তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে আপিলের রায় আজ
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরবে কিনা আজ জানা যাবে। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ রায় ঘোষণা করবেন। গত ১১ নভেম্বর টানা দশ দিনের শুনানি শেষে আজকের দিনটি রায়ের জন্য নির্ধারণ করা হয়।
বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন,বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি এস এম ইমদাদুল হক, বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুব।
এর আগে টানা ১০ দিন ২, ৪, ৫, ৬, ১১ নভেম্বর এবং ২২, ২৩, ২৮, ২৯ অক্টোবর শুনানি শেষে গত ১১ নভেম্বর রায় ঘোষণার তারিখ হিসেবে ২০ নভেম্বর নির্ধারণ করেন আদালত। ২১ অক্টোবর শুরু হওয়া এই মামলাটি দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত সাংবিধানিক মামলা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
আপিলকারীদের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া।বিএনপির পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। ইন্টারভেনর হিসেবে অংশ নেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদ ও ব্যারিস্টার শাহরিয়ার কবির।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক।
বাংলাদেশের সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা যুক্ত হয় ১৯৯৬ সালের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে। এ সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে রিট করেন অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট রিট খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বৈধতা ঘোষণা করে।
পরবর্তীতে ২০০৫ সালে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দেন আদালত। এর ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করেন। এর পরই ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয় পঞ্চদশ সংশোধনী, যেখানে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত হয়।
সরকার পরিবর্তনের পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। এদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং নওগাঁর বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেনও আলাদাভাবে রিভিউ আবেদন করেন।
সব আবেদন একত্রে শুনানি শেষে আপিল বিভাগ আজ রায় দিতে যাচ্ছে। এই রায় দেশের ভবিষ্যৎ নির্বাচনব্যবস্থা, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সাংবিধানিক কাঠামোয় বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। আজকের রায়ে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ দেশের সব মহলের দৃষ্টি এখন সুপ্রিম কোর্টের দিকে।










