344796

দিরিলিসের অজানা ১০ বিস্ময়কর তথ্য

জনপ্রিয় তুর্কি সিরিয়াল ‘দিরিলিস : আরতুগ্রুল’। উসমানিয়া খিলাফতের প্রতিষ্ঠাতা প্রথম উসমানের পিতা আরতুগ্রুলের কাহিনী নিয়ে নির্মিত পাঁচ সিজনেরর এই সিরিজটি ইতোমধ্যেই ইউরোপ, আমেরিকাসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। ইউটিউবে গড়েছে নতুন রেকর্ড।

বাংলায় ডাবিং করে দেশের মাছরাঙ্গা টেলিভিশনে দু’টি সিজন প্রচারিত হওয়ার পর এটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর বাকি সিজনগুলো বাংলায় সাবটাইটেল করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সহায়তায় দেখা শুরু করে দেশের তরুণরা। যা এখন ক্রেজে পরিণত হয়েছে। ঘটনাবহুল এই সিরিজটি সম্পর্কে আসুন জেনে নিই বিস্ময়কর ১০টি তথ্য:-

# দিরিলিস সিরিজটি ১৬৫ এর বেশি দেশে দিরিলিস প্রচারিত হয়েছে এবং হচ্ছে। কিছু দেশে সরকারি পৃষ্টপোষকতায় দিরিলিস সিরিজটি ডাবিং করে প্রচারিত হয়েছে সেসব দেশের জাতীয় টেলিভিশনগুলোতে।

# দিরিলিস এর প্রতিটি এপিসোড ২ ঘণ্টা দৈর্ঘ্যের। শতাধিক এপিসোডের এই সিরিজটি অনেক শক্তিশালী ও বির্তকিত। কিন্তু অবাক করা তথ্য হলো এই সিরিজে যে ঐতিহাসিক তথ্য দেখানো হয়েছে তা মাত্র সাত পাতার একটি প্রচীন উৎস থেকে পাওয়া। আর্তুগ্রুল চরিত্রে অভিনেতা এনজিন আলতান দোজায়তানের মতে তারা মাত্র সাত পেইজের সোর্স ম্যাটারিয়ালস পেয়েছিলেন ঘটনাগুলোর। সেই সোর্সগুলো এখন সংরক্ষণ রয়েছে তার্কিশ আর্কাইভে।

# দিরিলিসের যে ক্যোরিওগ্রাফার ছিলো নোম্যাক কোম্পানি। একই কোম্পানি হলিউডের এক্সপেন্ডিবলস ২, রোনিন ও কোনান দ্য বারবারিয়ানের মত চলচ্চিত্রের মত অ্যাকশন ক্যোরিওগ্রাফি করেছে। কাস্ট এন্ড ক্রকেও ট্রেনিং এর মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। সোর্ড, ফাইট, স্ট্যান্ড শেখানোর জন্য কাজাখস্তান থেকে একটি স্পেশাল টিমকে হায়ার করা হয়েছে।

# দিরিলিস সিরিজ দেখে শুধু অবাকই হতে হয়। শুধু শত শত অভিনেতা নয়, পুরো সিরিজ জুড়ে শত শত পশু -প্রাণীদের দেখা যায়। দিরিলিস সিরিজ ব্যবহৃত সকল ঘোড়া একজন ভেটেরিয়ানের তত্ত্বাবধানে ছিলো। কোনো গ্রাফিক্সের কাজ নেই সেখানে। এমনকি অন্যান্য পশু-পাখি ব্যবহার করার জন্যে একটি অস্থায়ি চিড়িয়াখানা স্থাপন করা হয় সেটের পাশে। যেনো পশু-পাখিদেরও সঠিক দেখভাল করা হয়।

# এই সিরিজ শুরু হওয়ার পর এর টিআরপি রেটিং ছিলো ৫.৫৩। কিন্তু এরপর পুরো তুরস্ক জুড়ে যেনো দিরিলিস ঝড় বয়ে যায়। ১২২তম এপিসোডে এর রেটিং পোঁছায় ১৭ তে। এমনকি আইএমডিবিতে ২৫ হাজার ভোট পেয়েছে দিরিলিস। রেটিং প্রায় ৮। নেটফ্লিক্সেও এই সিরিজকে মোটা অঙ্ক দিয়ে কিনে নিয়েছে তাদের স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের জন্যে।

# আর্তুগ্রুলকে শুধু অভিনেতা হিসেবে প্লে করেননি এনজিন আলতান। বরং আর্তুগ্রুলের আবেগ-মানসিকতা বুঝার জন্যে শ্যুটিংয়ের বাইরে অনেক সময় দিয়েছেন তিনি। যেনো নিজেকে আর্তুগ্রুল বে এর জায়গায় নিজেকে কল্পনা করে নিয়েছিলেন তিনি। আর্তুগ্রুল চরিত্রে যিনি মেন্টের হিসেবে অভিনয় করেছিলেন তার সাথেও আলাদা করে সময় কাটিয়েছিলেন শ্যুটিং এর পরেও। যেনো দু’জনের অভিনয়ের রসায়ন দারুণভাবে ফুটে উঠে পর্দায়। এমন ঐতিহাসিক চরিত্র পোর্টে করার জন্যে এমন নিষ্ঠা সত্যি মুগ্ধ করার মতো।

# প্রতিটি চরিত্রে সো থেকে বিদায় নেয়ার সময় অর্থাৎ শ্যুটিং শেষ হবার পর হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হত সেটে। কেনোনা সবাই একটি পরিবার হয়ে গিয়েছিলো। বিশেষ করে সুলাইমান শাহ চরিত্রের বিদায় সবচেয়ে পেয়েছিলেন কাস্ট এবং ক্রয়ের মেম্বররা।

# তুরস্কের ন্যাশনাল টেলিভিশনের প্রচারিত এই সিরিজটি দেশটির প্রেসিডেন্টেরও অনেক পছন্দের। তাই তো তিনি তার স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে একদিন দিরিলিস শ্যুটিংয়ের সেটে চলে যান। অভিনেতা ও টেকনিশিয়ানদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। শুধু তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নয় ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরাও দিরিলিসের সেটে আসেন। এমনকি তুর্কি যোদ্ধাদের টুপিও পরে থাকতে দেখা যায় তাকে।

# দিরিলিস এতোটাই জনপ্রিয় সিরিজ যে রেকর্ড বুকেও তার নাম উঠেছে বার বার। গিনেচ বুকেও নাম লিখিয়েছে দিরিলিস। গিনেচ ওয়াল্ড রেকর্ড ‘বেস্ট ড্রাম্যাটিক ইন দ্যা হিস্টোরি অব গ্লোবাল ড্রামা’। এছাড়াও দিরিলিসের পর্বগুলো ইউটিউবে প্রচার করা শুরু হয় তখন ইউটিউবের অনেক রেকর্ড ভেঙ্গে ফেলেছিলো এই সিরিজটি।

# প্রতিটি মুহূর্তে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ছে ইসলামফোবিয়া। তাই এতো জনপ্রিয় সিরিজ হয়েও দিরিলিসের নাম শুনবেন না অনেকের মুখে। ইসলামফোবিয়াকে মেকাবিলা করার জন্যে ইমরান খান, এরদোয়ান ও মাহাথির মোহাম্মদ একসঙ্গে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন দিরিলিসের পর থেকে। বিভিন্ন ইসলামিক হিরোকে নিয়ে সিনেমা সিরিজ নির্মাণের চেষ্টা করবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন এই রাষ্ট্র প্রধানরা।

ad

পাঠকের মতামত