
‘মার্চ টু ঢাকা’র পরিকল্পনা জানালেন সমন্বয়ক সারজিস আলম
নিউজ ডেস্ক।। সরকারের পদত্যাগ দাবিতে ‘মার্চ টু ঢাকা’কর্মসূচি একদিন এগিয়ে আজ সোমবার পালন করার ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ গতকাল বিকালে এক বিবৃতিতে বলেন, পরিস্থিতি পর্যালোচনায় এক জরুরি সিদ্ধান্তে আমাদের ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ৬ আগস্টের পরিবর্তে ৫ আগস্ট করা হলো। আগামীকালই সারাদেশের ছাত্র-জনতাকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করার আহ্বান জানাচ্ছি।
সেই কর্মসূচি বাস্তবায়নে কিভাবে ঘোষিত পয়েন্টগুলোতে ঢাকার আন্দোলনকারী ও লংমার্চ করে ঢাকায় আসা জনতা অবস্থান নিবে সে বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম।
আজ সোমবার মধ্যরাতে ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি জানান, ‘ঘোষিত পয়েন্টগুলোতে ঢাকার আন্দোলনকারী ও লংমার্চ করে ঢাকায় আসা জনতা অবস্থান নিবে সকাল ১১ টা থেকে।’
সারজিস আরও বলেন, ‘শহীদ মিনারে ১১টা থেকে সবাই জড়ো হবেন। শহীদ মিনার থেকে মিছিল নিয়ে আমরা শাহবাগে যাবে, কেন্দ্রীয় সমাবেশ শাহবাগে হবে। পরিস্থিতি বিবেচনায় চূড়ান্ত ঘোষণা দেয়া হবে শাহবাগ থেকে। পয়েন্টগুলোতেও সে সংবাদ পৌঁছে দেওয়া হবে। আমরা সুসংগঠিতভাবে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবো।
তিনি বলেন, কোন ঘোষণা না আসা পর্যন্ত বিচ্ছিন্নভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। ধৈর্য্য এবং শক্তির মেলবন্ধনই বিজয় নিশ্চিত করবে।
এর আগে দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, শহীদদের স্মরণে সোমবার সারাদেশে নিহতের স্থানগুলোতে শহীদ স্মৃতিফলক উন্মোচন করা হবে। ঢাকায় বেলা ১১টায় শাহবাগে শ্রমিক সমাবেশ এবং বিকাল ৫টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নারী সমাবেশ হবে। পাশাপাশি সারাদেশে বিক্ষোভ ও গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। মঙ্গলবার (কাল) ‘ছাড়তে হবে ক্ষমতা, ঢাকায় আসো জনতা’ স্লোগানে সারাদেশের ছাত্র, নাগরিক ও শ্রমিকদের ঢাকায় আসার আহ্বান জানিয়ে ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন নাহিদ। সেদিন দুপুর ২টায় আন্দোলনকারীদের শাহবাগে জমায়েত হওয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, সব এলাকায়, পাড়ায়, গ্রামে, উপজেলায়, জেলায় ছাত্রদের নেতৃত্বে সংগ্রাম কমিটি গঠন করুন। যদি ইন্টারনেট ক্র্যাকডাউন হয়; আমাদের গুম, গ্রেপ্তার, খুনও করা হয়; যদি ঘোষণা করার কেউ না-ও থাকে, এক দফা দাবিতে সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত সবাই রাজপথ দখলে রাখবেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন।
কর্মসূচি এগিয়ে আনার কারণ ব্যাখ্যা করে গতকাল আসিফ মাহমুদের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, আজ অর্ধশতাধিক ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছে খুনি হাসিনা। চূড়ান্ত জবাব দেওয়ার সময় এসে গেছে। বিশেষ করে আশপাশের জেলাগুলো থেকে সবাই ঢাকায় আসবেন এবং যারা পারবেন আজই ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়ে যান। ঢাকায় এসে মুক্তিকামী ছাত্র-জনতা রাজপথগুলোতে অবস্থান নিন। চূড়ান্ত লড়াই, এই ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থানের চূড়ান্ত স্বাক্ষর রাখার সময় এসে গেছে। ইতিহাসের অংশ হতে ঢাকায় আসুন সবাই। যে যেভাবে পারেন, কালকের মধ্যে ঢাকায় চলে আসুন। ছাত্র-জনতা মিলে এক নতুন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটাব।
এর আগে সাংবাদিকদের পেশাগত কাজে সহযোগিতা করার নির্দেশনা দিয়ে এক বিবৃতিতে আসিফ মাহমুদ বলেন, আমাদের আন্দোলনের খবর দেশবাসী এবং বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে দিতে কাজ করছেন সাংবাদিকরা। পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিকদের সহযোগিতা করুন; সংঘর্ষ, সংঘাতের সময় তাদের রক্ষা করুন। আমাদের এ লড়াইয়ে তারাও গুরুত্বপূর্ণ অংশ। উৎস: দৈনিক আমাদের সময়।