
আবারও ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রিজার্ভ
দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে আবারও ৩১ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। একই সময়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবায়ন পদ্ধতি বা বিপিএম৬ অনুসারে নিট রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৬.০৮ বিলিয়ন বা দুই হাজার ৬০৮ কোটি ৭৪ লাখ ৬০ হাজার ডলার।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আরিফ হোসেন।
এর আগে গত ৪ সেপ্টেম্বর এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দায় পরিশোধের পর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩০ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। একই সময়ে নিট রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৫ দশমিক ৪০ বিলিয়ন (বিপিএম৬) ডলার।
রেমিট্যান্স প্রবাহে উল্লম্ফন, রপ্তানি আয়ে ইতিবাচক প্রবণতা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ঋণ সহায়তার কারণে জুন শেষে গ্রস রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়ায় ৩১.৭২ বিলিয়ন ডলারে। গত ২৮ মাসের মধ্যে যা ছিল সর্বোচ্চ। সে সময় বিপিএম৬ অনুযায়ী রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়ায় ২৬ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার।
রিজার্ভ বৃদ্ধিতে আরও ভূমিকা রেখেছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে ডলারের চাহিদা কমে যাওয়া। একদিকে আমদানি ব্যয় হ্রাস ও বর্তমান সরকারের অর্থপাচার বিরোধী শক্ত অবস্থানে পাচারকারীরা মিডিয়া ট্রায়ালের মুখোমুখি হচ্ছে; সামাজিকভাবে হেয় হচ্ছে। এতে টাকা পাচারে সতর্ক হয়েছে। পাচার করলে যেদিনই হোক বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। এর ফলে ডলারের চাহিদা কমেছে। একান্ত দরকার না হলে বাড়তি টাকা দিয়ে কেউ ডলার কিনছে না। এ ডলার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক সময় সময় কিনছে। এতে একদিকে ডলার বাজার স্থিতিশীল থাকছে, অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে নতুন ডলার যোগ হচ্ছে।
এ সময়ে আইএমএফ, এডিবি, জাইকাসহ বিভিন্ন সংস্থা থেকে বৈদেশিক ঋণও ছাড় হয়।
২০২১ সালের আগস্টে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। করোনা মহামারির কারণে প্রবাসীরা বেশি বেশি প্রবাসী আয় পাঠানোর পাশাপাশি অনেকে দেশে ফিরে আসেন। একই সময়ে আমদানি কমে যায়। যে কারণে সে সময় রিজার্ভ বাড়ে। পরবর্তীতে ধারাবাহিক পতনে ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে রিজার্ভ নেমে যায় ২০ বিলিয়ন ডলারে।
এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন (আকু), একটি আঞ্চলিক বাণিজ্যের লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। যেখানে সদস্য দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো একে অপরের মধ্যে বাণিজ্যের লেনদেন নিষ্পত্তি করে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে সদস্য দেশগুলো দুই মাস পরপর তাদের আমদানি-রপ্তানির হিসাব সমন্বয় করে। আকুর সদস্যভুক্ত দেশগুলোতে বাংলাদেশের রপ্তানির চেয়ে আমদানি বেশি হওয়ার কারণে প্রতি দুই মাস অন্তর দেড় থেকে দুই বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হয়।
আকুর সদস্য দেশগুলো হলো, বাংলাদেশ, ভুটান, ইরান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং মিয়ানমার। আকুর প্রধান কার্যালয় ইরানের রাজধানীর তেহরানে।