353480

‘হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন’ মুঠোফোন রেকর্ড থেকে

নিউজ ডেস্ক।। স্কুলশিক্ষককে হত্যার অভিযোগে প্রেমিকসহ ওই শিক্ষকের স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। হারানো মুঠোফোনের রেকর্ডের সূত্র ধরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

তাদেরকে সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের বড়ইতলা গ্রামে গত বছরের ২৩ মে ঈদের আগের রাতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাসির উদ্দিন হাওলাদারকে (৪০) খুনের অভিযোগে ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নিহতের স্ত্রী ফাতেমা মিতু (২৪) এবং তার পরকীয়া প্রেমিক রাজু মিয়া (২০)।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে সদর থানায় বরগুনার পুলিশ সুপার মুহম্মদ জাহাঙ্গীর মল্লিক জানান, ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গ্রেপ্তারকৃতরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিতে রাজি হয়েছেন। আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হবে। গ্রেপ্তারকৃতরা সাংবাদিকদের সামনেও হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন।

বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘রাজুর হারিয়ে ফেলা মোবাইল ফোনটি ঢলুয়া ইউনিয়নের পোটকখালী বাজারের রাজু নামেরেই এক দোকানদার পান। ওই মোবাইল ফোনের কল রেকর্ডে হত্যার পরিকল্পনার কথা জানা যায়।’

ওসি জানান, রাজু ও মিতুর কল রেকর্ডসহ মোবাইল ফোনটি তার হাতে চলে আসলে, বুধবার রাতেই মিতু ও রাজুকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ঘটনায় নিহত নাসিরের বড় ভাই আবদুল জলিল হাওলাদার বাদী হয়ে মিতু ও রাজুকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। বাদী জানিয়েছেন, তার ছোট ভাই নাসির উদ্দিন হাওলাদারের সঙ্গে দশ বছর আগে বরগুনা পৌরসভার শহীদ স্মৃতি সড়কের দলিল লেখক মাহতাব হোসেন মৃধার মেয়ে ফাতেমা মিতুর বিয়ে হয়। এ দম্পতির ৮ বছরের একটি মেয়ে এবং ৫ বছরের একটি ছেলে রয়েছে।

তিনি জানান, দুই বছর আগে ঢলুয়া ইউনিয়নের গোলবুনিয়া গ্রামের আবদুল বারেকের কলেজ পড়ুয়া ছেলে রাজুর সঙ্গে মিতুর পরকীয়া শুরু হয়। বিষয়টি নাসির টের পেলে তাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত নেয়।

এদিকে, থানায় সাংবাদিকদের সামনে ফাতেমা মিতু তার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, তাদের পরকীয়া সম্পর্ককে দীর্ঘস্থায়ী রূপ দিতে দুজনে মিলে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। গত বছরের ২৩ মে বিকেলে রাজু ঘুমের ওষুধ কিনে তাকে দিয়ে যান। সন্ধ্যার পর নাসির কাঁঠাল খায়। ঘুমের আগে কৌশলে নাসিরকে অতিরিক্ত পরিমাণ ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়।

মিতু জানান, ওই দিন রাত ১১টার পরে রাজুকে মোবাইল ফোনে তিনি নাসিরের ঘুমিয়ে পড়ার খবর দিয়ে লেখেন, ‘তুমি চলে আসো’। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে মিতু ও রাজু মিলে নাসিরকে কম্বল চাপা দিয়ে মেরে ফেলার কথা স্বীকার করেন। তিনি জানান, তার ইচ্ছে ছিল রাজুকে বিয়ে করে নতুন সংসার শুরু করবেন।

গ্রেপ্তার রাজু সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, নাসির তাদের সম্পর্কের কথা জেনে ফেলায় পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। তাদের ধারণা ছিল, ঈদের দিন সবাই ব্যস্ত থাকবে। কেউ পরিকল্পিত হত্যার বিষয়টি বুঝতে পারবে না।

সপ্তাহ খানেক আগে তার মুঠোফোনটি হারিয়ে ফেলেন বলে তিনি জানান। আর সেই মুঠোফোনের রেকর্ড থেকেই এ হত্যাকাণ্ডের জড়িতদের শনাক্ত করা হয়েছে বলে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

 

ad

পাঠকের মতামত