353766

টাকা নিয়েও তরুণীর গোপন ভিডিও ফাঁস, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

নিউজ ডেস্ক।। বগুড়া থানা এলাকার কলোনী চক ফরিদ মহল্লার একটি বাড়ি থেকে মো. রিফাত ওরফে আকাশ নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার আকাশ অনলাইনে মেয়েদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এরপর তাদের কিছু অপ্রীতিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করতেন। পরবর্তীতে এগুলো ব্যবহার করে নানাভাবে তাদের ব্ল্যাকমেইল করতেন।

পুলিশ হেডকোয়ার্টার জানায়, গত ৯ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জ থেকে এক ব্যক্তি পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং পরিচালিত পেজে একটি বার্তা পাঠান। তিনি জানান, তার প্রতিবেশি এক মাদ্রাসা ছাত্রী অনলাইন সম্পর্কে জড়িয়ে রিফাত শেখ ওরফে আকাশ নামক এক যুবকের দ্বারা প্রতারণার শিকার হয়েছে।

মেয়েটির সাথে প্রেমের অভিনয় করে ও তাকে বিয়ের আশ্বাাস দিয়ে অনলাইনেই মেয়েটির কিছু অপ্রীতিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে আকাশ। পরবর্তীতে এ ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করে নানাভাবে মেয়েটিকে ব্ল্যাকমেইল করে হাতিয়ে নেয় টাকা-পয়সা ও গহনা।

শুরুতে মেয়েটি তার পরিবারকে কিছু জানাতে পারেনি। তবে একটা সময়ে বাধ্য হয়ে পরিবারকে জানায় সে। বিষয়টি জানার পর পরিবারের পক্ষ থেকে মেয়েটিকে তার সম্মতিক্রমে তড়িঘড়ি করে বিয়ে দেওয়া হয়।

বিয়ের পর মেয়েটির স্বামী ও তার স্বামীর আত্মীয় স্বজনের কাছে মেয়েটির নগ্ন ছবি ও ভিডিও পাঠিয়ে বিয়েটি ভেঙে দেয় আকাশ। এর কিছুদিন পর পরিবারের উদ্যোগে মেয়েটিকে পুনরায় বিয়ে দেওয়া হয়। রিফাত শেখ ওরফে আকাশ একইভাবে দ্বিতীয় বিয়েটিও ভেঙে দেয়।

সবশেষ কোনো উপায়া না দেখে প্রতিবেশি ওই ব্যক্তির সাথে পরামর্শ করে মেয়েটি ও তার পরিবার। সব শুনে ওই ব্যক্তি পুলিশের কাছে ঘটনার বিস্তারিত লিখিত আকারে জানান এবং মেয়েটির জন্য পরামর্শ ও সহযোগিতা চান। এ ক্ষেত্রে সমস্যা হলো- ওই তরুণী অভিযুক্ত আকাশের ঠিকানা জানতো না, তবে তার বাড়ি বগুড়া এতটুকু জানা ছিলো তার।

এ বিষয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের এআইজি (মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স) মো. সোহেল রানা জানান, ওই বার্তাটি পাওয়ার সাথে সাথেই মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স মেয়েটির সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য-প্রমাণ ও তথ্যাদি সংগ্রহ করে এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসিকে অবগত করে। একই সাথে ওই যুবককে সনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে বগুড়ার পুলিশ সুপার মো. আলী আশরাফ ভূঞাকে অনুরোধ করে।

তিনি আরও জানান, পুলিশ সুপার বগুড়া তাৎক্ষণিকভাবে তার ডিবি পুলিশের একটি বিশেষ টিম গঠন করেন। এই টিম তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সম্ভাব্য নানাস্থানে তল্লাশি করে। অবশেষে ১৭ ফেব্রুয়ারি ভোরে আকাশকে বগুড়া থানার কলোনী চক ফরিদ মহল্লার একটি বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, অভিযুক্ত আকাশ দীর্ঘদিন ধরে ফেসবুকে বিভিন্ন মেয়েকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে বন্ধুত্ব করতো। পরে তাদের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ধারণ ও তা ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেইল করে আসছিল।

পরবর্তীতে গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম ১৭ ফেব্রুয়ারি সকালে বাদীর উপস্থিতিতে দ্রুততম সময়ে পর্ণোগ্রাফি আইনসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আইনে মামলা দায়ের করেন। পরে জেল হাজতে প্রেরণের জন্য একটি বিশেষ টিম পাঠিয়ে আসামিকে বগুড়া থেকে গোপালগঞ্জে নিয়ে আসা হয়।

 

ad

পাঠকের মতামত