নির্বাচনি কার্যক্রম শুরুর আগেই পদত্যাগ করব : আসিফ মাহমুদ
নীতিগত জায়গা থেকে নির্বাচনি কার্যক্রমে ঢুকে যাওয়ার আগেই পদত্যাগ করা প্রয়োজন—আমি সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
কোন আসন থেকে নির্বাচন করতে যাচ্ছেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “নির্বাচন করব বলে ঘোষণা দিয়েছি, তবে কোন জায়গা থেকে করব, সেটি ঘোষণা দেইনি।”
সরকারে থেকে নির্বাচন করার প্রসঙ্গে আসিফ মাহমুদ বলেন, “সরকারে থাকা আরও কেউ কেউ নির্বাচন করবেন, এমন কথাও আছে। এমন কোনো আইন বা বিধিনিষেধ নেই, যে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা বা কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। তবে সরকারের পদে থেকে নির্বাচন করা স্বার্থের সংঘাত। সেই নীতিগত জায়গা থেকে মনে করি, যে বা যারাই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক, তাদের নির্বাচনি কার্যক্রমে ঢুকে যাওয়ার আগেই পদত্যাগ করা প্রয়োজন। আমি সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছি। বাকি বিষয়গুলো সরকারের উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে জানাতে পারব। কোন দল থেকে নির্বাচন করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, রাজনৈতিক বিষয়ে এখন কোনো মন্তব্য না করাই ভালো।”
ঢাকা উত্তর সিটির প্রশাসকের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “অবশ্যই কারো অনিয়ম থাকলে দুদক সেটা অনুসন্ধান করতে পারে। দুদক কিছু পেলে সেটা জানাতে পারে এবং সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে মন্ত্রণালয়।”
এর আগে, ১১টি জেলার ৪৪টি উপজেলায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে পাবলিক লাইব্ররির উদ্বোধন করেন তিনি। একেকটি লাইব্রেরির নির্মাণ ব্যয় ৫৩ লাখ টাকা, প্রকল্পের মোট ব্যয় হয়েছে ২৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, “উত্তরবঙ্গে শিক্ষার হার ৫০ শতাংশেরও কম। মূলত লাইব্রেরি নির্মাণের প্রকল্পটা উত্তরবঙ্গকে কেন্দ্র করেই নেয়া। যদিও আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম, প্রত্যেকটি উপজেলায় এই লাইব্রেরি করা হবে। জুলাই আন্দোলনের আমাদের ব্যানারের নাম ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এট শিক্ষার ক্ষেত্রে এই বৈষম্যের অবসান ঘটানোর একটা ছোট্ট উদ্যোগ। এটা হয়তো বিস্তৃত কিছু নয়, তারপরও উপজেলাগুলোতে জ্ঞানচর্চার একটা জায়গা তৈরি হবে।”
উপদেষ্টা বলেন, “ভালো বই সঠিক পথ দেখায়। শিক্ষিত, মানবিক ও সৃজনশীল প্রজন্ম গড়ে তুলতে লাইব্রেরিগুলো ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি। বাকি সব উপজেলায় এক বছরের মধ্যে এমন লাইব্রেরি নির্মাণ করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার চেষ্টা করছে উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন বৈষম্য কমাতে। দেশের গড় দারিদ্র্য হার ১৯ দশমিক ২ শতাংশ, সেখানে রংপুর বিভাগের দারিদ্র্য হার ২৫ শতাংশ। কিছু উপজেলার সাক্ষরতার হার ৫০ শতাংশেরও কম। সেই প্রেক্ষাপটে লাইব্রেরি নির্মাণ অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। লাইব্রেরিগুলো কেবল বই রাখার স্থান নয়, এগুলো জ্ঞান চর্চায়, গবেষণায় ও সৃজনশীল চিন্তার ক্ষেত্রে কাজে আসবে।”
উল্লেখ্য, রংপুর বিভাগের রংপুর, লালমনিরহাট, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, পঞ্চগড়, গাইবান্ধা জেলার ৪১টি উপজেলায়, ময়মনসিংহ বিভাগের ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর এবং চট্টগ্রাম বিভাগের কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলা এবং খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা উপজেলাসহ মোট ৪৪টি উপজেলায় এ পাবলিক লাইব্রেরি নির্মাণ করা হয়েছে।










