350003

বরিশালকে বিদায় করে টিকে রইল ঢাকা

ক্রীড়া প্রতিবেদক: লক্ষ্যটা বড় ছিল না ফরচুন বরিশালের সামনে। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে করতে হতো ১৫১ রান। কিন্তু অধিনায়ক তামিম ইকবালসহ তিন ব্যাটসম্যান খেলেন একশ’র কম স্ট্রাইকরেটে। যে কারণে বিফলে গেছে আফিফ হোসেন ধ্রুবর ঝড়ো ফিফটি কিংবা শেষদিকে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও মেহেদি হাসান মিরাজদের ক্যামিও ইনিংস।

ঢাকার করা ১৫০ রানের জবাবে বরিশালের ইনিংস থেমে ১৪১ রানে, ৯ রানে জিতে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে নিজেদের জায়গা নিশ্চিত করেছে মুশফিকুর রহীমের দল। মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) সে ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ হবে প্রথম কোয়ালিফায়ারে খেলা গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম ও জেমকন খুলনার মধ্যকার পরাজিত দল। অন্যদিকে চতুর্থ হয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিলো বরিশাল।

রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা বেশ ভালোই ছিল বরিশালের। নাসুম আহমেদ, রুবেল হোসেন ও শফিকুল ইসলামদের করা তিন ওভারের ১৫ বলের মধ্যেই পাঁচটি বাউন্ডারি মেরে দিয়েছিলেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সাইফ হাসান। কিন্তু টেনে নিতে পারেননি সাইফ। চতুর্থ ওভারে টানা তৃতীয় বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে প্লেইড অন হয়ে যান ৯ বলে ১২ রান করা সাইফ।

তিন নম্বরে নেমে হতাশ করেন টুর্নামেন্টের দ্রুততম সেঞ্চুরিয়ান পারভেজ হোসেন ইমন। শুরু থেকেই ব্যাটে-বলে করতে পারেননি। পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে রবিউল ইসলাম রবির বলে ছক্কা মারতে গিয়ে সোজা বোল্ড হয়ে ধরেন সাজঘরের পথ। মাত্র ২ রান করতে খেলেন ১১টি বল। শুরু থেকেই ধীর ব্যাটিং করতে থাকেন তামিমও।

ফলে ১০ ওভার শেষে বরিশালের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে মাত্র ৫১ রান। শেষ ১০ ওভারে বাকি থাকে আরও ১০০ রান। অধিনায়ক তামিম সাজঘরে ফেরেন ১১তম ওভারের শেষ বলে। তার ব্যাট থেকে আসে মাত্র ২২ রান, দুই চারের মারে এই রান করতে ২৮টি বল খেলেন তামিম। শেষের ৯ ওভারে যখন ৯২ রান প্রয়োজন, তখন আশার প্রতীক হয়ে ১৮ বলে ২২ রানে অপরাজিত ছিলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব।

পরের ১৪ বলে ২৮ রান নেন আফিফ, মাত্র ৩২ বলে ৩ চার ও ৪ ছয়ের মারে ব্যাক টু ব্যাক ফিফটি পূরণ করেন আফিফ। কিন্তু পঞ্চাশ পেরিয়ে থেমে যান তিনি। ইনিংসের ১৭তম ওভারের শেষ বলে আউট হন আফিফ, করেন ৩৫ বলে ৫৫ রান। এর আগে ১৬তম ওভারের শেষ দুই বলে তৌহিদ হৃদয় (১৬ বলে ১২) ও সোহরাওয়ার্দি শুভকে (১ বলে ০) ফেরান আলআমিন জুনিয়র।

ম্যাচ জেতার জন্য ৩ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৪৫ রান। রুবেল হোসেনের করা ১৮তম ওভারে কোনো বাউন্ডারি না হাঁকাতে পারলেও ১০ রান নিয়ে নেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও মেহেদি হাসান। পরের ওভারে শফিকুল ইসলাম খরচ করেন ১৫ রান। তবে ফিরিয়ে দেন ৮ বলে ১৫ রান করা মাহিদুল অঙ্কনকে। এরপর আর পারেননি মেহেদি মিরাজ।

ইনিংসের শেষ বলে আউট হওয়ার আগে ১০ বলে ১৫ রান করেন মিরাজ। বরিশালের ইনিংস থামে ৯ উইকেটে ১৪১ রানে। ফলে ৯ রানের জয়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে পৌঁছে গেছে ঢাকা। সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ হবে প্রথম কোয়ালিফায়ারে পরাজিত দল।

টস জিতে ঢাকাকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলেন বরিশাল অধিনায়ক তামিম ইকবাল। অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণিত করতে সময় নেননি মেহেদি হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদরা। তাদের বোলিং তোপে পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারেই শুরুর তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ফেলে ঢাকা। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান নাইম শেখ ৫ রান করতে খেলেন ১১ বল, সাব্বির রহমান আউট হন ১৪ বলে ৮ রান করে।

তিন নম্বরে নামা আলআমিন জুনিয়র রানের খাতাই খুলতে পারেননি। মাত্র ২২ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর চতুর্থ উইকেটে জুটি বাঁধেন মুশফিকুর রহীম ও ইয়াসির আলি রাব্বি। তাদের জুটিতে আসে ৫০ রান। যেখানে মুশফিকের একার অবদানই ছিল ৩৫ রান। ইনিংসের ১৩তম ওভারে কামরুল ইসলাম রাব্বির ওভারে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে আউট হন লংঅফে ধরা পড়ে। তার ব্যাট থেকে আসে ৪ চার ও ১ ছয়ের মারে ৩০ বলে ৪৩ রান।

অধিনায়ক ফেরার পর শেষের ৪৪ বলে আরও ৭৮ রান যোগ করে ঢাকা। তিন চারের সঙ্গে এক ছয়ের মারে মাত্র ৯ বলে ২১ রান করে ঝড় তুলে দিয়ে যান আকবর আলি। একপ্রান্ত আগলে রেখে ইয়াসির রাব্বি তুলে নেন আসরে নিজের দ্বিতীয় ফিফটি। তিনি আউট হন ইনিংসের শেষ ওভারে। আউট হওয়ার আগে ৩ চার ও ২ ছয়ের মারে ৪৩ বলে করেন ৫৪ রান। তার ফিফটির সৌজন্যেই মূলত ৮ উইকেট হারিয়ে দেড়শ রানে পৌঁছায় ঢাকা।

বরিশালের পক্ষে বল হাতে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মেহেদি মিরাজ ও কামরুল রাব্বি। মিরাজ ৪ ওভারে দেন ২৩ রান, রাব্বি খরচ করেন ৪০ রান। মাত্র ১ উইকেট পেলেও দলের পক্ষে সবচেয়ে কিপটে বোলিং করেন তাসকিন। তার ৪ ওভারে মাত্র ২১ রান নিতে পেরেছে ঢাকা।

ad

পাঠকের মতামত