363619

ব্রাজিলকে কাঁদিয়ে সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়া

ক্রীড়া প্রতিবেদক।। কাতার বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলকে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে হারিয়েছে ক্রোয়েশিয়া। সেলেসাওদের কাঁদিয়ে আসরটির সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল ক্রোয়েটরা। এদিন ম্যাচের নির্ধারিত ৯০ মিনিট গোলশূন্য থাকে।

তবে অতিরিক্ত সময়ে নেইমারের রেকর্ড গোলে লিড নেয় ব্রাজিল। জয়ের পথেই ছিল তিতের শিষ্যরা। তবে ১১৬ মিনিটে ব্রুনো পেতকোভিচের গোলে ১-১ ব্যবধানে সমতায় ফিরলে আশা বাঁচে ক্রোয়িশিয়ার। একেই বলে ঘুরে দাঁড়ানো। পরে টাইব্রেকারে জয়ের আনন্দ করে গত বিশ্বকাপের রানার্সআপরা।

টাইব্রেকারে ক্রোয়েশিয়ার প্রথম ৪ শটে গোল করেন যথাক্রমে নিকোলা ভ্লাসিচ, লোভরো মাজের, লুকা মদ্রিচ ও মিসলাভ ওরসিচ। তবে ব্রাজিলের প্রথম শটটি করা রদ্রিগোকে রুখে দেন ক্রোয়েট গোলরক্ষক লিভাকোভিচ। কাসিমিরো ও পেদ্রো পরের দুটি শটে গোল করলেও চতুর্থ শটে মারকুইনোসর বল গিয়ে পোস্টে বাধা পড়ে। এরই সঙ্গে উল্লাসে মাসে ক্রোয়েশিয়া।

শুক্রবার এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে খেলতে নামে দুদল। রাত ৯টায় ম্যাচটি শুরু হয়।

প্রথমার্ধে বলের পজিশন দুদলের প্রায় সমান ছিল। তবে আক্রমণে ব্রাজিলই এগিয়ে ছিল। সেলেসাওরা ৫টি শট করে, যার ৩টি ছিল গোলমুখে। অন্যদিকে ক্রোয়েটরা ৩টি শট করলেও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি কোনো বল।

ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে ব্রাজিল সুযোগ পায়। তবে ভিনিসিয়াস জুনিয়রের শট সহজেই রুখে দেন ক্রোয়াট গোলরক্ষক দমিনিক লিভাকভিচ। ১৩তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত ক্রোয়েশিয়া। বল পায়ে নিজেদের অর্ধ থেকে প্রায় ডি-বক্স পর্যন্ত চলে যান ইয়োসিপ ইউরানোভিচ। তার বল পেয়ে ক্রস করেন মারিও পাসালিচ। বক্সে ইউরারোভিচের ডামির পর দারুণ জায়গায় বল পেয়ে যান ইভান পেরিসিচ। কিন্তু এদের মিলিতাওয়ের চাপের মুখে তিনি শট রাখতে পারেননি লক্ষ্যে। এ যাত্রায় ব্রাজিল বেঁচে যায়।

খেলার ২০তম মিনিটে পেনাল্টি স্পটের কাছে ভিনিসিউসের শট ব্লক করেন বোর্না সোসা। কয়েক সেকেন্ড পর গোলরক্ষক বরাবর দুর্বল শট নেন নেইমার।

৪২তম মিনিটে বিপজ্জনক জায়গায় ফ্রি কিক পায় ব্রাজিল। নেইমার গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে হতাশ করেন।

দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার বাড়ায় ব্রাজিল। তবে প্রচুর সুযোগ পেয়েও গোল বঞ্চিত হয় দলটি। প্রায় পুরোটা সময় খেলা হলো ক্রোয়েশিয়ার অর্ধে। আক্রমণের ঝাপটায় একের পর এক সুযোগ তৈরি করল ব্রাজিল। কিন্তু গোলমুখে ব্যর্থ হলেন নেইমার-রিচার্লিসন-ভিনিসিয়াসরা।

বিরতির ঠিক পরেই দারুণ একটি সুযোগ পায় ব্রাজিল। তবে পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে নেইমারের শট ঠেকান ইয়োস্কো গাভারদিওল।

খেলার ৫৫তম মিনিটে আবার সুযোগ পান নেইমার। এবার রিচার্লিসনের কাছ থেকে বল পেয়ে বাঁ পায়ের শট নেন পিএসজি ফরোয়ার্ড। তবে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে কাছের পোস্টে তৎপর লিভাকভিচ ফেরান সহজেই।

লুকাস পাকুয়েতার অবিশ্বাস্য ভুলে ৬৬তম মিনিটে গোল পায়নি ব্রাজিল। ডি-বক্সে আলগা পেয়ে যান এই মিডফিল্ডার। সামনে ছিলেন কেবল গোলরক্ষক, কিন্তু তাকে পার করতে পারেননি। ১০ মিনিট পর এগিয়ে গিয়ে নেইমারের শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান গোলরক্ষক। এরপর ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধেও শুরুটা আক্রমণাত্মক করে ব্রাজিল। একের পর এক শট করে যায় তারা। অবশেষে এই অর্ধের যোগ করা প্রথম মিনিটে ডেডলক ভাঙেন নেইমার। পাকুয়েতার সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান পাসে গোলমুখে এগিয়ে যান নেইমার। পরে ক্রোয়েট গোলরক্ষক লিভাকোভিচ এগিয়ে এলে দুরূহ কোন থেকে দারুণ শটে গোলটি করেন নেইমার।

এই গোলে ব্রাজিলের হয়ে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডে কিংবদন্তি পেলেকে ছুঁলেন নেইমার। ১২৪ ম্যাচে ৭৭ গোল করলেন সময়ের সেরা এই তারকা। আর পেলে ৯২ ম্যাচে সমান সংখ্যাক গোল করেছিলেন।

তবে ১১৬তম মিনিটে ব্রুনো পেতকোভিচের অসাধারণ গোলে সমতায় ফিরে ম্যাচ বাঁচিয়ে রাখে ক্রোয়েশিয়া। ওরসিচের কাছ থেকে বল পেয়ে লম্বা শটে আলিসনকে পরাস্থ করেন পেতকোভিচ। এরপরই ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।

 

ad

পাঠকের মতামত