354824

সঙ্গিনীকে চরম সুখ দিতে চান? তাহলে ডায়েটে রাখুন এই ৮টি খাবার

ডেস্ক রিপোর্ট।। মোটা মাইনের চাকরি থাকলেও আজকের বেলা বোসদের সুখী করা কিন্তু খুব কঠিন। কারণটা সহজ, সঙ্গী, প্রেমিক কিংবা স্বামীর চাকরির উপর আজকালকার বেলা বোসরা নির্ভর করে না।

তাঁরা হয়তো আরও বেশি উপার্জন করতে সক্ষম। যদিও তাদের শরীর এবং মনের চাহিদা কিন্তু আজও একই রকম আছে। বরং বলা যায় বেড়েছে। আগে লজ্জায় মুখ বন্ধ থাকত, এখন সেসব আর নেই।

এই যেমন স্নিগ্ধা-রিকের (নাম পরিবর্তিত) কথাই ধরা। প্রায় পাঁচ বছর ওদের বিয়ে হয়েছে। অঢেল অর্থ, বিলাসবহুল জীবন কিংবা অন্যান্য সুখ থাকলেও রিকের সঙ্গে শারীরক সম্পর্কে স্নিগ্ধা ঠিক সুখ পায় না। অগত্যা সে “বাহিরমুখী”।
মধ্যবিত্ত পরিবারের অপরাজিতা আর গৌরবের অবস্থাও প্রায় একই রকম। গৌরবের সব ভালো শুধু স্ত্রী-কে সুখী করতে পারে না সে। আর নিজেদের সামাজিক গণ্ডি পেরিয়ে কোনও বড় সিদ্ধান্ত নিতে চায় না অপরাজিতা।
শুধু মেয়েরাই কেন মানিয়ে নেবে…

আগেকার দিন হলে লোকে মহিলাদের মানিযে নেওয়ার পরামর্শ দিতেন। ভাবটা এমন যেন শরীর সুখে সুখী হওয়ার অধিকার একমাত্র পুরুষদেরই আছে। যদিও সেসব গুড়ে আজকের মহিলারা বালি ঢেলে দিয়েছেন অনেক আগেই। তবে অসুস্থকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার চেয়ে তাঁর রোগের চিকিত্সা করানোটাও যে প্রয়োজন সেটা অনেকেই বোঝেন। পুরুষ সঙ্গী লোকলজ্জার ভয়ে চিকিৎসকের কাছে যেতে না চাইলে তাঁর চিকিত্সার দায়িত্ব বরং সঙ্গিনীই নিয়ে নিন। তাও একেবারে ঘরোয়া পদ্ধতি মেনে। কিছু ডায়েট মেনে চললে পুরুষের শারীরিক ক্ষমতা বাড়ে। বাড়ে শুক্রাণুর সংখ্যা এবং টেস্টোস্টেরন লেভেল। মহিলারা নিজের স্বার্থেই সঙ্গীর ডায়েটে পরিবর্তন আনুন। আর পুরুষরা সঙ্গিনীকে আচমকা উপহার দিতে চাইলে এই ডায়েট মেনে চলুন। কথা দিচ্ছি তৃপ্তির শেষ হাসি আপনার সঙ্গিনীই হাসবেন।

টেস্টোস্টেরনকে পালং চাগার: পুরুষের শরীরের প্রধান যৌন হরমোন হল টেস্টোস্টেরন। শুধু নিজের পৌরষ প্রদর্শনের জন্যই নয়, সঙ্গীনিকে শরীরী সুখ দিতেও প্রাচীনকাল থেকেই পুরুষ তাঁর এই হরমোনের যত্ন নিয়ে এসেছেন। রাজা-মহারাজই হোন কিংবা নবাব-বাদশা। বেতনভুক চিকিৎসকরা প্রভুর যৌন ক্ষমতা বজায় রাখতে সদা তৎপর ছিলেন। আধুনিক কালের কৃত্রিম স্টেরয়েড তো তখন ছিল না। তাই ভেষজ এবং আয়ুর্বেদিক প্রক্রিয়াতেই জাজা-বাদশাহদের যৌনক্ষমতা বজায় রাখার চেষ্টা চলত। সেরকমই একটি খাবার হল পালং শাক। শীতকালে বাজারে পাঁচ টাকা দামেও এক আঁটি শাক পাওয়া যায়। আর আজকের দিনে সামান্য বেশি টাকায় গরমেও মেলে এই সুস্বাদু উদ্ভিদটি।

