
চালের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের ৩টি উদ্যোগ: সংগ্রহ, আমদানি ও খাদ্য বিতরণ কর্মসূচি
চালের দাম কমতে পারে বলে জানিয়েছে সরকারে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। ন্ত্রণালয়ের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) বলছে, অর্থনীতির স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তাদের মতে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রবৃদ্ধির মধ্যে ভারসাম্য আনতে হবে।
সর্বশেষ মাসিক প্রতিবেদনে জিইডি জানিয়েছে, আগস্টে মূল্যস্ফীতি নেমে এসেছে ৮.২৯ শতাংশে, যা জুলাই ২০২২-এর পর সর্বনিম্ন। খাদ্য মূল্যস্ফীতিও তিন মাস ধরে স্থিতিশীল রয়েছে ৭.৬ শতাংশে। তবে চালের দাম বেশি থাকায় মূল্যস্ফীতির প্রভাব ততটা কম অনুভূত হচ্ছে।
জিইডির হিসাবে, আগস্টের মূল্যস্ফীতিতে চালের অবদান ছিল ৪৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ। ফলে চালের দাম বেশি থাকায় সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি কমলেও জনগণ তা তেমনভাবে টের পাচ্ছে না।
জিইডি আশা করছে, সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ—১৭ লাখ টন বোরো চাল সংগ্রহ, ৫ লাখ টন শুল্কমুক্ত আমদানি ও খাদ্য বিতরণ কর্মসূচি চালু থাকায় চালের দাম কমতে পারে।
তবে সিপিডি-র গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম মনে করেন, সরবরাহ ভালো হলেও চালের দাম কমছে না। তার ব্যাখ্যায়, দীর্ঘদিনের উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও বাড়তি দারিদ্র্যের কারণে দরিদ্র মানুষ শাকসবজি ও আমিষ খাওয়ার ক্ষমতা হারিয়েছে, ফলে চালের ওপর নির্ভরশীলতা বেড়েছে।
তার মতে, বাজারে নতুন আমন চাল না আসা পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা কম।
অর্থনীতির বহিঃ খাতে রপ্তানি আয়, রিজার্ভ ও বিনিময় হার স্থিতিশীল থাকলেও অভ্যন্তরীণ খাতে বিনিয়োগে ধীরগতি লক্ষ করা যাচ্ছে। ২০২৫ সালের জুনে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি নেমে আসে মাত্র ৬.৪৯ শতাংশে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম।
জিইডির মতে, উচ্চ সুদহার, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং সরকারের ঋণ নির্ভরতা—এসব কারণে বেসরকারি বিনিয়োগ চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা, বেসরকারি ঋণ, রাজস্ব আহরণ ও উন্নয়ন ব্যয়ে গতি না ফিরলে মধ্য মেয়াদে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঝুঁকিতে পড়তে পারে।