352195

রেবেকা সুলতানা রুমা, পুষ্টিবিদ, নিউজিল্যান্ড ডেইরি প্রডাক্টস, বাংলাদেশ লিমিটেড। ক্লিনিক্যাল ডায়েটিশিয়ান, এসআইবিএল ফাউন্ডেশন হাসপাতাল, ঢাকা আয়রনের অভাব থেকে দেহে রক্তস্বল্পতার সমস্যা বাড়তে থাকে। আয়রনের সমতা বজায় রাখা খুব জরুরি। এ জন্য খাওয়া যেতে পারে পর্যাপ্ত পরিমাণ আয়রনসমৃদ্ধ খাবার। সহজলভ্য কিছু আয়রনসমৃদ্ধ খাবার রয়েছে, যা রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সাহায্য করে।

আনার
আয়রন ও ভিটামিন ‘সি’র ভালো উৎস আনার। এটি দেহে রক্তসঞ্চালনের পরিমাণ বাড়ায়। পাশাপাশি ঝিমুনি ভাব, দুর্বলতা, অবসাদ দূর করতে সাহায্য করে। নিয়মিত খেলে রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ হয়।

কচু
রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে কচু। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আয়রন। ভিটামিন ‘এ’ থাকায় রাতকানা রোগেও বেশ উপকারী। তবে কম তাপে কচু রান্না করে লেবুর সঙ্গে খেলে আয়রনের পরিমাণ ভালো পাওয়া যায়। যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে, তাদের কচু না খাওয়াই উচিত।

পালংশাক
পালংশাক রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে খুব উপকারী। এর মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ‘এ’, ‘ই’, ‘বি৯’ ও ‘সি’। এ ছাড়া রয়েছে আয়রন, আঁশ ও বিটা ক্যারোটিন। নিয়মিত পালংশাক খেলে রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ হয়। ১০০ গ্রাম পালংশাকে আয়রনের পরিমাণ ২.০-৯০ মিলিগ্রামের মতো।

লাল মাংস
গরুর মাংস, খাসির মাংস ইত্যাদি লাল মাংসে রয়েছে আয়রন, ভিটামিন ‘বি’ ইত্যাদি। লাল মাংস রক্তস্বল্পতা দূর করে এবং শরীরের সব কোষে অক্সিজেন ভালোভাবে সরবরাহ করে।

ডিম
ডিমে রয়েছে প্রোটিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। রক্তস্বল্পতা কমিয়ে শরীরে রক্তের পরিমাণ বাড়াতে ডিম খুব উপকারী। ডিমের কুসুমে রয়েছে আয়রন। এটি শরীরে লোহিত রক্তের পরিমাণ বাড়ায়। একটি ডিমে ১.০ মিলিগ্রাম আয়রন পাওয়া যায়।

চিনাবাদাম বা কাঠবাদাম
রক্তস্বল্পতা থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন কিছু চিনাবাদাম বা কাঠবাদাম খাওয়া উচিত। এসবে থাকা আয়রন রক্তস্বল্পতার সমস্যা রোধ করবে। শিশুর ডেজার্টে কাঁচা বাদাম গুঁড়া রাখতে পারেন।

সয়াবিন
সয়াবিনে রয়েছে উচ্চমাত্রায় আয়রন ও ভিটামিন। এর মধ্যে থাকা সাইটিক এসিড রক্তস্বল্পতার সঙ্গে লড়াই করে। সয়াবিনে রয়েছে কম পরিমাণ চর্বি ও প্রোটিন, যা এনিমিয়া প্রতিরোধে বেশ উপকারী।

খেজুর
খেজুরের পুষ্টিগুণ অতুলনীয়। এতে রয়েছে ভরপুর আয়রন। রক্তস্বল্পতার সমস্যা দূর করতে নিয়মিত খাদ্যতালিকায় খেজুর রাখুন। ডায়াবেটিসের রোগীরা দিনে ১-২টা শুকনো খেজুর খেতে পারেন। খেজুর দিয়ে মিল্কসেক বানিয়ে শিশুদের খাওয়ান।

বিট
প্রচুর আয়রন থাকে বিটে, যা লোহিত রক্তকণিকার জন্য অত্যন্ত জরুরি উপাদান। রক্তস্বল্পতায় যাঁরা ভুগছেন বা যাঁদের আয়রনের ঘাটতি রয়েছে তাঁরা জুস করে বিট খেতে পারেন।

আখের গুড়
এনিমিয়ায় আক্রান্তদের জন্য দারুণ উপকারী একটি খাবার আখের গুড়। এতে থাকে প্রচুর আয়রন। প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেলের উৎস হতে পারে গুড়। ১০ গ্রাম গুড় প্রায় ১৬ মিলিগ্রাম মিনারেলের জোগান দেয়। ১০০ গ্রাম গুড়ে আয়রনের পরিমাণ ১১.৪ মিলিগ্রাম। দেহের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেলের উৎস হতে পারে গুড়।

ডাল ও বিচি জাতীয় খাবার
ভিটামিন ‘বি১২’ ও ফলিক এসিডের ভালো উৎস, যা রক্তস্বল্পতা রোধে সহায়ক। এ জন্য খাওয়া যেতে পারে ডাল, মিষ্টিকুমড়ার বিচি, ছোলা, রাজমা ইত্যাদি। ১০০ গ্রাম ডাল বা ছোলায় আয়রনের পরিমাণ ৪.০-৫০ মিলিগ্রাম।

জেনে রাখুন
শাকসবজি থেকে আসা আয়রন যাতে দেহে ভালোভাবে শোষিত হতে পারে, সে জন্য এক টুকরা লেবু খাবারে যুক্ত করুন। কেননা আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে ভিটামিন ‘সি’র বেশ প্রয়োজন।

 

ad

পাঠকের মতামত