
স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের ভবন হবে নতুন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন
অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ইতোমধ্যেই এই নির্বাচন আয়োজনের সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়েছে। ওই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে যারা সরকার গঠন করবে, সেই সরকারের যিনি প্রধান হবেন অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী হবেন, তার জন্য নতুন বাসভবন ঠিক করা হয়েছে। জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার ভেতরে হচ্ছে দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন।
সূত্র জানায়, জাতীয় সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বাসভবনকে একীভূত করে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে রূপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। পাশাপাশি অবস্থিত এই দুটি ভবনের মধ্যে যাতায়াতের জন্য দুই স্তরবিশিষ্ট একটি করিডর নির্মাণ করা হবে।
সর্বশেষ আওয়ামী লীগের শাসনামলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ছিল গণভবন। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে।ওই দিনই বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা গণভবনে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর করেন।এর এক মাস পর গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে গণভবনকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ করার সিদ্ধান্ত হয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী- পিলখানা হত্যাকাণ্ড, গুম-খুন-আয়নাঘর, শাপলা ম্যাসাকার, ভোট ডাকাতিসহ শেখ হাসিনার ১৬ বছরের দুঃশাসনের সব গল্পই ঐতিহাসিক তথ্য আকারে জুলাই স্মৃতি জাদুঘরে উপস্থাপন করা হবে। এই জাদুঘর উদ্বোধন করা হতে পারে আগামী নভেম্বরে।
সরকার-সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের জন্য বাসভবনের জায়গা ঠিক করতে গত ৭ জুলাই উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি করেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। এই কমিটি শুরুতে বলছিল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা এবং হেয়ার রোডের ২৪ ও ২৫ নম্বর বাংলো বাড়িকে সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের জন্য বিবেচনা করা যেতে পারে। পরে জাতীয় সংসদ ভবন চত্বরে অবস্থিত স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বাসভবনকে একীভূত করে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়।
এরপর গত রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) এ সংক্রান্ত উচ্চপর্যায়ের একটি সরকারি প্রতিনিধিদল ভবন দুটি পরিদর্শন করে। প্রতিনিধিদলে ছিলেন- গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব নজরুল ইসলাম, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব কানিজ মওলা, প্রধান উপদেষ্টার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল ফেরদৌস হাসান, স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুব উস সামাদসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। গতকালও (২৩ সেপ্টেম্বর) সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ভবন দুটি ও আশপাশ পরিদর্শন করেন।
স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের জন্য নির্ধারিত দুটি বাসভবন জাতীয় সংসদ ভবনের পশ্চিম পাশে (আসাদ গেটের দিকে) পাশাপাশি অবস্থিত। দুটি ভবনই দোতলা ও একই আদলে তৈরি। ভবন দুটির চারদিকে সীমানাপ্রাচীর দিয়ে ঘেরা। সামনে খোলা জায়গা ও বাগান রয়েছে। উৎস: যুগান্তর।