পপয়-এর মতো রোজ পালং শাক ডায়েটে রাখুন । এটি রক্ত চলাচলের দারুণভাবে সাহায্যে করে। এর ফোলিক অ্যাসিড পুরুষের যৌন অক্ষমতাকে তুড়ি দিয়ে উড়িয়ে দেয়। পালং শাকে থাকা ম্যাগনেশিয়াম সৌন হরমোন টেস্টোস্টেরনকে বৃদ্ধি করতে দারুণ কাজ করে। পুরুষের যৌনাঙ্গের ক্ষমতাও বাড়ায় এই শাক।

এক কাপ কফিতে তোমাকে চাই: সঙ্গিনীকে যৌন তৃপ্তিতে ভরিয়ে দিতে রোজ অন্তত এক কাপ কফি খান। সকালের এক কাপ কফি বিছানায় দারুণ এনার্জি দেয়। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে দিনে দুই থেকে তিন কাপ কফি যৌনাঙ্গকে দৃঢ় করতে ওষুধের মতো কাজ করে। কফির মদ্যে থাকা ক্যাফিন সৌনাঙ্গের রক্ত চলাচল এবং মাংসপেশীকে সাবলীল করতে দারুণভাবে কাজ করে। তা বলে আবার বেশি খেলে বেশি কাজ হবে ভেবে সারাদিন ধরে কফি খাবেন না যেন। তিন কাপের বেশি কফি কিন্তু আবার হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই অতিলোভ করবেন না।

আপেলে কামড়: নিষিদ্ধ আপেলে কামড় দিয়েই নাকি বিশ্বজুড়ে পাপ ছড়িযেছিল। ওসব এখন অতীত। প্রতিদিন একটা করে আপেল যে শরীর থেকে রোগ নির্মূল করতে পারে তা এখন সবাই জানেন। কিন্তু যৌনাঙ্গের ক্ষমতা বাড়াতেও আপেল যে মহৌষধ তা জানতেন কি? আপেলের কোসায় আছে উরসোলিক অ্যাসিডের যৌগ। এটি শরীর থেকে প্রস্টেড ক্যান্সারকে দূরে সরিয়ে রাখে। আর প্রস্টেড সুস্থ থাকলে যে সঙ্গিনীকে সুখ দেওয়া খুব সহজ তা নিশ্চযই কাউকে বলে দিতে হবে না?

সুপার চার্জার অ্যাভোকাডো: যৌন উদ্দীপনাকে সুপারচার্জ করতে ডায়েটে অবশ্যই রাখুন অ্যাভোকাডো। এটি কিন্তু প্রাকৃতিক যৌন উত্তেজক। গ্লোবালাইজেশনের কল্যাণে এধরনের বিদেশি ফল বা সবজি আমাদের দেশে সহজলভ্য। তাই শরীরের উদ্দীপনা বাড়াতে অযথা ওষুধপত্র না খেয়ে নিয়মিত অ্যাভোকাডো খান। এর স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, পটাশিয়াম এবং ভিটামিন শরীরকে যৌনতার জন্য চাঙ্গা করে দেয়। যৌন উদ্দীপনার পাশাপাশি পুরুষদের ফার্টিলিটি বাড়াতেও অ্যাভোকাডো অসাধারণ। অ্যাভোকাডোতে উপস্থিত জিঙ্ক যেমন উদ্দীপনা বাড়ায় তেমনই ভিটামিন-ই শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে।

শোওয়ার ঘরে ঝাল মশলা: ঝাল খেতে পারেন? তাহলে খাবারে ব্যবহার করুন চিলি পিপার। এটি সাধারণ লঙ্কা এবং ক্যাপসিকামের মাঝামাঝি একটা সবজি বা ফল। বিদেশে এসব চেখে লোকে ঝাল ঝাল বলে চেঁচালেও আমাদের দেশের ছেলেরা এই লঙ্কা অনায়াসে চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে পারেন। বাঙালিরা চিলি পিপারকে লাল-হলুদ লঙ্কা বললেও উত্তর এবং পশ্চিম ভারতে একে বলে ভূত জোলোকিয়া। রান্নায় এক ঘেয়ে লাগলে এই লঙ্কার আচার খান নিয়মিত। দেখবেন বিছানায় যাবতীয় মশলা বা স্পাইস আপনিই নিয়ে এসেছেন। আপনার যৌন উদ্দীপনা দেখে সঙ্গিনী অবাক হয়ে যাবে।

