360025

‘পরীমনি রাত ৩টা পর্যন্ত ক্লাবে কী করলেন’

বিনোদন ডেস্ক।। চিত্রনায়িকা পরীমনির রাত ৩টা পর্যন্ত ঢাকা বোট ক্লাবে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে আদালতে। এই প্রশ্ন করেছেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা।

পরীমনিকে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার মামলায় ব্যবসায়ী নাসিরউদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমিকে মঙ্গলবার জামিন দিয়েছেন ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহজাদী তাহমীদার আদালত।

এর আগে আজ দুপুরে নাসিরউদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকীকে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রিমান্ড শেষে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এরপরে তাদের আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন।

জামিন শুনানির সময় আইনজীবী ইমরুল কাউসার ও আমানুল করিম লিটন শুনানিতে বলেন, মাননীয় আদালত গত ৮ জুন রাতে সাভারের বেড়িবাঁধ এলাকায় অবস্থিত ঢাকা বোট ক্লাবে গিয়ে নিজেই মদ পান করে অপকর্ম করার চেষ্টা করেছেন মামলার বাদী পরীমনি।

নাসিরউদ্দিনের আইনজীবীরা শুনানিতে বলেন, ‘পরীমনি পূর্বপরিকল্পিতভাবে এ কাজ করেছেন। এ ঘটনার সঙ্গে আসামিরা জড়িত নন। ওই ক্লাবে রাত ৩টা পর্যন্ত পরীমনি কী করলেন সেই ব্যাখ্যা এজাহারে নেই। তিনি মদ খেয়েছেন সিসিটিভির ফুটেজে তা আছে। তার দাঁত ভেঙে গেছে, ঠোঁট ফেটে গেছে, পায়ে লেগেছে; সেই মানুষ কীভাবে মদ খান?’

আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আরও বলেন, ঘটনার চার দিন পরে এ মামলা করা হয়েছে। পরীমনি আগে মিডিয়ার বাড়তি সুবিধা নিয়ে মামলা করেছেন। পরে মিডিয়া সেই ভুল বুঝতে পেরেছে। আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদ বয়স্ক ও অসুস্থ মানুষ। তাকে দুই মামলায় ১২ দিন রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। নতুন তথ্য বের হয়নি। জামিন পেলে তিনি তো পালিয়ে যাবেন না। তাই যেকোনো শর্তে জামিন প্রার্থনা করছি।’

পরীমনিঅপরদিকে জামিনের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আনোয়ারুল কবীর বাবুল বলেন, মামলাটি দেশ-বিদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। রাষ্ট্রপক্ষ মামলা সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চায়। মামলার বিষয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

পরে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।

গত ১৪ জুন ধর্ষণ-হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন ও তার বন্ধু অমির নাম উল্লেখ করে আরও চারজনকে অজ্ঞাত আসামি করে পরীমনি সাভার থানায় মামলা করেন।

১৫ জুন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তার বন্ধু অমিসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় করা মাদক মামলায় সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ‘গত ৮ জুন রাত সাড়ে ১১টার দিকে তার বনানীর বাসা থেকে কস্টিউম ডিজাইনার জিমি (৩০), অমি (৪০) ও বনিসহ (২০) দু’টি গাড়িতে করে তারা উত্তরার উদ্দেশে রওনা হন। পথে অমি বলে বেড়িবাঁধের ঢাকা বোট ক্লাবে তার দুই মিনিটের কাজ আছে।’

‘অমির কথামতো তারা সবাই রাত আনুমানিক ১২টা ২০ মিনিটের দিকে ঢাকা বোট ক্লাবের সামনে গিয়ে গাড়ি দাঁড় করায়। কিন্তু বোট ক্লাব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অমি কোনো এক ব্যক্তির সঙ্গে ফোনে কথা বলে। তখন ঢাকা বোট ক্লাবের সিকিউরিটি গার্ডরা গেট খুলে দেয়। অমি ক্লাবের ভেতরে গিয়ে বলে এখানকার পরিবেশ অনেক সুন্দর, তোমরা নামলে নামতে পার।’

এজাহারে পরীমনি আরও বলেন, ‘তখন আমার ছোট বোন বনি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বোট ক্লাবে প্রবেশ করে ও বারের কাছের টয়লেট ব্যবহার করে। টয়লেট থেকে বের হতেই এক নম্বর বিবাদী নাসির উদ্দিন মাহমুদ আমাদের ডেকে বারের ভেতরে বসার অনুরোধ করেন এবং কফি খাওয়ার প্রস্তাব দেন। আমরা বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইলে অমিসহ এক নম্বর আসামি মদপানের জন্য জোর করেন। আমি মদপান করতে না চাইলে এক নম্বর আসামি জোর করে আমার মুখে মদের বোতল প্রবেশ করিয়ে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। এতে আমি সামনের দাঁতে ও ঠোঁটে আঘাত পাই।’

‘এক নম্বর আসামি (নাসির উদ্দিন মাহমুদ) আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং আমার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করেন ও আমাকে জোর করে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। তিনি উত্তেজিত হয়ে টেবিলে থাকা গ্লাস ও মদের বোতল ভাঙচুর করে আমার গায়ে ছুড়ে মারেন। তখন কস্টিউম ডিজাইনার জিমি নাসির উদ্দিন মাহমুদকে বাধা দিতে গেলে তাকেও মারধর করে জখম করেন।’

এর আগে গত ১৩ জুন রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাসে ধর্ষণ-হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তুলে বিচার চান পরীমনি। এরপর বিষয়টি নিয়ে রাতে সংবাদ সম্মেলন করেন।

 

ad

পাঠকের মতামত