349888

শারীরিক সম্পর্ক শেষে প্রেমিকাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে চার মাস পর ফাতেমা আক্তার খুনের রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা ঘাতক প্রেমিক ইউনুছ আলীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সিলেটের জৈন্তাপুর ভারতীয় সীমান্তবর্তী পাহারী এলাকা থেকে প্রেমিক ইউনুছ আলীকে গ্রেফতারের পর শনিবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করেন পিবিআইয়ের নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মো. মনিরুল ইসলাম।

পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, আড়াইহাজার উপজেলার মানিকপুরে মামা ইলিয়াস মোল্লার বাড়িতে থাকতেন ফাতেমা আক্তার। তার ঠিক পাশের বাড়িতে থাকতেন আসামি ইউনুছ আলী। দীর্ঘ ৯ বছর মালয়েশিয়ায় প্রবাস জীবন কাটিয়ে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিনি দেশে আসে। এ সময় ফাতেমার নানি বিভিন্ন অজুহাতে ইউনুছকে বাড়িতে ডেকে আনতেন। একপর্যায়ে ফাতেমার সঙ্গে ইউনুছ আলীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সম্পর্ক শারীরিক সম্পর্কে রূপ নেয়।

ইউনুছ ও ফাতেমার প্রেমের সর্ম্পকটি দুই বাড়ির লোকজন জেনে যায়। এরই মধ্যে ইউনুস বাড়ি পরিবর্তন করে আড়াইহাজার বিশনন্দী ভেংলায় নতুন বাড়িতে চলে যান। এরপর থেকে বিয়ের জন্য তার বাড়ি থেকে পাত্রী খোঁজা শুরু করে দেয়। কিন্তু নিজে গর্ভবতী হওয়ার আশঙ্কা এবং ইউনুছের জন্য কনে দেখার বিষয় জানতে পেরে তাকে বিয়ের জন্য চাপ দেন ফাতেমা। কিন্তু বিয়েতে রাজি ছিলেন না ইউনুছ।

গত ১০ আগস্ট বিকেলে ইউনুছ মোবাইল ফোনে ফাতেমাকে ডেকে নেন। বিভিন্ন জায়গা ঘুরে শেষে নিজেদের নতুন বাড়ির পেছনে গাছগাছালি বেষ্টিত জায়গায় ফাতেমাকে রেখে বাড়ি যান ইউনুছ। রাত ২টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে ফাতেমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন। একপর্যায়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করেন।

পরে গাছগাছালি বেষ্টিত জায়গা থেকে ঘটনাস্থল ডালিমের নির্মাণাধীন ঘরের বালু ভর্তি ভিটিতে এনে কোদাল দিয়ে গর্ত করে তার মধ্যে ফাতেমার লাশ পুঁতে দেন। পরের দিন নির্মাণাধীন ঘরের মালিক ডালিম ও তার মা শরিফাকে জিজ্ঞাসা করেন, কবে তারা ভিটি পাকা করবেন। যদি টাকা লাগে তিনি তাদের টাকা দেবেন।

গত ১৫ আগস্ট ডালিম ঘরের কাজ করার সময় ভিটি থেকে দুর্গন্ধ পান এবং কোদাল দিয়ে বালু সরাতে ভিকটিমের অর্ধপচা লাশ দেখতে পান। এলাকার লাকজনদের খবর দিলে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ মর্গে পাঠায় এবং অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড করে তদন্ত শুরু করে।

পিবিআই উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে গত ৮ অক্টোবর সিলেটের জৈন্তাপুর থানার বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকায় এক ঘণ্টাব্যাপী অভিযান পরিচালনা করে আসামি ইউনুছ আলীকে গ্রেফতার করে। এরপর আসামিকে নিয়ে ১০ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ আড়াইহাজার থানা এলাকায় অভিযান করে যে কোদাল দিয়ে গর্ত করে ফাতেমার লাশ বালু চাপা দেয়া হয় সেই কোদাল উদ্ধার করা হয়।

অভিযানে ফাতেমার ব্যবহৃত মোবাইল, সিম, জাতীয় পরিচয়পত্র, গলার হার, কানের ফুল, হাত ব্যাগ ও ওড়না গোপালদী বাজার গাজীপুরা ব্রীজ থেকে হাড়িদোয়া নদীতে ফেলে দেন বলে জানিয়েছেন ইউনুছ। তবে উল্লেখিত স্থানে অভিযান চালিয়ে ওই মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা করা হলেও তা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।-জাগো নিউজ

ad

পাঠকের মতামত