350029

নারীদের কুস্তি দেখতে যে দেশে ভিড় জমায় পর্যটকেরা

কুস্তি লড়াকে পুরুষদের খেলা হিসেবে দেখা হলেও বলিভিয়ায় দেখা গেছে অন্য চিত্র। কুস্তির মঞ্চে দাপুটে ভূমিকা দেশটির আয়মারা ভাষাগোষ্ঠীর নারীদের।

কয়েক দশক ধরে ফ্যাশনের জন্য বিশ্বজুড়ে নাম করেছে আয়ামারা ভাষাগোষ্ঠীর নারীরা, যারা ‘চোলিতা’ নামে পরিচিত ৷

ডয়চে ভেলে জানায়, জমকালো পোশাক রংবেরঙের টুপি ছাড়াও, গত কয়েক বছর ধরে চোলিতারা বিখ্যাত হয়ে উঠছেন তাদের বিশেষ কুস্তির কায়দার জন্য।

‘চোলা’ শব্দটি প্রাথমিকভাবে গালি হিসেবে ব্যবহৃত হলেও আয়মারা গোষ্ঠীর চোলিতারা নতুন করে এই শব্দের অর্থ দাঁড় করাচ্ছেন।

স্থানীয় ভাষায় ‘চোলা’ শব্দের অর্থ গরিব আদিবাসী, যা এতদিন ব্যবহৃত হতো বিদ্রূপাত্মক ক্ষেত্রে। ২০০৫ সালে প্রথমবার দেশের প্রেসিডেন্ট হন আদিবাসী ইভো মোরালেস। এরপর থেকেই নতুন করে সাহস পান দেশের পিছিয়ে পড়া, বৈষম্যের শিকার বহু গোষ্ঠী, যার অন্যতম এই আয়মারাভাষী চোলিতারাও।

অনেকদিন মূলত পুরুষদের জন্যই ছিল কুস্তির মঞ্চ। কিন্তু এখন এই চোলিতারা দখল নিচ্ছেন কুস্তির আখড়ার। অনেক চোলিতাই বলিভিয়ায় কুস্তি লড়ে আসছেন এক দশকেরও বেশি সময় ধরে।

করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বন্ধ করেছিল প্রকাশ্যে চোলিতাদের কুস্তি প্রদর্শন। দীর্ঘ নয় মাস পর আবার নতুন করে চালু হয়েছে কুস্তির খেলা দেখানো। কিন্তু আগের মতো পর্যটক বা স্থানীয়দের ভিড় হচ্ছে না।

কুস্তিগির পাত্রিসিয়া টোরেস রয়টার্সকে বলেন, ‘আমাকে প্রমাণ করতে হবে যে, আমি একজন ভালো কুস্তিগির। আমাকে দেখাতে হবে যে, আমি শুধু কুস্তির ময়দানেই নয়, জীবনেও বিজয়ী হয়েছি, এই মহামারির সময়েও বিজয়ী হয়েছি। এতদিনে যা হারিয়েছি, তা আমরা ফেরাবোই।’

পাত্রিসিয়া টোরেস গত দশ বছর ধরে কুস্তি লড়ছেন। দুই সন্তানের মা নিজের ব্যবসাও সামলান দক্ষ হাতে। তিনি বলেন, ‘আমি আমার সব কাজ সামলেও ব্যবসা, বাচ্চাদের পড়াশোনা ও নিজের কুস্তি সামলাতে পারি।’

বলিভিয়ার পর্যটনশিল্পের একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছেন চোলিতারা। দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটকেরা আসেন চোলিতাদের কুস্তি দেখতে। মহামারির পর বর্তমানে আস্তে আস্তে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে এই শিল্প।

ad

পাঠকের মতামত