346031

মার্কিন নির্বাচন নিয়ে সেই লিখটম্যানের ভবিষ্যৎবাণীই সত্যি হচ্ছে!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ১৯৮৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় সবগুলো নির্বাচনের ফল আগে থেকেই সফলভাবে বলে দিতে পেরেছেন অধ্যাপক লিখটম্যান। ওয়াশিংটন ডিসির আমেরিকান ইউনিভার্সিটির এই ইতিহাসের অধ্যাপকের মূল বিশেষত্ব ভবিষ্যৎ দেখতে পাওয়ায়। ১৯৮৪ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রতিটি মার্কিন নির্বাচনের ফল আগে থেকেই বলে দিয়েছেন তিনি। কোনো এদিক-ওদিক হয়নি।

শুধু ২০০০ সালে করা পূর্বাভাসটি সত্য হয়নি। যদিও সে নির্বাচনের ফলটি ব্যালট-বাক্স থেকে নয়, বরং সুপ্রিম কোর্ট থেকে এসেছিল। আল গোরকে পরাজয় মেনে নিতে হয়েছিল সেই নির্বাচনে। গত নির্বাচনে সবগুলো সংবাদমাধ্যম ও নির্বাচন বিশ্লেষকরা যেখানে হিলারি ক্লিনটনের সহজ জয় দেখতে পাচ্ছিলেন, সেখানে লিখটম্যান বলেছিলেন বিপরীত কথা। নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জিততে যাচ্ছেন-স্রোতের বিপরীতে করা এই ভবিষ্যদ্বাণীই আসলে সত্যি হয়েছিল।

এবারের নির্বাচন নিয়ে যা বলছেন লিখটম্যান : নির্বাচনের আগের এক পূর্বাভাসে অধ্যাপক লিখটম্যান বলেছেন, এবার ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউস ছাড়তে হতে পারে। লিখটম্যান সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। ভিডিওটি এরই মধ্যে টুইটারে বেশ ছড়িয়ে পড়েছে। আসন্ন নির্বাচনের পূর্বাভাস দিয়ে লিখটম্যান জানান, ”আমার চূড়ান্ত অনুমান হচ্ছে ১৯৯২ সালের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প হতে যাচ্ছেন প্রথম মার্কিন ক্ষ’মতাসীন প্রেসিডেন্ট, যিনি পুনর্নির্বাচিত হবেন না। ২০১৯ সালের শেষ পর্যন্ত তার বেশ আশা ছিল। কিন্তু মহামা’রির কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ম’ন্দা ও চলমান সামাজিক অস্থি’রতার কারণে তা উল্টে গেছে।”

কিসের ওপর ভিত্তি করে তিনি এই ভবিষ্যদ্বাণী : কথা হলো অ্যালান লিখটম্যানের পূর্বাভাস সত্য হয় কী করে? কিসের ওপর ভিত্তি করে তিনি এই ভবিষ্যদ্বাণী করেন? অন্য সব জরিপকারী প্রতিষ্ঠান ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞকে পাশ কাটিয়ে তার অনুমান এতটা মিলে যায় কী করে? সে আলোচনায় যাওয়ার আগে পূর্বাভাস সম্পর্কে লিখটম্যান নিজেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল-জাজিরাকে জানিয়েছেন সেসব কথা।

অধ্যাপক লিখটম্যান বলেন, না কোনো জরিপ, না গুরুগম্ভীর বিশ্লেষণ, বক্তব্য বা বিতর্ক নয়, এমনকি বিজ্ঞাপন বা তহবিল সংগ্রহের মতো প্রচার সম্পর্কিত কৌশলী কোনো বিষয়াদিও নয়। এগুলোর কোনো কিছুই তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। ক্ষমতাসীন সরকারের পারফরম্যান্সটাই গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে ১৩টি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ, যাকে ‘থার্টিন কিজ’ বলা হচ্ছে। এই ১৩টি বিষয় সরাসরি ক্ষমতাসীন সরকারের পারফরম্যান্সের সঙ্গে যুক্ত।

যেমন অর্থনীতি ঠিক আছে কিনা বা কোনো সামাজিক অস্থি’রতা চলছে কিনা ইত্যাদি। এ ধ’রনের ১৩টি বিষয়ের ওপর করা প্রশ্নের উত্তরই আসলে বলে দেয়, ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীই বিজয়ী হবেন, নাকি বিরোধী পক্ষের প্রার্থী বিজয়ী হবেন। এই ১৩টি বিষয়ের ওপর করা প্রশ্নের উত্তর শুধু ‘সত্য’ ও ‘মিথ্যা’-এর মাধ্যমে দিতে হয়। ছয় বা তার বেশি প্রশ্নের উত্তর যার পক্ষে যাবে নির্বাচনে তার জয়ের সম্ভাবনা তত বেশি। এ নিয়ে তাঁর একটি বইও রয়েছে, যার নাম—দ্য কিজ টু দ্য হোয়াইট হাউস। ১৯৮০ সালে অধ্যাপক লিখটম্যান প্রথম এই মডেল উপস্থাপন করেন।

ad

পাঠকের মতামত