348755

ইন্দারা খুঁড়তেই বেরিয়ে এলো মানুষের হাড়, চুল ও দাঁত

রংপুরের ঐতিহাসিক টাউন হলের পেছনে ইন্দারা খুঁড়তেই উঠে আসছে মানুষের হাড়গোড়, চুল, দাঁত। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকসেনারা টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহার করেছিল এই টাউন হলটিকে।

স্বাধীনতা যুদ্ধের ওই সময়টিতে অসংখ্য নিরীহ মানুষকে ধরে নিয়ে নির্যাতনের পর নির্মমভাবে হত্যা করে ওই ইন্দারাটিতে ফেলতো বলে এতদিন রূপকথার গল্পের মতো নানা ঘটনার গল্প প্রচলিত ছিল, তা আজ বাস্তব দেখতে পেল নতুন প্রজন্ম।

সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন রক্ষা ও সৌন্দর্যবর্ধনে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। এরই অংশ হিসেবে জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে সোমবার (৩০ নভেম্বর) থেকে এর খননকাজ শুরু হয়। সকালে শ্রমিকরা ইন্দারাটি খুঁড়তে শুরু করলে সেখান থেকে মানবদেহের এইসব হাড়, চুল ও দাঁতসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র বের হয়ে আসে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, গত ২৬ নভেম্বর এই কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। সবে মাত্র খনন শুরু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকসেনাদের হাতে নিহত শহিদদের দেহাবশেষের অংশ। তাদের ধারণা, এখান থেকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত আরও অনেক কিছুই পাওয়া যাবে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি হিসেবেই এসব সংরক্ষণ করা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক আসিব আহসান।

৭১-এর ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি, রংপুরের সভাপতি ডা. মফিজুল ইসলাম মান্টু বলেন, পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর টর্চার সেল হিসাবে এই টাউন হলের কথা এতদিন আমরা বলে এসেছি। মুক্তিকামী বাঙালি, মুক্তিযোদ্ধা ও নিরীহ মানুষদের ধরে এনে এখানে নির্যাতন ও হত্যা করা হতো। মা-বোনদের ইজ্জত লুণ্ঠনের পর তাদের হত্যা করে ফেলে দেয়া হতো এই ইন্দারাটিতে।

বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ আগামী বছরের জুনে শেষ হবে। এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪ লাখ টাকা।

ad

পাঠকের মতামত