353493

সুদের টাকা না দেওয়ায় মা-মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন!

নিউজ ডেস্ক।। গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় সুদে আনা ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় এক গৃহবধূ ও তার মেয়েকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে পাওনাদার আব্দুল গফুর ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে। গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলার সিরাজপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গৃহবধূ মমতাজ বেগম (৩০) বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় আটজনের নামে মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় অপর ভুক্তভোগী হলো তার মেয়ে মাহবুবা আক্তার ঝুমা (১৬)।

মমতাজ বেগম জানান, পাঁচ বছর আগে তার স্বামী আব্দুর রশিদ মারা যান। এরপর থেকে পোশাক কারখানায় কাজ করে অনেক কষ্টে একমাত্র মেয়ে ঝুমাকে লেখাপড়া করিয়ে আসছেন। ঝুমা স্থানীয় একটি স্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী।

তিনি জানান, স্বামী মারা যাওয়ার পর মেয়েকে নিয়ে তার বোনের জমিতে বসবাস করে আসছেন। সংসারের অভাব-অনটন থেকে মুক্তি পেতে সম্প্রতি এক জ্বিনের বাদশার খপ্পরে পড়েন তিনি। সংসারের স্বাচ্ছলতা ফিরিয়ে দেবে এমন প্রতিশ্রুতিতে জ্বিনের বাদশা তার কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন।

মমতাজ বেগম জানান, জ্বিনের বাদশার ওই টাকা যোগাড় করতে তিনি স্থানীয় গফুর ড্রাইভার ও মনির হোসেনের পরিবারসহ কয়েকজনের কাছ থেকে সুদে ঋণ করেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ওই সুদের টাকা পরিশোধ করতে পারেননি তিনি। পাওনাদাররা চাপ দিলে ওই টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য ইব্রাহীম এক মাসের সময় দেন।

মমতাজ বেগম বলেন, ‘আমি ওই টাকা ফেরত দেবো। কিন্তু ইউপি সদস্যের বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হওয়ার আগেই তারা গতকাল বৃহস্পতিবার আমার বাড়ি ঘেরাও করে। তারা আমাকে ও আমার মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেঁধে পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে আমাদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে।’

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুল গফুর বলেন, ‘তাদেরকে টাকা আদায়ের জন্য চাপ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কাউকে বাঁধা বা মারধর করা হয়নি। তাদের অভিযোগ মিথ্যা।’

ফুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ইব্রাহীম সিকদার বলেন, ‘ঘটনা শুনে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখি মা-মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেঁধে তাদের মারধর করছে। পরে তাদের সেখান থেকে উদ্ধার করেছি। ঘটনাটি দুঃখজনক।’ গতকাল রাতেই মমতাজ বেগম বাদী আটজনের নাম উল্লেখ করে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন বলেও জানান তিনি।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ভুক্তভোগীদের বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তারা একটি অভিযোগ দিয়েছে সেটি গ্রহণ করা হয়েছে। ঘটনার পর অভিযুক্তরা পালিয়ে গেছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

 

ad

পাঠকের মতামত