356122

মায়ের কাছে যাওয়া বারণ, তাই…

অনলাইন ডেস্ক: লেখক অনুবাদক মাসুম আহমেদ আদি গতকাল রাত দুটায় ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেন। ছবিতে দেখা যায়, বিছানায় কেউ একজন একটা দড়ির এক প্রান্ত ধরে রেখেছেন, অপর প্রান্ত ধরা ছোট এক শিশুর হাতে। পোস্টে মাসুম আহমেদ লেখেন, ‘ছেলেটা বার বার মায়ের দরজায় নক করে।

জিজ্ঞেস করে, মা তুমি কবে সুস্থ হবে? ডাক্তারকে একটু ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করো। ডাক্তার না বলেছিল তিন দিন পরে আমি তোমার কাছে যেতে পারবো? ছেলের প্রশ্নের জবাব নেই আমাদের কাছে। আমাকে প্রতিদিন জিজ্ঞেস করে, বাবা আমি কবে মার সঙ্গে ঘুমাতে পারব? মাকে কতদিন আদর করি না।

আজ ২০ দিন হলো ছেলেটা মায়ের কাছ থেকে দূরে। আমাদের জন্য সবচেয়ে বেদনাদায়ক দৃশ্য হলো রান্নাঘরের পাশে মোড়া নিয়ে ছেলের বসে থাকা। মা দরজা খুললে একটু দেখতে পাবে, এই আশায় বসে থাকে।’

মাসুম আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানা যায়, তার স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস লুনা (৩৫) করোনায় আক্রান্ত হন গতমাসের শেষ দিকে। দু’বার হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেছেন। কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শে আরও ২১ দিন আইসোলেশনে থাকতে হচ্ছে তাকে।

এ সময়টাতে সাড়ে পাঁচ বছরের ছেলে আহনাফ আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগের সেতু হচ্ছে একখানা দড়ি। দড়ি ধরে টান দিয়ে সংকেত পাঠায় মা-কে। একইভাবে উত্তর দেয় মা-ও।

মাসুম আহমেদ জানালেন, তিনি নিজেও গত নভেম্বরে করোনায় আক্রান্ত হন। এখন সুস্থ। ‘সেসময় কিন্তু লুনা আক্রান্ত হয়নি। আমি তখন ছেলের কাছে যাইনি। আমার কাছ থেকে ছেলেকে আলাদা করতে পেরেছিলাম। কিন্তু মায়ের কাছ থেকে দূরে রাখাটা কষ্টের।’

মাসুম আরও বলেন, ‘আগে বুঝতো না, কিন্তু গত কয়েকদিন হলো সে বুঝতে পারছে মায়ের কাছে যাওয়া যাবে না। বুঝেছে বলেই মানানো যাচ্ছে।’

গত ২৩ মার্চ জান্নাতুল ফেরদৌসী লুনা করোনা আক্রান্ত হয়ে বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে অবস্থার উন্নতি হওয়ায় বাসায় চলে আসেন।

বাসায় আসার পর অবস্থার অবনতি হলে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার ভর্তি করানো হয়। সেখানে পাঁচ দিন চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফেরেন। তখনই চিকিৎসক বলে দেন অন্তত ২১ দিন আইসোলেশনে থাকতে হবে তাকে।

 

ad

পাঠকের মতামত