বাংলাদেশে গুম-খুনের আসল কারিগর সে: ফারুকী
বিনোদন ডেস্ক।। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শুরু থেকেই ছাত্রদের সঙ্গে ছিলেন বরেণ্য নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। ছাত্রদের দেওয়া এক দফা দাবি- সরকার পদত্যাগের সঙ্গে সংহতি জানিয়েছিলেন তিনিও।
এদিকে, গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর প্রকাশ্যে আসার পরই দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও বাড়িতে আগুন দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। হত্যা করা হয় অনেকেই। পুরো দেশ যেন পরিণত হয়েছিল যুদ্ধক্ষেত্রে। এমন অবস্থায় আবারো সরব মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। ঠিক এ সময় সেনাবাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে করে সন্ত্রাস থামানোর আর্জি জানালেন এই নির্মাতা।
বিনীত নিবেদন করে ফারুকীর বলেন, ‘প্রিয় সেনাপ্রধান, আপনার বাহিনীর প্রথম কাজ ল অ্যান্ড অর্ডার ইমপ্রুভ করা। আর আমাদের সবার কাজ এখানে সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করা। আমরা জানি শেখ হাসিনা সরকার পুলিশ বাহিনীকে এত বাজে ভাবে ব্যবহার করেছে যে বাহিনীটা মানুষের আস্থার সংকটে আছে। যার খেসারত দিতে হচ্ছে এই বিশৃংখলা দিয়ে। কিন্তু সেনাবাহিনীকে এই জায়গায় বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে। আমি এটাও বুঝি ক্ষোভ থেকে মানুষ অনেক কিছু করছে। কিন্তু সময় এসেছে এটা থামানোর।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রত্যেক জেলায় জেলায় সংখ্যালঘুদের বাড়ি, ধর্মীয় উপাসনালয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিলে মিশে আপনারা সবাই পরম মমতায় আগলে রাখেন। সারাদেশ জুড়ে ছাত্র আন্দোলনের সময় হিন্দু-মুসলিম কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ছিলাম আমরা। এখন কারা এই অপকর্ম করছে? এখন বহু পক্ষ গুটি চালাচালি করতে পারে। বহু এজেন্সি সক্রিয়। এই সময় আমাদের দায়িত্ব সতর্ক থাকা দরকার যাতে কেউ আমাদের বিজয়কে বিষাদে পরিণত করতে না পারে। ছাত্র-ছাত্রী ভাই-বোনেরা এবং বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল, দল ভাগ করে করে পাহারা দিলেই কেউ সুযোগ নিতে পারবে না। মনে রাখতে হবে বাইরের দুনিয়ায় আমাদের ইমেজ যেন খারাপ না হয়।’
এই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের জাতীয় বীর ঘোষণা করার দাবি জানিয়ে ফারুকী লিখেছেন, ‘আমাদের যে ভাই-বোনেরা শহীদ হয়েছে তাদের জাতীয় বীর ঘোষণা করে রাষ্ট্রীয় সুবিধা প্রদান করতে হবে। বিজয়ের এই ক্ষণে আমার কেবল তাদের কথাই মনে হচ্ছে। যদিও তারা কিছু পাওয়ার জন্য প্রাণ দেয়নি। কিন্তু এটা আমাদের দায়িত্ব।’
দীর্ঘ পোস্টে তিনি আরও লিখেছেন, ‘এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দানকারী অকুতোভয় বীর তরুণদের অন্তর্বর্তী সরকার গঠন বিষয়ক আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করেন প্লিজ।’
যারা লুটপাট করছে তাদের বিচারের আওতায় আনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ইনটেরিম সরকারের প্রধান কাজ পুলিশ, জুডিসিয়ারি, সিভিল প্রশাসন, আর্থিক খাত রিফর্ম। এছাড়া ব্যাংক লুটপাটের মূল নায়কদের বিচারের আওতায় আনা। এই কাজে অভিজ্ঞদের ইনটেরিম সরকারে অন্তর্ভুক্ত করেন মেহেরবানি করে।’
সবশেষে ফারুকী লিখেছেন, ‘কুখ্যাত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে অবিলম্বে তার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে গ্রেপ্তার করতে হবে। বাংলাদেশে গুম-খুনের আসল কারিগর সে শুধু তা না, ফোন ট্যাপিংয়ের নামে মানুষের প্রাইভেসি ধ্বংস করেছে সে। এবং প্রাউডলি সেই সব রেকর্ডিং এই পারভার্ট লোকটা মিডিয়াতে সরবরাহ করত এবং আমাদের স্পাইনলেস মিডিয়া সেগুলো প্রচার করত। এই লোককে এখনই নিউট্রালাইজ করতে হবে। এছাড়া ডিবি’র হারুনসহ কুখ্যাত যারা আছে তাদের সরিয়ে দিয়ে পুলিশ বাহিনীর উপর মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু করতে হবে এখনই।’