359962

মগবাজারে বিস্ম্ফোরণ: এ কীসের শাস্তি হলো আমার-সুজনের প্রশ্ন

নিউজ ডেস্ক।। গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী থেকে ছোট ভাই রাব্বি (১৩) বেড়াতে এসেছিল ঢাকায় বোনের বাসায়। তাদের এক আত্মীয় মগবাজারে শর্মা হাউসে চাকরি করেন। সেই সুবাদে রোববার সন্ধ্যায় সেখানে যান রাব্বি, বোন জান্নাত এবং জান্নাতের এক বছরের মেয়ে সুবহানা। দোকানে প্রবেশের পরপরই সেখানে বিস্ম্ফোরণ ঘটে।

এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় শিশু সুবহানা। গুরুতর অবস্থায় জান্নাত ও রাব্বিকে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই মারা যান জান্নাত। রাব্বির অবস্থা সংকটাপন্ন। স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন মো. সুজন।

তিনি বলেন, কয়েক মাস হলো মেয়ে বাবা বলে ডাকতে শুরু করেছে। কর্মস্থল থেকে রাতে বাসায় ফিরে মেয়েকে নিয়ে সময় কাটাতাম। যতক্ষণ বাসায় থাকতাম মেয়ের সঙ্গে খুনসুটি করতাম। স্ত্রী-মেয়ে দু’জনই চলে গেল তাকে একা করে। এসব কথা বলতেই কেঁদে ওঠেন তিনি। তার বাসা মগবাজারে।

রমনা ফার্মেসিতে চাকরি করেন তিনি। কর্মস্থল থেকেই তিনি বিস্ম্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন। আগেই জানতেন শর্মা হাউসে স্ত্রী-মেয়ে ও শ্যালক যাবে। তিনি ছুটে আসেন ঘটনাস্থলে। দেখেন শর্মা হাউস লন্ডভন্ড।

খুঁজতে থাকেন স্ত্রী-সন্তান আর শ্যালককে। ছুটে যান পাশেই ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে মেয়ের লাশ দেখতে পান। লাশ রেখে ছোটেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে পান স্ত্রীর লাশ।

সুজন বলেন, আমার সব শেষ হয়ে গেল। কেউ থাকল না। এ কীসের শাস্তি হলো আমার। আমার তো বাঁচার কিছু রইল না। মেয়ে আমাকে বাবা বলে ডাকবে না কখনও।

সুজনের আত্মীয় রফিকুল ইসলাম জানান, গতকাল সোমবার ভোরে জান্নাত ও সুবহানার লাশ গ্রামের বাড়ি নেওয়া হয়। সেখানে কবরস্থানে মা ও মেয়ের লাশ দাফন করা হয়েছে।

শর্মা হাউসের মালিক এম এ রহমান আদর সমকালকে বলেন, শর্মা হাউসে পাঁচজন চাকরি করেন। এর মধ্যে দুজন ছুটিতে। ঘটনার সময় একজন বাইরে ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন দুই কর্মী মাহফুজুর রহমান এবং ওসমান গণি তুষার। বিস্ম্ফোরণে তুষার মারা গেছেন। মাহফুজুর আহত হয়েছেন। উৎস: সমকাল।

ad

পাঠকের মতামত