345382

ফ্রান্সে ইসলামের অবমাননার প্র’তিবাদে ঢাকায় ব্যাপক বি’ক্ষোভ

ফ্রান্সে ইসলাম এবং মহানবী হজরত মোহাম্মদ সা:-এর কার্টুন নিয়ে প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রঁর সাম্প্রতিক কিছু বক্তব্যের প্র’তিবাদে ঢাকায় আজ জুমার নামাজের পর ব্যাপক মিছিল ও সমাবেশ করেছে অনেকগুলো ইসলামিক সংগঠন।

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে শুরু করে পল্টন ও বিজয় নগর এলাকায় এসব কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে হাজার হাজার মানুষ। মিছিল ও সমাবেশগুলোতে ঢাকা থেকে ফরাসি দূতাবাস সরিয়ে দেয়া এবং ফরাসী পণ্য বর্জনের আহ্বানের পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকার ও মুসলিম বিশ্বকে ফ্রান্সের বিরু’দ্ধে আরো সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে জুমার নামাজ শেষ হওয়ার পরপরই শুরু হয় একের পর এক মিছিল। মিছিলকারীদের কারো হাতে প্ল্যাকার্ড, কারো হাতে ব্যানার, আবার কারো মাথায় ছিলো স্লোগান সম্বলিত কাপড়।

একটির পর একটি মিছিলে লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে দৈনিক বাংলা মোড় থেকে পল্টন হয়ে বিজয় নগর পর্যন্ত বিশাল এলাকাজুড়ে। আবার কোনো কোনো সংগঠন রাস্তায় অস্থায়ী মঞ্চ বানিয়ে জমায়েত করেছে ওই সড়কের বিভিন্ন প্রান্তে। মিছিলকারীরা বলছিলেন, রাসূলের অবমাননা কোনোভাবেই মেনে নেয়া হবে না।

একজন মিছিলকারী বলেন, ‘যারা রাসূলের অপমান করেছে তাদের অবশ্যই ক্ষমা চাইতে হবে মুসলিমদের কাছে।’ আরেকজন বলেন, ‘প্রয়োজনে আমরা শহীদ হবো, শেষ রক্ত পর্যন্ত দিতে রাজি আছি, তবু রাসূলের অসম্মান মানবো না।’

ইসলামী নানা সংগঠনের ব্যানারে আয়োজিত এসব মিছিলে আনা প্ল্যাকার্ডে কেউ যেমন ইসলামের নবীর পক্ষে স্লোগান লিখেছেন আবারে অনেকেই তাদের ব্যানার প্ল্যাকার্ডে ফ্রান্সের পণ্য বয়কটের আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, তাদের দাবি আসলেই একটিই- আর তা হলো রাসূল বা ইসলাম ধর্মের যিনি অবমাননা করেছেন তাকে অবশ্যই ক্ষমা চাইতে হবে।

ফ্রান্সে ইসলাম এবং রাসূলের কার্টুন নিয়ে ফরাসী প্রেসিডেন্টের সাম্প্রতিক কিছু বক্তব্যের প্র’তিবাদে গত কয়েকদিন ধরেই ধারাবাহিক নানা কর্মসূচি পালন করছে বাংলাদেশের একদল ইসলামপন্থী সংগঠন।

এর আগে ইসলামী আন্দোলন নামে একটি সংগঠন ঢাকায় ফরাসি দূতাবাস ঘেরাওয়ে কর্মসূচি পালন করেছিলো এবং ওই কর্মসূচি থেকে ফ্রান্সের সাথে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করারও দাবি তোলা হয়েছিলো। আজও পল্টন এলাকার সমাবেশগুলোতে ফ্রান্সবিরোধী নানা বক্তব্যের সাথে সাথে মুসলিম দেশগুলোকে এক হয়ে ফ্রান্সের বি’রুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

সমাবেশে একজন বক্তা বলেন, ‘আসুন সব মুসলিম দেশ এক হয়ে ফ্রান্সের বিচার করুন। ফ্রান্সের সব পণ্য বর্জন করি। আমরা রাসূলের সম্মানের স্বার্থে জীবন উৎসর্গ করতে রাজি আছি।’

আজকের মিছিল ও সমাবেশগুলোকে কেন্দ্র করে পল্টন এলাকায় কড়া নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিয়েছিল পুলিশ। তবে শেষ পর্যন্ত আর তেমন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

তবে কয়েকটি সমাবেশ থেকে ফ্রান্সের বি’রুদ্ধে আরো সোচ্চার ভূমিকা পালনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতিও আহ্বান জানানো হয়েছে।

বিজয়নগরে একটি সমাবেশে সভাপতির বক্তৃতায় সম্মিলিত ইসলামী দলগুলোর সহ-সভাপতি আবু তাহের জিহাদি আল কাশেমী সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, তাদের দাবি না মানলে সামনে আরো আন্দোলনের কর্মসূচি দেবেন তারা।

‘ঢাকা থেকে ফ্রান্সের দূতাবাস সরিয়ে দিন। নতুবা আন্দোলন যেভাবে শুরু হয়েছে তাতে ফ্রান্সের পক্ষ নিয়ে কেউ ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।’ ওদিকে ঢাকার বাইরেও বেশ কিছু জায়গায় জুমার নামাজ শেষে একই ধরণের প্র’তিবাদ বি’ক্ষোভ মি’ছিল ও সমাবেশের খবর পাওয়া গেছে।

সূত্র : বিবিসি

ad

পাঠকের মতামত