352958

মান্দারিন হাঁস!

ডেস্ক রিপোর্ট : ছোট্ট হাঁসটিকে মান্দারিন ভাষার দেশ চীন ছাড়াও জাপান, কোরিয়া, ইউরোপের বেশ কিছু দেশ, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও উত্তর আফ্রিকায় দেখা যায়। এই প্রজাতির হাঁস একসময় পূর্বএশিয়ায় প্রচুর ছিল।

কিন্তু রপ্তানি এবং প্রাকৃতিক আবাসস্থল ধ্বংসের কারণে এখন সংখ্যায় অনেক কমে গেছে। দেড় থেকে আড়াই পাউন্ড ওজনের পুরুষ ও স্ত্রী হাঁসগুলো সাধারণত ছয়-সাত বছর বাঁচে।

প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ মান্দারিন হাঁসের মাথার ওপরের দিকটা বেশ লাল; চোখের ওপরে বড় সাদা অর্ধচন্দ্র, লালচে মুখ এবং গলায় লাল রঙের মোটা লোম থাকে। এছাড়া এর পিছনের দিকে দুটি কমলা রঙের ‘পাল’ (বড় পালক যা নৌকার মতো দেখতে) রয়েছে। স্ত্রী মান্দারিন হাঁস দেখতে অনেকটা কাঠের হাঁসের মতো। এর চোখের চারপাশে সাদা আংটির মতো স্ট্রাইপ থাকে। এছাড়া শরীরে সাদা রঙের স্ট্রাইপও রয়েছে। পুরুষ এবং স্ত্রী উভয়েরই ক্রেস্ট রয়েছে, তবে বেগুনি রঙের ক্রেস্টটি পুরুষের চেয়ে স্ত্রী হাঁসের বেশি উঁচু হয়ে থাকে।

আবাসস্থল হিসাবে এরা নদী এবং হ্রদের ঘন, গুল্মযুক্ত বনজ পরিবেশ পছন্দ করে। এই হাঁসের বেশিরভাগ আবাসস্থল নিচু অঞ্চলে দেখা যায়, তবে এরা ১,৫০০ মিটার উচ্চতার উপত্যকাতেও বসবাস করতে পারে। শীতকালে এরা অতিরিক্ত জলাভূমি, প্লাবিত খেত এবং নদীতে চলে আসে। এরা সাধারণত ভোর বা সন্ধ্যা বেলায় পানিতে গাছের মধ্যে এবং দিনের বেলায় মাটিতে থাকতে পছন্দ করে।

এই হাঁস অনেক সময় গাছের গর্তে প্রাকৃতিক বাসা তৈরি করে, যা মাটি থেকে ৩০ ফুট পর্যন্ত ওপরে হতে পারে। এরা এক মাস ধরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে প্রায় ১২টি সাদা রঙের ডিম পাড়ে। জমির ওপরে ছোটাছুটি বা হাঁটাচলা করে খেতে ভালোবাসে। এদের খাদ্যতালিকায় প্রধানত জলজ উদ্ভিদের কচিপাতা, বীজ, শামুক, পোকামাকড়, ছোট মাছ, ব্যাঙ, ছোট সাপ থাকে।

মান্দারিন হাঁসকে চীনে দীর্ঘকাল ধরেই বিশ্বস্ততার প্রতীক হিসাবে বিবেচনা করা হয়ে আসছে এবং প্রাচীনকালে নববধূদের জন্য জোড়াহাঁস উপহার হিসাবে দেওয়ার রীতি ছিল। কোরিয়ানদের জন্য মান্দারিন হাঁসগুলো শান্তি, বিশ্বস্ততা এবং বংশের স্থিতিশীলতার প্রতীক। একইভাবে জাপানি ভাষায় এই হাঁসগুলোকে ওশিডোরি বা প্রেমিক পাখি বা সুখী বিবাহিত দাম্পত্যজীবনের প্রতীক বলে অভিহিত করা হয়। সূত্র: ইত্তেফাক

 

ad

পাঠকের মতামত