
প্রয়োজনে ফ্যাশনে ছাতা
গ্রীষ্মকালের তীব্র রোদ আর প্রখর তাপদাহে পথ চলা হয়ে ওঠে কষ্টকর। এই সময় শরীর যেমন ক্লান্ত হয়ে পড়ে, তেমনই ত্বকও হয় ক্ষতিগ্রস্ত।
এদিকে বর্ষাকালে হঠাৎ বৃষ্টি ভিজিয়ে দেয় পুরো শরীর, নষ্ট হয় ব্যাগের ভেতরের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। এমন পরিস্থিতিতে ছাতা হতে পারে আপনার সবচেয়ে সহজ, কার্যকর এবং সাশ্রয়ী বন্ধু। এটি কেবল রোদ থেকে রক্ষা করে না, বরং বৃষ্টির হাত থেকেও সুরক্ষা দেয় এবং স্টাইল স্টেটমেন্ট হিসেবেও কাজ করতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক গরম ও বর্ষায় কেমন ছাতা ব্যবহার করবেন।
কেন ছাতা ব্যবহার করা জরুরি
অতিবেগুনি রশ্মি থেকে সুরক্ষা
গ্রীষ্ম হোক বা বর্ষা রোদের মধ্যে হাঁটলে সরাসরি সূর্যের আলোর সংস্পর্শে ত্বকে পড়ে ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি। এটি ত্বক পুড়ে যাওয়া, ডার্ক স্পট, প্রিম্যাচিউর এজিং–এমনকি স্কিন ক্যান্সারের আশঙ্কা তৈরি করে। ছাতা ব্যবহারে এই ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ভালো স্তরের সুরক্ষা পাওয়া যায়।
তাপমাত্রা থেকে রক্ষা
ছাতা রোদের সরাসরি তাপ শরীরে পড়তে দেয় না, ফলে শরীর অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা থাকে। বিশেষ করে বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। এ সময় ছাতা ব্যবহার খুবই জরুরি।
হঠাৎ বৃষ্টিতে রক্ষা
বর্ষাকালে প্রায়ই হঠাৎ বৃষ্টি হয়, বিশেষ করে কর্মক্ষেত্র বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের সময় এই বৃষ্টি খুবই বিপাকে ফেলে। ছাতা থাকলে ভিজে যাওয়ার ঝুঁকি কমে, প্রয়োজনীয় জিনিস, যেমন: মোবাইল বা অন্য কোনো গ্যাজেট বা কাগজপত্র নিরাপদ থাকে।
চুল ও চোখের সুরক্ষা
ছাতা চোখে সরাসরি রোদ পড়া আটকায়, যা চোখের সমস্যা কমায়। চুলও রোদের তাপ, ধুলাবালু ও বৃষ্টির পানির ক্ষতি থেকে রক্ষা পায়।
ছাতা বাছাইয়ের সময় যা খেয়াল রাখবেন–
অতিবেগুনি রশ্মি ও ওয়াটারপ্রুফ কোটেড ছাতা বেছে নিন।
গ্রীষ্মের জন্য অতিবেগুনি রশ্মি কোটেড এবং বর্ষার জন্য ওয়াটারপ্রুফ বা ডাবল কোটেড ছাতা সবচেয়ে ভালো। এখন অনেক ছাতায় এই দুই সুবিধাই একসঙ্গে থাকে।
হালকা, বহনযোগ্য ছাতা
গরমে প্রতিদিনের সঙ্গী হিসেবে ছাতা হালকা হওয়া জরুরি। এমন ছাতা কিনুন, যা সহজে ব্যাগে ভাঁজ করে রাখা যায়। বর্ষার জন্যও হালকা ও ভাঁজ করা ছাতা কার্যকর, কারণ হঠাৎ বৃষ্টির সময় দ্রুত খোলা যায়।
ছাতার রং
গাঢ় রং গরম শোষণ করে বেশি, তাই গ্রীষ্মে হালকা বা উজ্জ্বল রঙের ছাতা যেমন সাদা, হালকা নীল, প্যাস্টেল রং ইত্যাদি বেশি কার্যকর। বর্ষায় গাঢ় বা প্রিন্টেড ছাতা ব্যবহার করতে পারেন, কারণ এতে ময়লা কম দেখা যায়।
বাতাস চলাচলের সুবিধা
অনেক ছাতায় এমন নকশা থাকে যাতে সহজেই বাতাস চলাচল করতে পারে। বিশেষ করে গরমে এ ধরনের ছাতা বেছে নিতে পারেন।
কাপড়ের ধরন ও বুনন
একটি ছাতা কতটা অতিবেগুনি রশ্মি প্রতিরোধ ও পানি আটকাতে পারবে তা মূলত নির্ভর করে এর কাপড়ের ওপর। ঘনভাবে বোনা পলিয়েস্টার বা নাইলনের মতো কাপড় এই রশ্মি আটকাতে কার্যকর এবং পানিতেও টেকসই।
ছাতা ফ্যাশনের অংশ
আজকাল ছাতা শুধু ব্যবহারিক উপকরণ নয়, বরং ফ্যাশনের অংশ হয়ে উঠেছে। বাজারে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন নকশার ছাতা। আপনি চাইলে নিজের পছন্দমতো ছাতা বেছে নিয়ে স্টাইল ও সুরক্ষা একসঙ্গে উপভোগ করতে পারেন।
ফ্লোরাল প্রিন্ট ছাতা
এই ধরনের ছাতা সাধারণত রঙিন ও বড় ফুলের ছাপে তৈরি হয়। হালকা সুতি বা নাইলনের কাপড়ে তৈরি এই ছাতা গ্রীষ্মে চমৎকার দেখায় এবং মেয়েদের মধ্যে বিশেষভাবে জনপ্রিয়।
ডটেড ও প্যাটার্ন ছাতা
ছোট ছোট গোল বা জ্যামিতিক ডিজাইন করা এই ছাতা যারা ক্ল্যাসিক লুক পছন্দ করেন, তারা বেছে নিতে পারেন।
লেইস বা কারুকাজ করা ছাতা
পাতলা কাপড়ের ওপর সূক্ষ্ম লেইসের কাজ ছাতাটিকে ফ্যাশনের অংশে পরিণত করে, যদিও খুব কড়া রোদ বা অতিরিক্ত বৃষ্টি থেকে এটি কম সুরক্ষা দেয়। তবে হালকা রোদে বা হালকা বৃষ্টিতে ফ্যাশনের অংশ হিসেবে এটি ব্যবহার করতে পারেন।
ট্রান্সপারেন্ট ছাতা
আধুনিক লুকের এই ছাতা এখন ট্রেন্ডিং। সাধারণত পিভিসি বা জলরোধী স্বচ্ছ প্লাস্টিকে তৈরি, যা রোদে ও বৃষ্টিতে দুটোতেই ব্যবহারযোগ্য এবং খুবই স্টাইলিশ।
সূত্র: কোয়ালিটিইমপ্রিন্ট ডট কম