348274

ম্যারাডোনার রেখে যাওয়া সম্পদ এত কম!

পৃথিবীর ইতিহাসে তিনি একজনই। ফুটবলার হিসেবে তিনি অতুলনীয়। আর্জেন্টাইন এই মহাতারকাকে বলা হয় ‘ফুটবল ঈশ্বর’। অনেকে ডাকেন গোল্ডেন বয়ও। তবে বুটজোড়া তুলে রাখার পরও নিয়মিতই হয়েছেন খবরের শিরোনাম। ভালো-মন্দের মিশেল তো তাতে ছিলই।

নিজের অন্ধকার জীবন নিয়ে কথা বলতে কখনোই লজ্জা পেতেন না ম্যারাডোনা। তিনি স্বাদ পেয়েছেন অঢেল সম্পদের। কিন্তু কখনোই সঞ্চয়ী কোনো মনোভাব তার ভেতরে চিরস্থায়ী হতে পারেনি। জীবন সায়াহ্নে তার হাতে খুব বেশি অর্থকড়ি ছিল না। শুধু তাই নয় অর্থনৈতিক নানাবিধ ঝামেলাতেও তিনি নিজেকে জড়িয়েছেন বারংবার। আর কেলেংকারি তো আছেই। যা কখনোই পিছু ছাড়েনি এই মানুষটির।

ফুটবলে সাফল্যের চূড়ান্ত শিখর যাকে বলে সেখানেই অবস্থান করেছেন ম্যারাডোনা। ট্রান্সফার ফি’র বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন ম্যারাডোনা। প্রথমে তিনি ছিলেন বার্সেলোনায়, পরে গিয়েছেন নাপোলিতে। অর্থের পিছনে ছোটার সময় এই কিংবদন্তির কাছে কখনোই ছিল না। অর্থই তাড়া করে তার কাছে গিয়েছে।

নাপোলির সঙ্গে যখন চুক্তি হয়েছিল তখন তিনি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার পেয়েছেন। এছাড়াও বিভিন্ন বাণিজ্যিক পণ্যের দূত হয়ে তিনি কামিয়েছেন ১ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি। এগুলো সবই অতীতের ঘটনা। ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী, তার সেই ১ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলারের বর্তমান মূল্য এখন ২ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার।

সর্বশেষ তিনি ছিলেন আর্জেন্টিনার জাতীয় দলের কোচ। পরবর্তীতে মেক্সিকোর একটি ক্লাবের কোচ হবার পর এই ফুটবল ঈশ্বরের তার বেতন হয়ে যায় মাত্র ১৫ হাজার ডলার। এই বেতনই বলে দেয় খামখেয়ালি জীবনের যত কথা। তার উচ্চতার একজন কোচের বেতন হিসেবে ১৫ হাজার ডলার সংখ্যা হিসেবে কমই বলা চলে।

সম্প্রতি এক্সপ্রেস ডটকমের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ম্যারাডোনার মৃত্যুকালে মোট সম্পদ ছিল প্রায় ১ লাখ ডলারের কাছাকাছি। বাংলাদেশি টাকায় যা মাত্র ৮৫ লাখ টাকার মত। এও কি সম্ভব!

২০০৯ সালে ইতালির আদালতে কর ফাঁকির জন্য ৩ কোটি ৭২ লাখ ইউরো দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ২০০৯ এ আদালতের নির্দেশে কানের দুল ম্যারাডোনার শখের খুলে নেয় আদালত। এসব কারণে ইতালির আদালতের নামে অভিযোগ করে গেছেন এই ভিন্নধারার ভিন্ন মেজাজের কিংবদন্তি।

তবে জগতের এইসব খুচরো সম্পদের হিসেবে তার মত বড় মাপের খেলোয়াড়কে মাপার চেষ্টা বৃথা। আর্জেন্টিনার আকাশ বাতাসে তার নাম ভাসবে, নতুন প্রজন্ম তার কথা জানবে, ম্যারাডোনা কোন এক রূপকথার চরিত্র হয়ে আমাদের মাঝে থেকে যাবেন তাকে ভোলা যাবে না, তার অস্তিত্ব অস্বীকার করা যাবে না।

ad

পাঠকের মতামত