361510

ব্র্যান্ড ভ্যালু হিসাবে নিলে ইভ্যালির দেনা নেই, দায় বিবরণীতে রাসেল

নিউজ ডেস্ক।। কাস্টমার ও মার্চেন্টদের কাছে ই-কমার্স প্ল্যাটফরম ইভ্যালির প্রকৃত দেনার পরিমাণ ৫৪২ কোটি ৯৯ লাখ ৫৮ হাজার ৪৮২ টাকা। এ দেনার বিপরীতে তাদের দৃশ্যমান ও অদৃশ্য মোট সম্পদ রয়েছে ৫৪৩ কোটি ৯৯ লাখ ৫৮ হাজার ৪৮২ টাকা।

তবে এতে অদৃশ্য সম্পদ হিসেবে ৪২৩ কোটি টাকাই দেখানো হয়েছে ইভ্যালির ব্র্যান্ড ভ্যালু মূল্যায়নের মাধ্যমে। ব্র্যান্ড ভ্যালু হিসাবে নিলে ইভ্যালির কোনো দেনা নেই। চলতি বছর ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে চাওয়া কোম্পানির সম্পদ ও দায় বিবরণীর এমন তথ্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দিয়েছেন ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল। ইভ্যালির তরফ থেকে বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সম্পদ ও দায় বিবরণীসংক্রান্ত পত্রের অনুলিপি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত ১৫ জুলাই ২০২১ তারিখ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম, সরবরাহকারীদের কাছে দেনা, ব্যবসায়িক ব্যয়সংক্রান্ত দেনাসহ অন্যান্য সব দেনাবাবদ ইভ্যালির মোট চলতি দায়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৪২ কোটি ৯৯ লাখ ৫৮ হাজার ৪৮২ টাকা।

ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামিমা নাসরিন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল স্বাক্ষরিত প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক হিসাব বিবরণীপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, তাদের যে দায় দেখানো হয়েছে, তার বিপরীতে মোট ৪৩৮ কোটি ৪৫ লাখ ৪ হাজার ৮৪১ টাকা অদৃশ্য সম্পদের পরিমাণ দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে ব্র্যান্ড ভ্যালু দেখানো হয়েছে ৪২২ কোটি ৬২ লাখ ৮ হাজার ৬৯৫ টাকা এবং শুধু অদৃশ্য সম্পদ দেখানো হয় মোট ১৫ কোটি ৮২ লাখ ৯৬ হাজার ১৪৬ টাকা।

অন্যদিকে উল্লিখিত দেনার বিপরীতে ইভ্যালি দৃশ্যমান সম্পদের হিসাব দেখায় মোট ১০৫ কোটি ৫৪ লাখ ৫৩ হাজার ৬৪০ টাকা। যেখানে চলতি সম্পদমূল্য দেখানো হয়েছে ৯০ কোটি ৬৬ লাখ ৭৯ হাজার ৮৮৪ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদনে কোম্পানিটির চলতি সম্পদের মূল্য ৬৫.১৭ কোটি টাকা উল্লেখ করা হয়। অর্থাৎ চলতি সম্পদের মূল্য বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবের চেয়ে ২৫ কোটি ৪৯ লাখ ৭৯ হাজার ৮৮৪ কোটি টাকা বেশি বলে দাবি করেছে ইভ্যালি।

এ ছাড়া দৃশ্যমান সম্পদ বিবরণীতে সম্পত্তি এবং সরঞ্জামের মূল্য দেখানো হয় আরও ১৪ কোটি ৮৭ লাখ ৭৩ হাজার ৭৫৬ টাকা। এর বাইরে প্রতিষ্ঠানটির ইক্যুইটির দায় রয়েছে আরও ১ কোটি টাকা।

চিঠিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে উদ্দেশ করে বলা হয়, ‘বিগত ৩১ জুলাই, ২০২১ তারিখে আমাদের পাঠানো পত্রে মন্ত্রণালয়ের চাওয়া তথ্যাদি যথাযথভাবে উপস্থাপনের জন্য তৃতীয় নিরপেক্ষ নিরীক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে সময় চাওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও এই স্বল্পসময়ের মধ্যে প্রাথমিকভাবে প্রস্তুতকৃত সম্পদ ও দায়ের বিবরণী অনুযায়ী প্রাপ্ত তথ্য সংযুক্ত আকারে উপস্থাপন করা হলো।’

চিঠিতে রাসেল দাবি করেন, ‘বর্তমানে ইভ্যালিতে ই-কমার্স ছাড়াও আরও বেশ কিছু সফল ডিজিটাল প্ল্যাটফরম যথা- ইফুড, ইজবস, ইবাজার, ইহেলথ, ফ্লাইট এক্সপার্ট ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যা কোম্পানির সার্বিক ব্র্যান্ড ভ্যালুকে আরও সমৃদ্ধ করছে। আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী ও সাম্প্রতিক সময়ে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর একই ধরনের ব্যবসায়ের মূল্যায়নের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে ইভ্যালির ন্যূনতম ব্র্যান্ড ভ্যালু ৫ হাজার কোটি টাকা হয়। তবে আমাদের কোম্পানির ব্র্যান্ড ভ্যালু নির্ণয়ের ক্ষেত্রে আমরা শুধু ব্যয়ের সমপরিমাণ অংশটুকু বিবেচনা করেছি।’

চিঠিতে শুধু গত এক মাসে ২ লাখ ৭৪ হাজার ৮৫৮ কোটি পুরনো অর্ডার সফলভাবে ডেলিভারি সম্পন্ন করার তথ্য দেন রাসেল। তিনি বলেন, ‘এর বিস্তারিত তথ্য ইতোমধ্যে ইলেকট্রনিক কমার্স অব বাংলাদেশ ই-ক্যাবকেও পাঠানো হয়েছে।’

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, যেহেতু করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার কর্তৃক ঘোষিত লকডাউন ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে, তাই ইভ্যালি গ্রাহকদের পুরনো অর্ডার ডেলিভারি ও সরবরাহকারীদের দেনা পরিশোধের সুবিধার্থে আগামী ২২ আগস্ট থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সম্পূর্ণ আকারে চালু করে দেওয়া হচ্ছে ইভ্যালির অফিস। সম্পদ বিবরণীর ব্যাখায় রাসেল ব্র্যান্ড ভ্যালুর মূল্যায়নে পাশের দেশ ভারতের ফ্লিপকার্ট ও জোমেটোর সাম্প্রতিক ব্র্যান্ড ভ্যালু মূল্যায়নের সংবাদের চিত্রের কপিও মন্ত্রণালয়ে পাঠান।

 

ad

পাঠকের মতামত