351233

সিলেটে আতঙ্ক করোনার নতুন ধরন নিয়ে

নিউজ ডেস্ক।। যুক্তরাজ্যে নতুন ধরনের করোনা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেয়ায় লন্ডনে অবস্থানরত অনেক সিলেট প্রবাসীই দেশে আসতে শুরু করেছেন।

জানা যায়, প্রতি সপ্তাহে বাংলাদেশ বিমানের দুটি ফ্লাইট লন্ডন থেকে সিলেট আসে। এছাড়া প্রতি বুধবার একটি ফ্লাইট সিলেট থেকে লন্ডন যায়। চলতি মাসে এ পর্যন্ত ছয়টি ফ্লাইটে ১ হাজার ৫৭ যাত্রী যুক্তরাজ্য থেকে সিলেট এসেছেন।

প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট অঞ্চলের লন্ডন প্রবাসীরা দেশে আসায় আতঙ্ক ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এদিকে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান চলাচল থাকায় সিলেটবাসীর দুর্ভাবনার শেষ নাই। তাই অনেকেই যুক্তরাজ্যের সাথে ফ্লাইট বন্ধ রাখার কথা বলেছেন।

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. ময়নুল হক বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে যেহেতু জানা গেছে যুক্তরাজ্যের আর বাংলাদেশের মিউটেশনের পজিশন এক। সেটাই শঙ্কার বিষয়। এজন্য এখন আমাদের জিনোম সিকোয়েন্সিয়ের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের ভাইরাসটির বৈশিষ্ট্য আরও মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, নতুন এই ভাইরাসে আক্রান্তদের শরীরে আগেরটির মতই জ্বর, শুষ্ক কাশি, খাবারের স্বাদ ও ঘ্রাণ চলে যায়।

তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য থেকে সিলেট অঞ্চলের মানুষ শীতকালে দেশে বেড়াতে আসেন বেশী। তাই সংক্রমণের আশঙ্কাও বেশী। নতুন এই ভাইরাস নিয়ে তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যে ধরা পড়া নতুন ধরণের করোনা ভাইরাস মূল ভাইরাসের চেয়ে ৭০ শতাংশ বেশি দ্রুত ছাড়ায়। তাই এই মুহূর্তে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। প্রয়োজনে যুক্তরাজ্যের ফ্লাইট বন্ধ করতে হবে।’

সিলেটস্থ সুজন সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এর আগেও বিদেশি যাত্রীদের মাধ্যমে সংক্রমণ ঘটেছে বলে বলা হয়। তাই আমাদের প্রবাসী ভাইদেরও বিষয়টি বুঝা দরকার। তিনি বলেন, বিমান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আরোপ না করলে আমরা মহামারীর কবলে পড়ে যেতে পারি।

সিলেটের সুশীল সমাজের অনেকেই বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে অনেকের মধ্যে আতংক ও দুর্ভাবনা রয়েছে। সিলেট প্রেসক্লাব সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী ইত্তেফাককে বলেন, ‘ প্রবাস থেকে আসা এসব যাত্রীরা স্বাস্থ্য বিধি মানছেন না। তাই সংক্রমণের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সরকার স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে আলোচনা করে ও বাস্তবতার নিরিখে দ্রুত কার্যকর সিদ্ধান্ত নেবেন।’

ওসমানী বিমানবন্দরের মেডিকেল টিমের সমন্বয়ক ডা সিরাজুম মুনির বলেন, যুক্তরাজ্য থেকে আসা যাত্রীরা করোনা নেগেটিভ সনদ নিয়ে আসছেন। আবার দেশে আসার পরও মেডিকেল টিম সব যাত্রীদের পরীক্ষা করে। কারো সনদ না থাকলে তাকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হবে।

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় মনে করেন,করোনার নতুন স্ট্রেইনের সংক্রমণ ঠেকাতে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিমান চলাচল আপাতত: বন্ধ রাখা উচিত। এটি ছড়িয়ে পড়লে সামাল দেয়া কঠিন হবে। সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা.আনিসুর রহমান ইত্তেফাককে জানান, এখন পর্যন্ত দেশের অন্য স্থানের তুলনায় সিলেটের অবস্থা ভালো। বিদেশে থেকে আগতদের এক সপ্তাহের জন্য হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়। কিন্তু অনেকের মধ্যেই সচেতনতার অভাব- এটাই দু:শ্চিন্তার কারণ।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীও জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের সব ফ্লাইট বিশেষ নজরদারিতে আছে। প্রয়োজনে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়া হবে। গত বৃহস্পতিবার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তা মহড়ায় অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা জানান। উৎস: ইত্তেফাক।

 

ad

পাঠকের মতামত