অনেকটা ঠিক গাজরের মতো: যৌনতার সঙ্গে গাজরের নিবিড় সম্পর্কে বরাবরই। মহিলাদের আলোচনা শুনলে অনেক ক্ষেত্রেই তা স্পষ্ট হয়। আর এই গাজর যে পুরুষের যৌনতার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত তা তার ভেষজ গুণ শুনতেই বোঝা যায়। গাজরের কমলা রঙের শরীর নিঃসৃত ক্যারোটিনয়েড রাসায়নিক পুরুষের শরীরে শুক্রাণুর চলাচল এবং সংখ্যা বাড়াতে খুব ভালো কাজ করে। প্রতিদিন গাজর খান। দেখবেন বন্ধুরা আপনাকে ঈর্ষা করছেন।

ওহ্ ওটস… মোটা, রোগা, মাঝামাঝি যে কোনও ডায়েটেই ওটস্ এখন সবচেয়ে জনপ্রিয়। ওটস্-এর খাবার তৈরি করাটাও নির্ঝঞ্ঝাট। যেমন সুস্বাদু, তেমনই স্বাস্থ্যকর। স্বাদের মতো যৌনতাতেও কিন্তু ওটস্ এক নম্বর। পুরুষের যৌন উদ্দীপনা বাড়াতে ওটস্ কাজ করে পাকা চিকিত্সকের মতো। সঙ্গিনীকে চরম সুখের সন্ধান দিতে গেলে ডায়েটে রোজ রাখুন ওটস্। গবেষকরা একে বলেন প্রাকৃতিক ভায়াগ্রা। তবে একবার যদিও ওটস্-এর গুণ সঙ্গিনী পেয়ে যান, তাহলে হলফ করে বলতে পারি যে ব্রেকফাস্টের পাশাপাশি লাঞ্চ কিংবা ডিনারে প্রতিদিনই আপনাকে ওটস্-ই খেতে হবে।

টোম্যাটো খেয়ে টেক্কা : খাবারে টোম্যাটো হয়তো রোজই থাকে। তবে এর আসল গুণ জানলে টোম্যাটো খাওয়া বাড়িয়ে দেবেন। আর কিছু না হোক স্যালাড কিংবা স্যান্ডউইচে টোম্যাটোর পরিমাণ বাড়বেই বাড়ে। নট টু ফরগেট, টোম্যাটোর চাটনি। গবেষকদের মতে, প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে টোম্যাটোর জুড়ি মেলা ভার। এটি শরীরে শুক্রাণু বৃদ্ধি করে। পুরুষের ফার্টিলিটি বাড়ায়। শুক্রাণুকে সচল করতেও টোম্যাটো এক্সপার্ট। যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধিতেও দারুণ কাজ করে এটি। এক কথায় সস্তায় পুষ্টিকর যৌনজীবন পেতে রোজ টোম্যাটো খান। বিছানায় সঙ্গিনীকেও টেক্কা দিয়ে দেবেন আপনি।

শেষের কিছু কথা: অবশ্য শুধু খাবারের দিতে নজর দিলেই চলবে না। ভালো যৌন সম্পর্কের জন্য প্রয়োজন আরও কিছু জিনিস। পারস্পরিক বিশ্বাস, ভালোবাসা এবং সুস্থ থাকার কামনাও কিন্তু ভালো যৌন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ। সঙ্গীকে অবহেলা না করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুন। ঘরোয়া উপায় কাজে না দিলে চিকিত্সকের কাছে যান। দুজন দুজনকে সময় দিন। দুজনের একান্ত সময়ে অযথা পরিবার বা অন্যকোনও তৃতীয় ব্যক্তিকে গুরুত্ব দেবেন না। অফিসের কাজ এবং টেনশন অফিসেই রেখে আসুন। মোবাইল ফোন, টিভি, ল্যাপটপকে কিছুক্ষণ কাছে আসতে দেবেন না। দরকার হলে যৌন মিলনের সময় ফোন, ল্যাপটপের মতো ইন্টারনেট কানেকশনও সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিন। দেখবে আবার দুজন দুজনের প্রেমে পড়ে যাচ্ছেন নতুন করে। আর পালং শাক, টোম্যাটো, অ্যাভোকাডো, ওটস্-এর ডায়েটে অভ্যস্ত হয়ে গেলেও অসুবিধে নেই। কারণ এই সব খাবার ক্যান্সার, হার্টের রোগ, ওজন বৃদ্ধি কিংবা হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দূর করতেও দারুণভাবে কাজ দেয়।-এই সময়

 

ad

পাঠকের মতামত