371353

নোংরামি করবেন না, নির্বাচনে সুষ্ঠু ও অবাধভাবে অংশগ্রহণ চাই: তামিম ইকবাল

আপত্তিপত্রে নাম, ঠিকানা, পরিচয় ও মোবাইল নম্বর সবই আছে। তাতে দেখা যাচ্ছে সাবেক ক্রিকেটার হালিম শাহ তামিম ইকবালের কাউন্সিলরশিপ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ পেশ করেছেন; কিন্তু তার সাথে যোগাযোগ করা হলে হালিম শাহ সেটা অস্বীকার করেছেন। বলেছেন, এ চিঠি তার দেয়া নয়। হালিম শাহর নামে আসলে তামিমের বিপক্ষে কে আপত্তি তুলেছেন? তা নিয়েও আছে নানা গুঞ্জন।

এক যুগেরও বেশি সময় ধরে কানাডা প্রবাসী হালিম শাহর অভিযোগ, তামিম ইকবাল এখনো ক্রিকেটার। একজন রানিং ক্রিকেটার হিসেবে তিনি বোর্ড কর্মকর্তা হতে পারেন না। আর তামিম ইকবাল যে ক্লাবের হয়ে বিসিবি নির্বাচনে কাউন্সিলরশিপ জমা দিয়েছেন, সেই ওল্ডডিওএইচএস ক্লাবের সাথেও তামিমের কোনরকম সম্পৃক্ততা নেই।

বিসিবি নির্বাচনী তপসিল অনুযায়ী আজ ২৫ সেপ্টেম্বর ছিল সেসব আপত্তিসমুহের শুনানির দিন। তাই দুপুরে বিসিবিতে উপস্থিত হয়ে তামিম ইকবাল কাগজপত্রসহ নির্বাচন কমিশনের সাথে দেখা করেছেন। কথাও বলেছেন। নির্বাচন কমিশনের সাথে কথাবার্তা বলার পর তামিম উপস্থিত সংবাদকর্মীদের সাথেও কথা বলেন।

অনেক কথার ভিড়ে তামিম পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি চান অবাধ, সুষ্ঠু ও পক্ষপাতহীন নির্বাচন। কারো নাম উল্লেখ না করে তামিম বলে ওঠেন, দয়া করে নোংরামি করবেন না। ক্রিকেটের সাথে দেশের ১৮ কোটি মানুষের আবেগ জড়িত। সেই আবেগের সাথে নোংরামি না করার আবেদন তামিমের কণ্ঠে।

তার নিজের কাউন্সিলরশীপ নিয়ে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তামিম বলেন, যিনি আমার নামে অভিযোগ করেছেন, তিনিই বিভিন্ন জায়গায় বলে যাচ্ছেন যে, আমি কমপ্লেইন করিনি। আমি সাইন করিনি। আসলে এটা কে লিখেছেন, সেটা আমিও জানি। আমাকে এসব করার আগে বলে দেয়া হচ্ছে যে, তোমার বিপক্ষে এসব অভিযোগ করা হবে। আমরা কথা হলো, যে বা যারা আমার বিপক্ষে অভিযোগ এনেছেন, তারা একটা জিনিস ভুলে যাচ্ছেন, ওখানে কিন্তু দুটি জিনিস উল্লেখ করা আছে। অর্গানাইজার বা সাবেক ক্রিকেটার।

তামিম দৃঢ়তার সাথে বলে ওঠেন, তিনি যে ক্রিকেট সংগঠক না, তা কেউ প্রমাণ করতে পারবেন না এবং এ মুহূর্তে ঢাকার দুটি ক্লাবের কমিটিতে থাকার কথা জানিয়ে তামিম বলেন, আমি যে অর্গানাইজার না এটা কেউ প্রমাণ করতে পারবে? আমি তিনটা টিম ওউন করি। দুইটা টিমের কমিটিতে আছি।’

তিনি খেলা ছেড়ে সাবেক ক্রিকেটার হননি। তা নিয়েও খোলামেলা কথা বলেছেন জাতীয় দলের এ সাবেক অধিনায়ক। বলেন, ‘সাবেক ক্রিকেটারের কোনো ব্যাখ্যা গঠনতন্ত্রে নেই। আমার অফিসিয়াল রিটায়ারমেন্ট বা অবসরের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করতে হবে, এমন কোনো কথাও লিখা নেই গঠনতন্ত্রে। অবসরের ঘোষণা দিয়ে খেলা ছাড়াই যদি মানদণ্ড হতো এবং বিসিবির গঠনতন্ত্রে যদি সেটাই লিখা থাকতো যে, নির্দিষ্ট দিনক্ষণের মধ্যে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে অবসর না নিলে সাবেক ক্রিকেটারের তকমা গায়ে লাগবে না, তাহলে বিসিবি বর্তমান সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল আর ‘সি’ ক্যাটাগরিতে জাতীয় দলের খেলোয়াড় হিসেবে কাউন্সিলর হওয়া মোহাম্মদ আশরাফুলের কাউন্সিলরশিপও বৈধ নয়।’

আশরাফুলের কাউন্সিলর হওয়ার উদাহরণ দিয়ে তামিম বলেন, ‘বিসিবি সি- ক্যাটারিতে যে ১৫ জনের লিস্ট দিয়েছে সেখানে মোহাম্মদ আশরাফুল কাউন্সিলর। যে মাত্র ইংল্যান্ড থেকে খেলে আসলো। আমিনুল ইসলাম বুলবুল ভাই আমাদের বিসিবি প্রেসিডেন্ট, উনিও অফিসিয়ালি কোথাও অবসরের কথা ঘোষণা করেননি। তারা যদি আমাকে সেভাবে ধরার চেষ্টা করেন, তাহলে তারাও ধরা খাবেন। আমি রিসেন্ট টাইমে ক্রিকেট খেলেছি ৫ মাস আগে। গঠনতন্ত্রে যদি লিখা থাকতো অমুক তারিখের মধ্যে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে অবসরে যেতে হবে, তাহলে আমি মানতাম; কিন্তু এমন কোনো কথা লিখা নেই।’

ক্লাব সংগঠক হিসেবে নিজের সম্পৃক্ততার প্রমাণ দিয়ে তামিম বলেন, ‘আমি গুলশান ক্লাবের কমিটিতে আছি। কিন্তু আমার বিপক্ষে যে আপত্তি তোলা হয়েছে, তাতে লিখা আছে আমার সাথে ওল্ডডিওএইচএসের কোন সম্পর্ক নেই। প্লিজ আমি যে কাগজ জমা দিয়েছি, সেখানে দেখেন আমি ওল্ডডিওএইচএসের কমিটিতে আছি কি না! এ মুহূর্তে চিটাগাংয়ে একটি টি-টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট চলছে, সেখানে আমি টিম ‘ওউন’ করি। শতদলের সাথে আমি চার-পাঁচ বছর ধরে জড়িত। আমার লজ্জা লাগছে যে, আমাকে এখানে এসে এ বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করতে হচ্ছে।’

তামিমের শেষ কথা, আমি আবারো বলি সঠিকভাবে নির্বাচন করি, হেরে যাই, কে প্রেসিডেন্ট হলো, না হলো আমার কোন কিছু যায় আসবে না। বাট এ নোংরামি করবেন না। জাস্ট ইগো বা জিতার জন্য। ক্রিকেটে ১৮ কোটি মানুষের আবেগ জড়িত। এখানে এই নোংরামিগুলো করবেন না।’ উৎস: জাগোনিউজ২৪

 

ad

পাঠকের মতামত