356293

মামুনুল হকের ‘স্ত্রী’রা নিখোঁজ কেনো

নিউজ ডেস্ক।। বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের। নারায়ণগঞ্জে নারীসহ অবরুদ্ধ হওয়ার পর থেকেই আলোচনার শুরু। তখন মামুনুল দাবি করেন ওই নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী।

এরই মধ্যে মামুনুলের তৃতীয় স্ত্রীর সন্ধান পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে মামুনুলের দ্বিতীয় স্ত্রীর মতো তৃতীয় স্ত্রীও নিখোঁজ রয়েছে রয়েছে বলে থানায় জিডি করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে মামুনুল হকের স্ত্রীরা নিখোঁজ কেনো।

হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীর খোঁজ পাচ্ছেন না বলে জানিয়ে রাজধানীর পল্টন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। শনিবার রাতে দ্বিতীয় স্ত্রীর আগের পক্ষের ছেলে এ জিডি করেছেন। জিডিতে তার ছেলে বলেছেন, গত ৩ এপ্রিল রাজধানীর ধানমন্ডির নর্থ সার্কুলার রোডের বাসা থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় পর থেকে তার মায়ের খোঁজ পাচ্ছেন না তিনি। তিনি নিজের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কিত।

গত ৩ এপ্রিল মামুনুলকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়্যাল রিসোর্টে এক নারীসহ অবরুদ্ধ করে স্থানীয়া। খবর পেয়ে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারাও সেখানে গিয়েছিলেন। পরে হেফাজতের কর্মীরা গিয়ে তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। মামুনুল দাবি করছেন, ওই নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মামুনুল ও ওই নারীর কথোপকথনের নানা অডিও ঘুরছে।

ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘যে নারীর ছেলে জিডি করেছেন, ওই নারীই সেদিন সোনারগাঁওয়ে মামুনুলের সঙ্গে ছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে।’

নারায়ণগঞ্জে রিসোর্টের ঘটনার পর এবার মামুনুল হকের তৃতীয় স্ত্রীর সন্ধান পাওয়া গেছে। এক বছর আগে গাজীপুরের কাপাসিয়ার বাসিন্দা এক নারীকে বিয়ে করেন বলে ওই নারীর ভাইকে জানান মামুনুল। জান্নাতুল ফেরদৌস ওরফে লিপি নামে এক নারীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে মোহাম্মদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন মো. শাহজাহান নামের এক ব্যক্তি। ওই নারীর ছোট ভাই তিনি। জিডিতে বোনকে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুনুল হকের স্ত্রী বলে উল্লেখ করেছেন।

জান্নাতুলের ভাই পরিচয় দেওয়া মো. শাহজাহান জিডিতে উল্লেখ করেছেন, মামুনুল হক তার বড় বোন জান্নাতুল ফেরদৌস ওরফে লিপিকে বিয়ে করেছেন বলে তাকে ডেকে বিয়ের চুক্তিনামা দেখিয়েছেন। তবে তার বোনের কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। বোনকে নিরাপত্তা দেওয়া এবং অভিভাবকের কাছে হস্তান্তরের জন্য জিডিতে তিনি আইনি সহায়তা চেয়েছেন।

মো. শাহজাহান বলেছেন, গত বুধবার তার বড় বোন জান্নাতুল ফেরদৌস লিপির সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয়। এই সময় বোন জানিয়েছিলেন তিনি মোহাম্মদপুরে দিলরুবা আপার বাসায় আছেন। এর মধ্যে শনিবার (১০ এপ্রিল) মামুনুল হক তাকে ঢাকার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় ডেকে নিয়ে জানান তার বোন জান্নাতুল ফেরদৌস লিপিকে তিনি বিয়ে করেছেন। মামুনুল চুক্তিনামা দেখান। তবে তিনি বোনের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ স্থাপন করাতে পারেননি। তার বোন বর্তমানে কোথায়, তা জানা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় বোনকে নিরাপত্তা দেওয়া ও অভিভাবকের কাছে হস্তান্তরের জন্য তিনি আইনি সহায়তা চান।

মামুনুলের তৃতীয় স্ত্রী নিখোঁজ কেনো এ বিষয়ে জানলে চাইলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল লতিফ জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, মামুনুল হক যে নারীকে তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে দাবি করছেন তিনি এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে মাস্টার্স করেছেন। ২০১৩ সালে যখন তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন, তখন তাদের মধ্যে পরিচয় হয়। আড়াই বছর আগে ওই নারীর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরপর ওই নারীকে একটি মহিলা মাদরাসায় শিক্ষক হিসেবে চাকরি দেন মামুনুল হক। এরপর থেকেই তাদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ইত্তেফাক।

 

ad

পাঠকের মতামত