‘ভোগ’ ম্যাগাজিনে প্রথম বাংলাদেশি বিকিনি মডেল হলেন পিয়া
ছোট ও বড়পর্দা মিলিয়ে সাম্প্রতিক সময়ের বেশ আলোচিত মুখ র্যাম্প তারকা জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া। দেশের নামকরা এই অভিনেত্রী অভিনয় জগতে পদার্পণের পূর্বে মডেল হিসেবে খ্যাত ছিলেন। হয়েছিলেন মিস বাংলাদেশও।
নিজেকে দিন দিন অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছেন পিয়া। এবার প্রথম বাংলাদেশী নারী হিসেবে বিশ্ব বিখ্যাত ম্যাগাজিন ‘ভোগ’র ‘কভার গার্ল’ হতে যাচ্ছেন পিয়া। রোববার পিয়া নিজেই এ খবর দিয়েছেন। সম্প্রতি মুম্বাইয়ে তিনি ‘ভোগ’র ফটোশুটে অংশ নিয়েছেন। ফটোশুট শেষে তিনি এখন দেশে।
এ প্রসঙ্গে পিয়া বলেন, ভোগ সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলার নেই। সেলিব্রেটি ওয়াল্ডের অন্যতম আকর্ষণ থাকে এই ম্যাগাজিনটি। ম্যাগাজিনটির অক্টোবর সংখ্যার প্রচ্ছদে থাকছি আমি। মুম্বাইয়ের মেহবুব স্টুডিওতে সম্প্রতি এর শুট আউট হয়। এর দায়িত্বে ছিলেন ভোগের ফ্যাশন এডিটর এনাইটা এ্যাদাজানিয়া। ক্যামেরায় ছিলেন ভারত শিখা আর হেয়ার স্টাইলে ছিলেন প্যারিসের প্রখ্যাত ফ্যাশন আইকন সাইরিলে।
আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাগুলোতে তার সাহসিক অংশগ্রহণ, সাফল্যের বিষয়ে পিয়ার বক্তব্য- আমি আসলে আন্তর্জাতিক ইভেন্ট-প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছি। বাংলাদেশের স্যাসে পড়ে এত বড় ইভেন্টে দাঁড়িয়ে গর্ববোধ করেছি অনেক। মনে হয়েছে দেশের জন্য কিছু করতে পেরেছি। আর অনেকে হয়তো অনেক কথা বলছেন, সমালোচনাও করছেন ফেসবুক কিংবা অন্যত্র। কিন্তু মনে রাখতে হবে এটা আন্তর্জাতিক ইভেন্ট।
পিয়া জানান, এখানে বিকিনি পরে কাজ করতে হয়। আর আমি কিন্তু এমন নয় যে বিচে বিকিনি পরে একা একা পোজ দিয়েছি! মঞ্চে অন্য দেশের মডেলরাও কিন্তু আমার পাশে ছিল। আমার কাছে কাজটাই মুখ্য। কাজের মাধ্যমে নিজ দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারছি, এটা আমার জন্য বড় ব্যাপার।
ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল ভিত্তিক ‘ভোগ’ ম্যাগাজিন মূলত প্রতিমাসে একবার বিশ্বের ২০টিরও বেশি দেশে একযোগে প্রকাশ পায়। প্রতিমাসে প্রায় তিন কোটি কপি বিক্রি হয়।
খুলনার মাইলস্টোন কলেজে পড়ার সময় হঠাৎ করে একদিন অপূর্ব নামের একজন ফটোগ্রাফার তাকে ফটোশুটের অফার করে। সেই ফটোশুট করার পর থেকেই তার কাছে আসতে থাকে র্যাম্পে হাটার অফার। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।
র্যাম্প, মডেলিং ও অভিনয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়ার জনপ্রিয়তা আকাশ চুম্বি! ২০০৭ সালে মিস বাংলাদেশ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী পিয়া নিজের গ্ল্যামারের দ্যুতি ছড়িয়ে একাধিকবার বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মঞ্চে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
মিশরের রেড সী, এলগোয়ানাতে অনুষ্ঠেয় ‘টপ মডেল অব দ্য ওয়ার্ল্ড-২০১৩’-এ বিভিন্ন দেশের ৪৭ জন মডেলের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন পিয়া। বাংলাদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি।
সুন্দরী ও মডেল প্রতিযোগিতায় বিকিনি পরা বিভিন্ন প্রতিযোগীর সঙ্গে ছবি প্রকাশ হওয়ায় সেসময় আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় আয়োজিত ‘ওয়ার্ল্ড মিস ইউনিভার্সিটি’ শিরোপা অর্জন করেন পিয়া। ২০১২ সালে রেদওয়ান রনি পরিচালিত ‘চোরাবালি’ ছবিতে অভিনয় করে অভিনেত্রী হিসেবে সবার নজর কাড়েন তিনি।
এদিকে সাবেক মিস বাংলাদেশ পিয়া শুধু মডেল ও অভিনেত্রী হিসেবেই নন, নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন আইনজীবী পেশাতেও। প্রবীণ আইনজীবী ও সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেনের সহকারী হিসেবে কাজ করছেন তিনি। আগামীতে দেশের বাইরে থেকে ব্যারিস্টারি ডিগ্রি নেওয়ার ইচ্ছে তার। তাছাড়া বিসিএস পরীক্ষার জন্যও প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।
উল্লেখ্য, এর আগে মডেল আসিফ আজিম ‘ভোগ’র প্রচ্ছদে প্রথম বাংলাদেশী মডেল হিসেব ফটোশুটে অংশ নেন।