345931

আর্মেনিয়াকে অবশ্যই আজারবাইজানের ভূমি ফেরত দিতে হবে : ইরানের সর্বোচ্চ নেতা

নগোর্নো-কারাবাখ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যকার যু’দ্ধ সমগ্র এ অঞ্চলের জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে ইরানি জনগণের পাশাপাশি গোটা মুসলিম উম্মাহর উদ্দেশে দেয়া ভাষণে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া সংঘাতের ব্যাপারে তার নীতি অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি ওই দুই দেশের মধ্যকার চলমান যু’দ্ধ’কে অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও এ অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব এ সংঘাতের অবসান ঘটা উচিত এবং আর্মেনিয়াকে অবশ্যই তাদের দখলে থাকা ভূমি আজারবাইজানকে ফেরত দিতে হবে। এটি আজারবাইজানের অধিকার। সেইসাথে এই ভূখণ্ডে যেসব আর্মেনীয় জনগোষ্ঠী বসবাস করেন তাদের অধিকারও সমুন্নত রাখতে হবে। এ ছাড়া, এই যু’দ্ধের সুযোগে কেউ যদি ইরান সীমান্তে সন্ত্রাসীদের জড়ো করার চেষ্টা করে তাহলে সেসব সন্ত্রাসীকে কঠোর হাতে দমন করা হবে।’

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, কারাবাখ নিয়ে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার এসব বক্তব্য থেকে ওই অঞ্চলে সংকটের ব্যাপারে ইরানের অবস্থানের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গেছে। পুরানো এ সংকট সমাধানে যদি এখনই পদক্ষেপ না নেয়া হয় তাহলে এ সমস্যা সমগ্র এ অঞ্চলকে গ্রাস করবে এবং সর্বত্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়বে। এ ক্ষেত্রে দু’টি বিষয়ের কথা উল্লেখ করা যায়। প্রথমত, ওই দুই দেশের যু’দ্ধ এমন এক হুমকি যা কিনা সমগ্র এ অঞ্চলের নিরাপত্তা হুমকির মুখে ঠেলে দেবে। আর দ্বিতীয়ত, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ভিত্তিতে আইন মেনে সবার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা জরুরি।

যাহোক, কারাবাখ সংকট শুরুর প্রথম থেকেই ইরান যু’দ্ধ অবসানের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে কারাবাখ সংকট সমাধানের জন্য ইরানের বিশেষ প্রতিনিধি সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি সম্প্রতি আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া সফর করেছেন এবং তিনি ইরানের শান্তি প্রস্তাব নিয়ে রাশিয়া ও তুরস্কের কর্মকর্তাদের সাথেও সাক্ষাত করেছেন।

ইরানের প্রতিনিধি আজারবাইজানের ভূমি দখলমুক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা এবং সবপক্ষের মানবাধিকার রক্ষার বিষয়টি ইরানের শান্তি পরিকল্পনার মূল ভিত্তি। এ ছাড়া ইরানের শান্তি পরিকল্পনায় এ অঞ্চলের সব দেশকে সাথে নিয়ে কারাবাখ সংকট সমাধানের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

এর আগে ১৯৮৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে কারাবাখ সংকট ভয়াবহ যু’দ্ধে রূপ নিয়েছিল। ওই লড়াই ১৯৯৪ সালের মার্চ পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র এ সংকট সমাধানের জন্য চেষ্টা করলেও ও নানা পরিকল্পনা উত্থাপন করলেও আজ পর্যন্ত তারা সফল হয়নি। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, পাশ্চাত্য সবসময়ই এ অঞ্চলের সংকটকে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা করে। এ কারণে কারাবাখ সংকট অব্যাহত থাকলে এ অঞ্চলের সব দেশই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এ কারণে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা তার ভাষণে এ সংকটের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন।

সূত্র : পার্সটুডে

ad

পাঠকের মতামত