণনায় মাস বারটি, আকাশসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। তন্মধ্যে চারটি সম্মানিত। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান;সুতরাং এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না।’ (সূরা তাওবা, আয়াত ৩৬)

আর হ্যাঁ, আমার পর আমার অবর্তমানে তোমরা পরস্পর লড়াই করে কাফের হয়ে যেয়ো না। মনে রেখো, শয়তান এ বিষয়ে নিরাশ হয়ে গেছে, যারা নামাজ আদায় করে তারা কোনোদিন তার উপাসনা করবে না। তবে হ্যাঁ, সে তোমাদের বিভিন্ন রকমের চক্রান্তের উষ্কানি দেবে। নারীদের ব্যাপারে তোমরা আল্লাহ্কে ভয় করবে। কেননা, তারা তোমাদের তত্ত্বাবধানে আছে। তারা নিজেদের ব্যাপারে স্বাধীনভাবে কিছু করতে সক্ষম নয়। তোমাদের ওপর তাদের অধিকার রয়েছে এবং তাদের ওপর তোমাদের অধিকার রয়েছে। তাদের ওপর তোমাদের অধিকার হলো, তারা আপন স্বামী ছাড়া তাদের শয্যায় কাউকে ঢোকার অধিকার দেবে না।

যদি তাদের থেকে অবাধ্যতার ঋয় কর তাহলে তাদেরকে উপদেশ দাও, বোঝাও এবং তাদের শয্যা ত্যাগ করো, পৃথক করে দাও এবং তাদের হাল্কাভাবে প্রহার কর; আর তাদের ন্যায়সঙ্গতভাবে খোরপোশ প্রদান করো। এ তাদের প্রাপ্য অধিকার। কেননা তোমরা তাদেরকে আল্লাহর নামে তাদের সতীত্ব-সম্পদ নিজেদের জন্য বৈধ করেছো। মনে রেখ, কারো কাছে অপর কারোর আমানত রক্ষিত থাকলে সে যেনো আমানতকারীর নিকট তা ফেরৎ দেয়। এতদূর বলার পর তিনি আপন হস্তদ্বয় প্রসারিত করলেন এবং বললেন, আমি কি তোমাদেরকে পয়গাম পৌঁছে দিয়েছি? আমি কি পয়গাম পৌঁছে দিয়েছি? এরপর যারা এখানে উপস্থিত আছ তারা যেনো অনুপস্থিত লোকদের কাছে তা পৌঁছে দেয়। কেননা এমন অনেক অনুপস্থিত লোক আছে যারা উপস্থিত শ্রোতাদের তুলনায় অধিক ভাগ্যবান হয়ে থাকে। (নবিয়ে রহমত)

ad

পাঠকের মতামত