361927

ইভ্যালির সিইও ও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা করতে মধ্যরাতে থানায়

দেশের আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে থানায় গেছেন ভুক্তভোগী কয়েকজন গ্রাহক। আজ বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে গুলশান থানায় মামলা করতে যান তারা।

ভুক্তভোগীদের একজনের নাম আরিফ বাকের। রাত ১টায় দৈনিক আমাদের সময় অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘আমি মামলা দায়ের করতে গুলশান থানায় এসেছি। একটি অভিযোগ লিখিত নিয়ে এসেছি। আমি ছাড়া আরও দুজন ভুক্তভোগী এসেছেন থানায়। তারাও মামলা দায়ের করবেন।’

এ বিষয়ে গুলশান থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) হাফিজুর রহমান বলেন, ‘দুইজন এসেছিলেন মামলা করতে। তবে তারা এখনো কোনো অভিযোগ জমা দেননি থানায়।’

এর আগে ইভ্যালিসহ ১০ কোম্পানি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ভোক্তা অধিকার আইন ও দণ্ডবিধি আইন লঙ্ঘন করেছে বলে জানান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাফিজুর রহমান। গত মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জ, ধামাকাসহ কয়েকটি সমস্যা নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। তারা আইন অমান্য করেছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হবে। এর আগেও ইভ্যালির বিষয়ে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছি। তারা এ বিষয়ে কাজ করছে বলে জানতে পেরেছি।’

তিনি জানান, এই মুহূর্তে তারা কেবল ইভ্যালির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন পাওয়ার পর বাকি ৯টি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের বিরুদ্ধেও একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওই দিন সংবাদ সম্মেলনে হাফিজুর রহমান বলেন, জনগণকে প্রটেকশন দেওয়ার কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছি না। তবে সরকার চেষ্টা করবে গ্রাহকদের পাওনা বা পণ্য যেন বুঝে পায়। মার্চেন্টদের ক্ষেত্রেও তাই। তবে ইভ্যালি যদি টাকা পাচার করে থাকে বা সেই টাকা উদ্ধার করা না যায়, তা হলে হয়তো বিষয়টি কঠিন হবে। তবে গ্রাহকদের স্বার্থকেই আমরা অগ্রাধিকার দেব। অপরাধী যেন শাস্তি পায় সেটা বিবেচনায় আছে।

তৃতীয় পক্ষের অডিট ফার্মের মাধ্যমে ই-কমার্স কোম্পানিগুলোর আর্থিক দিক নিরীক্ষা করার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সুপারিশের কথা মনে করিয়ে হাফিজুর রহমান বলেন, ‘কোনো মন্ত্রণালয় এভাবে অডিট করতে পারে কিনা সেটা দেখব। এখানে কিছু আইনি ব্যাপার আছে। আমরা যদি পারি তবে অডিট করব।’

এর আগে ইভ্যালিসহ ১০ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে থার্ড পার্টি অডিটর নিয়োগ করে প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রকৃত আর্থিক অবস্থা জানতে আলাদা নিরীক্ষা করার সুপারিশ জানিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই চিঠিতে ইভ্যালি ছাড়াও অন্য ৯ প্রতিষ্ঠান হলো ধামাকা, ই-অরেঞ্জ, সিরাজগঞ্জ শপ, আলাদীনের প্রদীপ, কিউকম, বুমবুম, আদিয়ান মার্ট, নিউ ডটকম ডটবিডি ও আলেশা মার্ট।

এসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের আর্থিক চিত্র জানাতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে সম্প্রতি চিঠি দেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক তার জবাবে থার্ড পার্টি অডিটর নিয়োগের সুপারিশ জানায়।

ইভ্যালি ইস্যুতে দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ইভ্যালির কাছে গ্রাহক ও মার্চেন্টদের যে পরিমাণ অর্থ পাওনা রয়েছে, তা পরিশোধে যথেষ্ট নগদ অর্থ নেই প্রতিষ্ঠানটির হাতে। চলতি বছরের ১৫ জুলাই পর্যন্ত সময়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ইভ্যালি তার যে আর্থিক স্টেটমেন্ট জমা দিয়েছে, তাতে এ চিত্র উঠে এসেছে।

ইভ্যালি যে পরিমাণ সম্পদ থাকার কথা জানিয়েছে, তা গ্রাহক ও মার্চেন্টদের পাওনার তুলনায় অনেক কম। বড় প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ এনে সক্ষমতা বাড়িয়ে নিয়মিত ব্যবসায়িক কার্যক্রম দিয়ে গ্রাহক ও মার্চেন্টদের পাওনা পরিশোধের কথা বলা হয়। এর মধ্যে ইভ্যালিতে ১ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েও তা থেকে সরে আসে যমুনা গ্রুপ।

 

ad

পাঠকের মতামত