সম্মান বাঁচাতে মেয়েকে হত্যা করে ভৈরব নদে ফেলে দেন বাবা
নিউজ ডেস্ক।। মেয়ে ববিতা ইয়াসমিনের বেপরোয়া চলাফেরা মেনে নিতে পারেননি বাবা বজলুর রহমান। তাই সম্মান বাঁচাতে মেয়েকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ববিতা ইয়াসমিনকে গলা চিপে হত্যা করেন তিনি। পরে বস্তাবন্দি করে ভৈরব নদে ভাসিয়ে দেন পাষণ্ড বাবা। শনিবার সন্ধ্যায় মেহেরপুর সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) রাসুল সামদানি এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, মেহেরপুর ভৈরব নদ থেকে অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধারের ৫৮ দিন পর পরিচয় উদঘাটন করেছে পুলিশ। নিহত ববিতা ইয়াসমিন মেহেরপুর সদর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের বজলুর রহমানের মেয়ে। এ সময় পুলিশ ববিতার বাবা বজলুর রহমানকে আটক করে। পরে বজলুর রহমান আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মেহেরপুর সদর থানার ইন্সপেক্টর রাসুল সামদানী জানান, এ হত্যার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পাওয়ার পর এক পর্যায়ে সোর্সের মাধ্যমে ববিতার ছবি সংগ্রহ করি। ছবির কামিজের সঙ্গে মরদেহের গায়ের কামিজ মিলে যাওয়ার পর ববিতার বাবা বজলুর রহমানকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করি। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তিনি মেয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেন। তার কন্যা ববিতাকে হত্যা করে ভৈরব নদে ফেলে দেন।
এদিকে শনিবার বিকেলে বজলুর রহমানকে মেহেরপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হলে বিচারক বেগম রাফিয়া সুলতানার কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
বজলুর রহমান জানান, তিন বছর আগে সদর উপজেলার বেলতলা পাড়া গ্রামে জনৈক রাসেলের সঙ্গে ববিতার বিয়ে হয়। বিয়ের পরে তার স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।
বজলুর রহমান জানান, স্বামীর সঙ্গে মেয়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পর পরিবারের কথা অমান্য করে ইচ্ছা মতো চলাফেরা শুরু করে ববিতা। মাঝে মাঝেই ববিতা নিরুদ্দেশ হয়ে যায়।
গত ২০ মার্চ সন্ধ্যার দিকে কাথুলী গ্রামে এক আত্মীয় বাড়ি থেকে ববিতাকে নিয়ে আসেন। সন্ধ্যার পর কুলবাড়ি আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাছাকাছি পৌঁছে হঠাৎ করেই বজলুর রহমান তার মেয়ে ববিতা ইয়াসমিনকে গলা টিপে ধরেন। ওই সময়ে ববিতা মারা যায়। পরে মরদেহটি মাঠের মধ্যে কলাবাগানে নিয়ে রাখেন। পরে বাড়ি গিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা পর ভৈরব নদে মাছ ধরার নাম করে একটি বস্তা এনে মরদেহটি বস্তার মধ্যে নিয়ে ভৈরব নদে ফেলে দেয়।
গত ২৫ মার্চ রাতে ভৈরব নদ থেকে অর্ধগলিত ববিতার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই সময় মরদেহের কোনো পরিচয় না পাওয়ায় অজ্ঞাত হিসেবে মরদেহ দাফন করা হয়। ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মেহেরপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২৬ মার্চ মামলার তদন্তভার দেয়া হয় মেহেরপুর সদর থানার ইন্সপেক্টর রাসুল সামদানিকে।









