‘আমার মেয়ের মুখের দিকে তাকাতে পারি না, ওকে আমি কি জবাব দেবো’
নিউজ ডেস্ক।। কোটা আন্দোলন চলাকালীন ১৯ জুলাই ঢাকার বাড্ডা এলাকায় জুমার নামাজ শেষে বাসার দিকে যাচ্ছিলেন রায়হান। তখন ওই সড়কে আন্দোলনকারী ও পুলিশের সংঘর্ষ চলছিল। এসব এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও পুলিশের ছোড়া গুলি ডান চোখের নিচে লেগে পিছন দিয়ে বের হয়ে যায়। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার সুযোগ ছিল না। ঘটনাস্থলে মারা যান।
এদিকে, প্রিয় স্বামীকে হারিয়ে শোকে কাতর রায়হানের স্ত্রী রিফাত জাহান রিতু। মেয়ের মুখে দিকে তাকাতেই কান্না শুরু করেন। রিতু আরও বলেন, আমার শ্বশুর-শাশুড়ির আর কেউ নেই। একটি ছেলে ছিল। তাকে নিয়ে তাদের সব আশা, সব স্বপ্ন ছিল। কিছুই থাকল না। আমার মেয়ের মুখের দিকে তাকাতে পারি না। ওকে আমি কি জবাব দেবো। এ ঘটনার বিচার চাই। বিনা অপরাধে আমার স্বামীকে যারা মেরেছে তাদের বিচার চাই সরকারের কাছে।
চার মাসের মেয়ে রাফনাজ বিনতে রায়হান রাওয়াকে কোলে নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো তিনি আরও বলেন, মায়ের কোলে থাকা ছোট্ট রাওজাও জানে না তার বাবা ডাক হারিয়ে গেছে চিরতরে। বাবার আদর কখনোই সে আর পাবে না। আমার ছোট্ট মেয়েটির কি দোষ। কেন তার বাবাকে কেড়ে নেয়া হলো। ওতো বাবার আদর পেলো না। বাবা ডাক চিরতরে বন্ধ হয়ে গেল।
স্থানীয়রা জানান, রায়হানের বাবা গরুহাটিতে চালান লেখার কাজ করেন। পাশাপাশি ছোট্ট ব্যবসা আছে। সংসারে আর্থিক অনটন থাকলেও ছেলের পড়ালেখার ব্যাঘাত ঘটাননি। উলিপুর থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকা কলেজে যান। সেখানে অনার্স মাস্টার্স শেষ করে একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি নেন। দু’মাস আগে শাখা ম্যানেজার পদে প্রমোশন হয়েছে তার। এরমধ্যে ফুটফুটে মেয়ে সন্তান এসেছে ঘরে। সব মিলে বাড্ডায় নতুন বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন। আগস্টের শুরুতে পরিবার নিয়ে নতুন বাসায় ওঠার কথা ছিল তাদের। কিন্তু তা আর হয়নি। উৎস: আরটিভি অনলাইন।