359263

পরকীয়ায় গোপন বিয়ে, অবশেষে প্রাণ গেল পরকীয়ায়

ডেস্ক রিপোর্ট।। কুষ্টিয়ায় প্রকাশ্য দিবালোকে এক নারী, তার শিশুসন্তান ও প্রেমিকসহ তিনজনকে গুলি করে হত্যা করেছে পুলিশের সহকারী এএসআই সৌমেন মিত্র।

সৌমেন মিত্র নিহত নারীর তৃতীয় স্বামী। রোববার বেলা ১১টার দিকে শহরের কাস্টমস মোড় এলাকায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

সৌমেন মিত্র নিহত নারী আসমাকে পরকীয়ার মাধ্যমে গোপনে বিয়ে করে কুষ্টিয়ায় বাসা ভাড়া করে রেখেছিলেন। বিকাশ কর্মীর সঙ্গে তার স্ত্রীর পরকীয়ার কারণেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

এ ঘটনায় সৌমেন মিত্রকে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন। সৌমেন মিত্র বর্তমানে খুলনার ফুলতলা থানায় কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি মাগুরা জেলার আড়পাড়ায়।

নিহতরা হলেন- কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের সাঁওতা কারিগরপাড়ার মিজবাহ হোসেনের ছেলে শাকিল (২৩), বাগুলাট ইউনিয়নের নাতুড়িয়া গ্রামের আমির হোসেনের মেয়ে আসমা (২৫) ও তার ছেলে রবিন (৬)। নিহত শাকিল বিকাশকর্মী ছিলেন।

স্থানীয়রা জানান, বেলা ১১টার দিকে কাস্টমস মোড়ের পিটিআই সড়কে একটি তিনতলা ভবনের সামনে নিহতরা দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় সৌমেন মিত্র প্রথমে ওই নারীর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করেন। এরপর তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শাকিল খানকে গুলি করলে শিশুটি ভয়ে দৌড় দিলে তাকে জাপটে ধরে মাথায় গুলি করেন সৌমেন মিত্র।

খবর পেয়ে পুলিশ এসে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে আটক করে। গুলিবিদ্ধ তিনজনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিলে গেলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।

পরকীয়ার কারণে এ হত্যার ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে জানা যায়। নিহত আসমা এএসআই সৌমেন মিত্রের তৃতীয় স্ত্রী। সৌমেন রায়ের প্রথম স্ত্রীর ঘরে দুই সন্তান আছে। তিনি মুসলমান আসমাকে বিয়ে করে গোপনে কুষ্টিয়ায় বাসা ভাড়া করে রাখতো বলে জানা যায়। নিহত শিশু রবিন আসমার দ্বিতীয় স্বামী রুবেলের সন্তান।

নিহত আসমার প্রথম স্বামীর পক্ষেরও একটি সন্তান রয়েছে। শাকিলের সঙ্গে পরকীয়ার কারণেই সৌমেন এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।

নিহত আসমার ভাই হাসান জানান, শাকিলের সঙ্গে আসমার মাঝে মধ্যে ফোনে কথা হতো। সৌমেন এ ব্যাপার নিয়ে তার বোনকে সন্দেহ করত। এর আগে বেশ কয়েকবার এসব বিষয় নিয়ে মারধরও করেছে।

আসমার মা হাসিনা জানান, ৩-৪ বছর আগে আমি একটা মামলায় পড়ি। ওই সময় কুমারখালী থানায় গিয়ে পরিচয় হয় সৌমেন মিত্রের সঙ্গে। পরে আমার মেয়ে আসমার সঙ্গে সম্পর্ক হয় সৌমেনের। তারা দুজন বিয়ে করে। আসমা ওর মামার বাড়ি কুমারখালীর পান্টি ইউনিয়নের নাতুড়িয়া গ্রামে ছিল। সেখান থেকে সকাল ৯টার দিকে সৌমেন তাকে খুলনা নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে যায়।

সৌমেন মিত্রকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি জানান, আটক সৌমেন মিত্র সম্প্রতি হালসা ক্যাম্প থেকে খুলনার ফুলতলায় বদলি হয়েছেন।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খায়রুল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

 

ad

পাঠকের মতামত