361201

খরচ দ্বিগুণ হচ্ছে পবিত্র ওমরাহ পালনের 

নিউজ ডেস্ক।। টানা ১৭ মাস পর আগামী হিজরি নববর্ষ (১০ আগস্ট) থেকে দুই ডোজ টিকা গ্রহণকারী সারা বিশ্বের মুসলমানরা সৌদি আরবে পবিত্র ওমরাহ করতে যেতে পারবেন। খুলে দেওয়া হচ্ছে মসজিদুল হারামের সবগুলো প্রবেশ দ্বার।

সাজানো হচ্ছে নতুন আঙ্গিকে। করোনাকালে মসজিদে নববীর মাত্র চারটি গেট খোলা ছিল। বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) থেকে সব গেট উন্মুক্ত করা হয়েছে। মসজিদে নতুন কার্পেটও বিছানো হয়েছে।

সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ বিষয়ক উপমন্ত্রী ড. আব্দুল ফাত্তাহ্ সোলায়মান মাশাত সৌদি গেজেটকে জানান, ওমরাহর ক্ষেত্রে মুসল্লিদের সংখ্যার কোনো সীমাবদ্ধতা থাকবে না। তবে করোনার কারণে যাতায়াত, হোটেল ভাড়াসহ সবকিছুতে শর্ত পালন সাপেক্ষে ওমরাহ হজের ব্যয় বাড়বে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ।

এদিকে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি আলহাজ এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেছেন, আগে হোটেলের একটি কক্ষে কয়েকজন শেয়ার করে থাকতেন। এবার হয়তো এক রুমে দুই জনের বেশি থাকতে পারবেন না। আবার তারকা হোটেল ছাড়া হয়তো ওমরাহ যাত্রীদের রাখা যাবে না। সেক্ষেত্রে হোটেল খরচ বাড়বে। ভিসার আগে হোটেল ভাড়া সম্পূর্ণ পরিশোধ করে রিসিপ্ট দেখাতে হবে। আবার গাড়িতে অর্ধেক আসনের বেশি যাত্রী নেওয়া যাবে না। সে কারণে ওমরাহ যাত্রীদের যাতায়াত খরচও বাড়বে। এভাবে করোনা পরিস্থিতির কারণে সব খাতেই প্রায় দ্বিগুণের মতো ব্যয় করতে হবে।

হজ এজেন্সিগুলো বলছে, বিশ্বে করোনা মহামারি শুরু হওয়ার আগে প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় আড়াই লাখ বাংলাদেশি ওমরাহ হজে যেতেন। এয়ারলাইনস ও হোটেলের মান অনুযায়ী বিভিন্ন ধরণের প্যাকেজে বাংলাদেশিরা যেতেন। এজেন্সিভেদে সর্বনিম্ন প্যাকেজ ছিল ৮০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকার মধ্যে। এর মধ্যে এয়ারলাইনসের সর্বনিম্ন রিটার্ন ভাড়া ছিল ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা। এখন করোনা পরিস্থিতিতে বাড়বে ভাড়া।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী ১০ আগস্ট থেকে অনুমতি মিললেও বাংলাদেশিদের ওমরাহে যেতে কমপক্ষে আরও এক মাস অপেক্ষা করতে হবে। অনেক আনুষঙ্গিক কাজ এখনো বাকি। বেসরকারি হজ এজেন্সিগুলোর সঙ্গে সৌদি কর্তৃপক্ষের দ্বিপক্ষীয় চুক্তি হবে। এ ছাড়া সৌদির প্রাইভেট কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আমাদের প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলোর চুক্তি করতে হয়। সবকিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে অন্তত আগামী মাসের আগে বাংলাদেশিদের ওমরাহ হজে যাওয়ার সুযোগ নেই বলা যায়। তাছাড়া বাংলাদেশসহ সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে মানতে হবে বেশকিছু শর্ত। যার কিছু পূরণ করা খুব জটিল হবে। যেমন চীনের তৈরি কোনো কোম্পানির টিকা আগে নেওয়া থাকলে আবারও তাকে নতুন করে অন্য কোম্পানির টিকার পূর্ণ ডোজ নিতে হবে।

টিকার বাইরে অন্য শর্তাবলি হচ্ছে—ওমরাহ পালনের জন্য ১৮ বছর বা বেশি বয়সীরাই সুযোগ পাবেন। তবে যে দম্পতির তিন-চার বছরের শিশু রয়েছে তারা ইচ্ছে করলেও শিশুদের সঙ্গে নিতে পারবেন না। সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে দেশটির ৫৮টি বৈধ ওমরাহ কোম্পানির তালিকা প্রকাশ করেছে। উল্লেখিত ওমরাহ কোম্পানিগুলো ২৯০টি বাংলাদেশি ওমরাহ এজেন্সির সঙ্গে চুক্তি করে ওমরাযাত্রী নিতে পারবে।

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক বলেন, ১০ আগস্ট থেকে সৌদি সরকার ওমরাহ শুরু করেছে। ঐদিন থেকে আমাদের ওমরাহ যাত্রী পাঠানো সম্ভব নয়। বৈঠক করে অনেক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমি একা ওমরাহ চালুর সিদ্ধান্ত দিতে পারি না। লকডাউন শেষে ১১ তারিখের পর আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক ডেকে ওমরাহ চালুর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে।

প্রসঙ্গত যে, মহামারি করোনার কারণে ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে বিদেশিদের জন্য পবিত্র ওমরাহ পালন বন্ধ ঘোষণা করে সৌদি সরকার। গত দুই বছর ধরে বিশেষ শর্ত মেনে সীমিত পরিসরে হজ আয়োজন করে আসছে সৌদি সরকার। এমনকি বাইরের দেশ থেকে কাউকে হজের জন্য অনুমোদনও দেওয়া হয়নি। চলতি বছর ৬০ হাজার সৌদি নাগরিক ও দেশটিতে অবস্থানরত ১৫০ দেশের প্রবাসীদের হজের অনুমোদন দেওয়া হয়। উৎস: ইত্তেফাক।

 

ad

পাঠকের মতামত