
সৌদি রাষ্ট্রদূতের উপহার ফেরত দিয়েছি, কেবল কোরআন রেখেছি’ — মডেল মেঘনা আলম
আলোচিত মডেল মেঘনা আলম আদালতে গিয়ে বলেছেন, সৌদি রাষ্ট্রদূতকে আমি রিজেক্ট করেছি, রিজেক্ট। তার দেওয়া সব উপহার আমি ফেরত দিয়েছি। তবে ধর্মীয় অনুভূতির জায়গা থেকে আমি নিজের কাছে রেখেছি তার দেওয়া আল কোরআন, বোরকা ও জায়নামাজ।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুর রহমানের আদালতে হাজির হন মেঘনা আলম। এরপর রাজধানীর ধানমণ্ডি থানার প্রতারণা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে করা মামলায় জব্দ থাকা মোবাইল ফোন, আইপ্যাড ও পাসপোর্ট মেঘনা তার নিজের জিম্মায় চাইলেও তা নামঞ্জুর করেন আদালত।
শুনানি শেষে মেঘনা আলম সিএমএম আদালত প্রাঙ্গণে গণমাধ্যমে জানান, ‘কেন সৌদি আরবের একজন রাষ্ট্র দূতের ইশারায় আমাদের দেশের ন্যায় বিচার বন্ধ হয়ে থাকবে? যে ব্যক্তি (সৌদি রাষ্ট্রদূত) আমাকে বিয়ের আংটি পরিয়ে ঘরে তুলতে চেয়েছে। তাকে আমি রিজেক্ট করেছি, রিজেক্ট। আমাকে কেন দিনের পর দিন হয়রানি করা হচ্ছে? এখন আমাকে মৃত্যুর হুমকি দেয়। সরকার নাকি ওয়াদাবদ্ধ হয়েছে আমাকে মৃত্যুদণ্ড দেবে। আমার দেশের সরকার কীভাবে বিদেশিদের কাছে ওয়াদাবদ্ধ হয়? স্বৈরাচারের সময়ের মতো এখনো বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে। আদালতে দাঁড়িয়ে মিথ্যা বলায় বিচার ব্যবস্থাকে ধিক্কার জানাই।’
মেঘনা আলম আরও বলেন, ‘সৌদি অ্যাম্বাসি আমাকে আল কোরআন দিয়েছে। সৌদিরা যখন কাউকে মর্যাদার যোগ্য মনে করে তখন তার হাতে আল কোরআন তুলে দেয়। তারা আমাকে সে সম্মান দেখিয়েছেন। সেজন্য আমি তাদের সে সম্মান বহন করছি। আপনাদের মধ্যে যদি কোনো মানবতা থাকে, তাহলে আমি বলব, আপনারা এ হয়রানি থেকে আমাকে মুক্ত করেন।’
সৌদি রাষ্ট্রদূতকে রিজেক্ট করলেও তার উপহার নিয়ে আদালতে কেন- এমন প্রশ্নে মেঘনা আলম বলেন, ‘তার দেওয়া সব উপহার আমি ফেরত দিয়েছি। তবে ধর্মীয় অনুভূতির জায়গা থেকে আমি নিজের কাছে রেখেছি তার দেওয়া আল কোরআন, বোরকা ও জায়নামাজ।’
গত ৯ এপ্রিল বাসা থেকে আটক হন মেঘনা আলম। এরপর চাঁদাবাজির মামলায় রিমান্ডে যান তিনি। এ ছাড়া ডিটেনশন আইনে তার ৩০ দিনের আটকাদেশ দেন আদালত। পরে গত ২৮ এপ্রিল ডিটেনশন আইনে মেঘনা আলমের ৩০ দিনের আটকাদেশ বাতিল করা হয়। ওইদিনই কারামুক্ত হন তিনি। এরপর থেকে তিনি জামিনে আছেন।
এদিকে চাঁদাবাজি মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, মেঘনা আলম, সমিরসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা বিভিন্ন সুন্দরী মেয়েদের দিয়ে বাংলাদেশে কর্মরত বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্রের কূটনীতিক/প্রতিনিধি ও দেশীয় ধণাঢ্য ব্যবসায়ীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করিয়ে কৌশলে বিভিন্ন উপায়ে অবৈধ পন্থা অবলম্বনের মাধ্যমে তাদের সম্মানহানির ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করে আসছে।
প্রসঙ্গত, সৌদি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে মেঘনা আলমের সম্পর্কের বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে আসে।